তেজস্ক্রিয়তা শনাক্ত পারমাণবিক দুর্ঘটনার কথা অস্বীকার রাশিয়ার
আরটিএনএন : রাশিয়ায় ‘উচ্চমাত্রার’ তেজস্ক্রিয়তা শনাক্ত হওয়া সত্বেও নিজেদের ভূখ-ে কোনো পারমাণবিক দুর্ঘটনা ঘটেনি বলে দাবি করেছে মস্কো।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স ও বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, মঙ্গলবার উরাল পবর্তমালা এলাকায় তেজস্ক্রিয় আইসোটোপ রুথেনিয়াম-১০৬ এর দূষণের মাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে প্রায় এক হাজারগুণ বেশি পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে দেশটির আবহাওয়া বিভাগ। একটি পারমাণবিক দুর্ঘটনা ঘটেছে, এমন প্রতিবেদন প্রকাশ হওয়ার পর রাশিয়া থেকে আসা সরকারি তথ্যেও তার সমর্থন মিলেছে বলে প্রকাশিত প্রতিবেদনগুলোতে বলা হয়েছে। ৯ নভেম্বর ফ্রান্সের পারমাণবিক নিরাপত্তা সংস্থা আইআরএসএন জানিয়েছিল, তেজস্ক্রিয় দূষণের ফলে তৈরি হওয়া একটি মেঘ ইউরোপের আকাশে শনাক্ত হয়েছে এবং এতে ইঙ্গিত পাওয়া গেছে, সেপ্টেম্বরের শেষ সপ্তাহে রাশিয়া অথবা কাজাখস্তানের কোনো একটি পারমাণবিক স্থাপনার ফুটো দিয়ে তেজস্ক্রিয়তা ছড়িয়ে পড়ছে।
কিন্তু এ ধরনের কোনো দুর্ঘটনার কথা স্বীকার করেনি রাশিয়া বা কাজাখস্তান।
রাশিয়ার আবহাওয়া বিভাগ রশিড্রোমের প্রতিবেদনটিই রাশিয়া থেকে প্রকাশিত প্রথম সরকারি প্রতিবেদন যা ফ্রান্সের প্রতিবেদনটিকে সমর্থন করছে।
রশিড্রোম জানিয়েছে, উরাল পর্বতমালার দক্ষিণাংশে তাদের দুটি স্টেশন সেপ্টেম্বর ও অক্টোবরের মধ্যে ওই তেজস্ক্রিয় আইসোটোপটির ‘অত্যন্ত উচ্চমাত্রার দুষণ’ শনাক্ত করেছে।
কাজাখস্তান সীমান্তের অদূরে রাশিয়ার চেলিয়াবিংক্স অঞ্চলের মায়াক পারমাণবিক স্থাপনার নিকটবর্তী স্টেশনটি আগের মাসের তুলনায় ৯৮৬ গুণ বেশি তেজস্ক্রিয়তার মাত্রা শনাক্ত করেছে বলে রশিড্রোমের প্রতিবেদনে বলা হয়। তবে এতে দুষণের উৎস সম্পর্কে কিছু বলা হয়নি।
রাশিয়ার রাষ্ট্র পরিচালিত পারমাণবিক কোম্পানি রোসাটোমের মালিকানাধীন মায়াক পারমাণবিক জ্বালানি পুনঃপ্রক্রিয়া করার বিশাল একটি স্থাপনা। রুথেনিয়াম-১০৬ এর মাত্রাবৃদ্ধির ঘটনাটির উৎস তারা নয় বলে দাবি করেছে মায়াক; আর রোসাটোম বলেছে, তাদের কোনো স্থাপনায়ই কোনো দুর্ঘটনা ঘটেনি।
১৯৫৭ সালে এই মায়াক স্থাপনার একটি বর্জ্যগুদামে বিস্ফোরণ ঘটে বড় ধরনের একটি পারমাণবিক দুর্ঘটনা ঘটেছিল। রাশিয়ার এক ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতেই মুছে যাবে পুরো দেশ
শয়তান-২ বা আরএস-২৮ স্মার্ট ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালিয়েছে রাশিয়া। পরমাণু অস্ত্রবাহী এ ক্ষেপণাস্ত্র একসঙ্গে ১২টি পরমাণু ওয়ারহেড বহন করতে সক্ষম এবং একটিমাত্র ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে পুরো একটি দেশ ধ্বংস করে দিতে পারে।
শুক্রবার রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, মস্কো থেকে প্রায় ৮০০ কিলোমিটার দূরে মহাকাশকেন্দ্র প্লেসটেক কসমোড্রোম থেকে শয়তান-২ নামের পরমাণু ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপ করা হয়েছে। মহাশক্তিধর এই ক্ষেপণাস্ত্রকে আরএস-২৮ সারমাতও বলা হয়।
উৎক্ষেপণের পর ৫ হাজার ৭৬০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে রাশিয়ার কুরা অঞ্চলে গিয়ে পড়ে সেটি। রাশিয়া তাদের দূরপ্রাচ্যের কুরা অঞ্চলে আন্তমহাদেশীয় বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র (আইসিবিএম) ফেলে এর প্রভাব পরীক্ষা করে দেখে।
রাশিয়ার পরমাণু অস্ত্রের পরীক্ষার অংশ হিসেবে একই দিন পুরমাণু ডুবোজাহাজ থেকে আরো তিনটি আইসিবিএমের পরীক্ষা চালানো হয়েছে। ক্রেমলিন জানিয়েছে, রুশ প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন মহড়ায় অংশ নেন এবং চারটি ক্ষেপণাস্ত্রের উৎক্ষেপণ উদ্বোধন করেন তিনি।
প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, তাদের পরমাণু অস্ত্রের ব্যবস্থাপনার জন্য মহড়া চালিয়েছে তারা। এই মহড়ার সব উদ্দেশ্যই সফলভাবে সম্পূর্ণ হয়েছে। অন্যদিকে, এ মাসের গোড়ার দিকেও তারা মহড়া চালিয়েছে, যেখানে আইসিবিএম লঞ্চার রাখা হয়েছিল।
গত মাসে রাশিয়া ও বেলারুশ যৌথ সামরিক মহড়া চালিয়েছিল। তাদের এই ব্যাপকভিত্তিক যুদ্ধের মহড়া ন্যাটোর ইউরোপীয় সদস্য পোলান্ড ও কিছু বাল্টিক দেশের জন্য মাথা ব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সম্পাদনা : ইমরুল শাহেদ