জীবন বাজি রেখে গণতন্ত্র ও উন্নয়নের জন্য কাজ করবো : প্রধানমন্ত্রী আমি সততার সঙ্গে কাজ করি, দুর্নীতির চ্যালেঞ্জ কাটিয়ে উঠেছি
উম্মুল ওয়ারা সুইটি : বিশ্বের তৃতীয় সৎ নেতা নির্বাচিত হওয়ার প্রতিক্রিয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, মৃত্যুকে হাতের মুঠোয় নিয়ে জীবনকে বাজি রেখে বাংলার মানুষের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছি। টাকা পয়সা আছে কি-না তা কখনও চিন্তা করি না। এছাড়া অনেক সময় দিনে সাড়ে তিন ঘণ্টার বেশি ঘুমাতেও পারি না।
গতকাল বুধবার জাতীয় সংসদে প্রধানমন্ত্রীর জন্য নির্ধারিত প্রশ্নোত্তর পর্বে জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য ফখরুল ইমামের সম্পূরক প্রশ্নে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, কী পেলাম, কী পেলাম না, সে হিসাব মিলাতে আসিনি। সে হিসাবটাও আমার নেই। আমার একটাই হিসাব দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনে কতটুকু কাজ করতে পারলাম। তিনি বলেন, আমি বিনয়ের সঙ্গে বলতে চাই যাদের সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে তাদের দেশে জনসংখ্যা কত? আর আমার দেশের জনসংখ্যা কত? এটা যদি তারা একটু তুলনা করতেন তাহলে হয়তো অন্য হিসাব আসত।
শেখ হাসিনা বলেন, ৫৪ হাজার বর্গ মাইলের মধ্যে ১৬ কোটির বেশি মানুষ বসবাস করে। আমাদের দেশের পরিবেশই তো আলাদা। এক নম্বর, দুই নম্বরর বা চার নম্বরে যারা আছেন তাদের বাবা-মা, ভাই-বোন হারাতে হয়নি বা নির্যাতিতও হতে হয়নি। জেলে যেতে হয়নি। মিথ্যা মামলার মুখোমুখি হতে হয়নি। এমনকি বারবার মৃত্যুর মুখেও দাঁড়াতে হয়নি। তাদের একজনকেও গ্রেনেড হামলার শিকার হতে হয়নি। আমার জীবনের ওপর বারবার হামলা এসেছে। তাদের ওপর যদি একবারও এমন হতো তাহলে অনেকেই ঘরে বসে থাকত। তিনি বলেন, আল্লাহ জীবন দিয়েছেন, জীবন তো চলেই যাবে। দেশে যে প্রতিকূলতা সেই প্রতিকূলতার মধ্যে তাদের যেতে হয়নি। দেশে গণতন্ত্র ছিল না, তা ফিরিয়ে এনে দেশ পরিচালনা করতে হচ্ছে।
তিনি বলেন, ‘১২-১৪ ঘণ্টার হিসাব নেই। অনেক সময় অনেক দিনে সাড়ে তিন ঘণ্টার বেশি ঘুমাতেও পারি না। যখনই কাজ আসে তখনই কাজ শুরু করতে হয়। এ কাজগুলো করি মনের টানে। কারণ আমার বাবা দেশটাকে স্বাধীন করে দিয়ে গেছেন। তার স্বপ্ন ছিল দেশকে ক্ষুধামুক্ত দারিদ্র্যমুক্ত দেশ গড়বেন। আমার একটাই চ্যালেঞ্জ যে কাজটা আমার বাবা করে যেতে পারেননি সে কাজটা আমি সম্পন্ন করব।
তিনি বলেন, আমি নিজে সততার সঙ্গে দেশ চালাতে চেষ্টা করছি। একটি কথা মনে রাখবেন মাথায় পচন ধরলে সারা শরীরেই তা ছড়িয়ে যায়। যেহেতু মাথায় পচন নেই, শরীরে কোথাও একটু আধটু ঘা থাকলে সেগুলোও শেষ করতে পারব।
তিনি বলেন, ওই রকম যদি দুর্নীতি হতো তাহলে দেশে জিডিপি ৭ দশমিক ২৮ ভাগ হতো না। বড় বড় দুর্নীতি যদি হতো মাথাপিছু আয় এক হাজার ৬১০ ডলারে উন্নীত হতো না। এত বড় বড় প্রকল্প অল্প সময়ে বাস্তবায়ন সম্ভব হতো না। এ দুর্নীতিকে চ্যালেঞ্জ দিয়ে কিন্তু আমরা পদ্মা সেতু তৈরি করছি। সততাকে আমরা চ্যালেঞ্জ করেছি।
তিনি বলেন, ধন-সম্পদ চিরদিন থাকে না। মানুষ মরণশীল। সব রেখে চলে যেতে হবে। তবুও মানুষ অবুঝ, ধন-সম্পদের লোভে অস্থির হয়ে পড়ে। এটা মানুষের একটা প্রবৃত্তি। এ প্রবৃত্তিটাকে যে নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারে সেই পারে দেশকে দিতে। জনগণকে দিতে। আমরা এখানে দিতে এসেছি।