রক্তক্ষরণ-খিঁচুনিতে ৫৫% মায়ের মৃত্যু
রিকু আমির : রক্তক্ষরণ ও খিঁচুনির কারণে ৫৫ শতাংশ মায়ের মৃত্যু হচ্ছে এবং এসবের চিকিৎসায় অগ্রগতি কম। অন্যদিকে, দেশে মাতৃমৃত্যুর হার বেড়েছে। ২০১০ সালে প্রতি লাখে যেখানে ১৯৪ জন মায়ের মৃত্যু হতো, সেখানে প্রতি লাখে ১৯৬ জন মায়ের মৃত্যু হচ্ছে।
জাতীয় জনসংখ্যা গবেষণা ও প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট (নিপোর্ট), আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র বাংলাদেশ (আইসিডিডিআরবি) ও মার্কিন দাতা সংস্থা ইউএসএআইডি পরিচালিত একটি জরিপে এসব তথ্য উঠে এসেছে।
তথ্যমতে, এখনও ৫০ শতাংশের বেশি প্রসব বাড়িতে হচ্ছে। কমিউনিটি পর্যায়ে মাত্র ১৭ শতাংশ প্রসবের ক্ষেত্রে রক্তক্ষরণ প্রতিরোধে মিসোপ্রসটল ট্যাবলেট প্রদান করা হচ্ছে। মাত্র ৪০ শতাংশ স্বাস্থ্য কেন্দ্রে (কমিউনিটি ক্লিনিক ছারা) রক্তক্ষরণ বন্ধে অক্সিটোসিন ইনজেকশন সরবরাহ করা হয়। মাত্র ২৮ শতাংশ স্বাস্থ্যকেন্দ্রে খিঁচুনির চিকিৎসায় ম্যাগনেসিয়াম সালফেট ইনজেকশন সরবরাহ হয়।
বুধবার সকালে হোটেল রেডিসনে নিপোর্ট আয়োজিত ‘বাংলাদেশ মাতৃমৃত্যু ও স্বাস্থ্য সেবা জরিপ- ২০১৬’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে এসব তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ছিলেন- স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
জরিপে দেখা গেছে, দেশের অধিকাংশ স্বাস্থ্যকেন্দ্র মানসম্মত মাতৃস্বাস্থ্য সেবা প্রদানে পুরোপুরি প্রস্তুত নয়। স্বাভাবিক প্রসব সেবাদানকারী স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলোর মাত্র ৩৯ শতাংশ কেন্দ্রে ২৪ ঘণ্টা সেবা প্রদানের জন্য নিজস্ব সেবাদানকারী আছে। ৩ শতাংশ স্বাস্থ্যকেন্দ্রে মানসম্মত স্বাভাবিক প্রসব সেবা প্রদানের প্রস্তুতি আছে। মাত্র ৪৬ শতাংশ উপজেলা বা উচ্চতর পর্যায়ের সরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে এবং মাত্র ২০ শতাংশ বেসরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে জরুরি প্রসূতি সেবার উপর প্রশিক্ষিত কমপক্ষে ১ জন সেবাদানকারী আছেন।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি জাহিদ মালেক বলেন, মাতৃ-শিশু মৃত্যু হ্রাসে সরকার বেশ জোরালো কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এসবের কারনে আজ দেশে মাতৃ মৃত্যুর হার অনেক কমেছে। তবে দেশের স্বাস্থ্যকর্মী, গর্ভবতী মায়ের পরিবার-পরিজনদের আরও সতর্ক হতে হবে। অনেক সময় অসচেতনতা-সতর্কতার অভাবে হাতের কাছে সেবা থেকেও মায়ের মৃত্যু ঘটে।
নিপোর্টের মহাপরিচালক রওনক জাহানের সভাপতিত্বে জরিপ ফলাফল প্রকাশ অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মেডিকেল শিক্ষা এবং পরিবার পরিকল্পনা বিষয়ক সচিব ফয়েজ আহমেদ, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ, নিপোর্টের পরিচালক (গবেষণা) রফিকুল ইসলাম সরকারসহ অনেকেই বক্তৃতা প্রদান করেন। সম্পাদনা :শোভন দত্ত