কোরআন বুঝতে হলে সিরাতও জানতে হবে : মুফতি মাকসূদুল হক
24তিনি গুরুগম্ভীর আলোচনা করেন সিরাত বিষয়ে। এছাড়াও অন্যান্য বিষয়ে বয়ান করে কুড়িয়েছেন অসামান্য যশখ্যাতি। দেশের খ্যাতিসম্পন্ন ওয়ায়েজদের শীর্ষে করেছেন নিজের অবস্থান। রোজ দিশা দেন পথহারা মুসলিমউম্মাহকে পথনির্দেশক বনে। বিদ্যাবুদ্ধিতে যেমন পোক্ত, তেমনি অধ্যাপনায় কুড়িয়েছেন বেশ নাম। সভা-সেমিনারে বক্তৃতামালা এবং আলোচনায়ও উঠে আসে তাঁর বিশেষ দক্ষতা। বর্তমানে কর্মরত রয়েছেন দক্ষিণবঙ্গের ঐতিহ্যবাহী ধর্মীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জামিয়া ইসলামিয়া দারুল উলুম খাদেমুল ইসলাম (গওহরডাঙ্গা মাদরাসা)-এর মুহাদ্দিস হিসেবে। পাশাপাশি দায়িত্ব পালন করছেন মানবসেবামূলক অরাজনৈতিক সংস্থা খাদেমুল ইসলাম বাংলাদেশের সেক্রেটারি জেনারেলের। এতোসব মহৎ কাজে রত মানুষটি হলেন হজরত মাওলানা মুফতি মাকসূদুল হক। হিজরিবর্ষের মহান মাস রবিউল আউয়ালে মহানবী (সা.)-এর সিরাত বিষয়ে তাঁর সঙ্গে সংক্ষিপ্ত কথা বলেছেন মুনশি মুহাম্মদ উবাইদুল্লাহ।
দৈনন্দিন জীবনে সিরাত চর্চার গুরুত্ব কতোটুকু?
সিরাত হলো রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর জীবনী। কোরআনুল কারিম বুঝতে হলে অবশ্যই সিরাত জানতে হবে। কোরআনও সিরাত ছাড়া অন্যটি বোঝার সাধ্য নেই। সিরাত ছাড়া কোরআনকে মাঝিবিহীন নৌকোর মতো মনে হবে। একজন মুসলমানের অনুস্বরণীয় হলেন রাসুলুল্লাহ (সা.)। তার জীবনী না জানলে কী অনুস্বরণ করবে? তাই সিরাত চর্চার গুরুত্ব অপরিসীম।
ইসলামি সমাজ বিনির্মাণে রাসুল (সা.)-এর আদর্শ অনুস্বরণের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে আপনার ভাবনা কী?
ইসলামি সমাজের ভিত্তিই হলো কোরআন ও সুন্নাহ। ইসলামি সমাজ নির্মিত হবে রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর আদর্শের ভিত্তিতে। রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর আদর্শ অনুস্বরণ ছাড়া ইসলামি সমাজ কল্পনাই করা যায় না।
নৈতিক মূল্যবোধে সিরাতের ভূমিকা কী?
নৈতিক মূল্যবোধের সর্বোচ্চ স্থানে রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর সিরাত। কেননা তার জীবনের সব দিকই মানবের জন্য অনুস্বরণীয়। পৃথিবীর অন্যান্য মনীষীগণ একেকটি দিকের জন্য মডেল। কিন্তু একমাত্র মুহাম্মদুর রাসুলুল্লাহই (সা.) এমন মহামানব, যার জীবনের প্রত্যেকটি দিকই মানবতার জন্য আদর্শ। রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর জীবনে কোনো খারাপ দিক নেই। আল্লাহতায়ালা পবিত্র কোরআনুল কারিমের সুরা কলামের পঞ্চম আয়াতে এরশাদ করেনÑ‘নিশ্চয়ই আপনি মহান চরিত্রের অধিকারী।’ তাই নৈতিক মূল্যবোধে সীরাতই সর্বোচ্চ ভূমিকা পালন করতে পারে। সিরাত অধ্যয়নের ক্ষেত্রে সিরাতের কালজয়ী গ্রন্থাবলিÑযেমন সিরাতে ইবনে হিশাম, ইত্যাদির বিকল্প আছে কী?
সিরাত অধ্যয়নের ক্ষেত্রে সিরাতে ইবনে হিশাম এক অপ্রতিদ্বন্দ্বি গ্রন্থ। কারণ এতে সূত্রসহ সিরাতের প্রত্যেকটি দিক আলোচিত হয়েছে। তাছাড়া ‘আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া’ ইত্যাদির বিকল্প নেই। তবে সেগুলোর আদলে অধুনা কালেও অনেক সিরাতগ্রন্থ রচিত হয়েছে। যেমনÑআর রাহিকুল মাখতুম, নবিয়ে রহমত ও সিরাতুল মুস্তফা।
সিরাত বিষয়ক আলোচনায় আপনার অনুভূতি কী?
যে মহামানবের প্রশংসা স্বয়ং আল্লাহতায়ালা করেছেন, তাঁর সিরাত বিষয়ে কথা বলা তো এক পরম সৌভাগ্যের কথা। আমার নাজাতের ওসিলা মনে করি এতে। সিরাত বিষয়ে কথা বলতে বলতে যেদিন আমার আলোচনায় সর্বসাধারণ সত্যিকারার্থেই নববী আদর্শে উজ্জীবিত হবে, সেদিনটিই হবে আমার পরম আনন্দের, সর্বসুখের।