আজ সুচির সঙ্গে বৈঠকে চুক্তি স্বাক্ষর হতে পারে রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশ-মিয়ানমার সমঝোতা চুক্তির সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত
উম্মুল ওয়ারা সুইটি : রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধানে বাংলাদেশ-মিয়ানমারের মধ্যে দুই দেশের পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের বৈঠক থেকে সমঝোতা চুক্তির নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে। এই সিদ্ধান্তের আলোকে সুচির সঙ্গে অনুষ্ঠিত বৈঠকে সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষর হতে পারে। গতকাল মিয়ানমারে পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের বৈঠক সম্পর্কে গণমাধ্যমকে এই তথ্য জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী এইচ এম মাহমুদ আলী। তিনি বলেন, আজকের (গতকালের) সচিব পর্যায়ের বৈঠকে সমঝোতা প্রক্রিয়া চূড়ান্ত হয়েছে। তবে আমরা আশা করছি আজকের বৈঠক থেকে সমাধানের পথ আসবে। আজ মিয়ানমারের নেপিদোতে রোহিঙ্গা ইস্যুতে সুচির সঙ্গে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। সচিব পর্যায়ের বৈঠকের ধারাবাহিকতায় আজকের বৈঠকে রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধানে জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠন, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া, আনান কমিশনের সুপারিশ বাস্তবানয়সহ বিভিন্ন ইস্যুতে আলোচনা হবে। এই বৈঠক থেকে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হতে পারে। তবে কি কি বিষয়ে সমঝোতা হবে সে বিষয়ে তিনি কোন কথা বলেননি। সূত্র মতে, রোহিঙ্গা সংকটে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠাতে সময় নির্দিষ্টকরণ চুক্তি করতে চায় বাংলাদেশ। গতকাল পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের বৈঠকে এ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। আজ সুচির সঙ্গে অনুষ্ঠিত বৈঠকে এই ব্যাপারে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে শর্তগুলো নিয়ে চূড়ান্ত আলোচনা হবে।
এ ব্যাপারে গত সোমবার পররাষ্ট্র সচিব মো. শহীদুল হক বলেছেন, আমরা আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছি। এরমধ্যে একাধিকবার দুই দেশের মধ্যে প্রস্তাব-পাল্টা প্রস্তাব চালাচালি হয়েছে। আমরা স্থায়ী সমাধানে মিয়ানমারকে প্রস্তাব দেব।
উল্লেখ্য, গতকাল রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে দু’দিনের বৈঠক শুরু হয়েছে। আজকের বৈঠকে দু’দেশের মধ্যে রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেয়া প্রক্রিয়া নিয়ে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হতে পারে। গতকাল সকালে পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের বৈঠকে নেতৃত্ব দেন পররাষ্ট্র সচিব এম শহিদুল হক। এতে যোগ দিয়েছেন ইয়াংগুনে বাংলাদেশী রাষ্ট্রদূত এম শফিউর রহমান, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও প্রধানমন্ত্রী অফিসের কর্মকর্তারা। মধ্যাহ্নভোজের পর মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সেলর অং সান সুচির অফিস সংক্রান্ত মন্ত্রী কাইওয়া তিন্ট শয়ে’র সঙ্গে দ্বিতীয় দফা বৈঠক করেন।
আজকের বৈঠকে প্রাথমিকভাবে একটি যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠন, রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানো প্রক্রিয়া মসৃণ করতে বিভিন্ন ধারা, শর্ত নিয়ে আলোচনার কথা রয়েছে। এক্ষেত্রে রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানো সম্পন্ন হওয়ার একটি সময়সীমা চাইতে পারে বাংলাদেশ। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা বলেছেন, যদি বৈঠকে সবকিছু ঠিক থাকে তাহলে আজ দু’পক্ষ একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করতে পারে।
তিনি আরও বলেন, আমরা বাংলাদেশের পক্ষ থেকে চাই একটি সময় নির্দিষ্টকরণ চুক্তি করতে। এটি নিয়ে দু’পক্ষ কথা বলছে। কয়েকটি বিষয়ে দু’পক্ষের মধ্যে মতবিরোধ আছে। সেটিকে কমিয়ে আনার জন্য চেষ্টা করা হবে। আমরা আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছি। ওই কর্মকর্তা বলেন, মিয়ানমারের ক্ষেত্রে আমাদের অভিজ্ঞতা খারাপ, কারণ ১৯৯২ সালের সমঝোতায় কোনও সময় উল্লেখ না থাকায় তারা ২০০৫ সাল পর্যন্ত মাত্র ২ লাখ ৩৬ হাজার রোহিঙ্গাকে ফেরত নিয়েছিল। সম্পাদনা : গিয়াস উদ্দিন আহমেদ