নওয়াজই বহাল থাকছেন পিএমএল-এন প্রধান
ইমরুল শাহেদ : পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরীফের দলের সংসদ সদস্যরা বরাবরই পিএমএল-এন এর প্রতি অনুগত। কিন্তু নওয়াজ শরীফের নেতৃত্ব নিয়ে এমএনএদের মধ্যে ছোটখাটো একটা গণভোট হয়ে গেল। গণভোটের কারণ হলো, নওয়াজ শরীফ দলীয় প্রধান থাকতে পারবেন না মর্মে জাতীয় সংসদে আনা বিরোধীদের একটি বিল পিএমএল-এনের এমএনএরা তুড়ি মেরে উড়িয়ে দিতে পেরেছে। যদি তারা এক্ষেত্রে বিন্দুমাত্রও ভুল করত তাহলে নওয়াজ শরীফ আর দলীয় প্রধান থাকতে পারতেন না। তাদের সামান্যতম দুর্বলতা পেলেও বিরোধীরা আরেকবার হয়তো চেষ্টা করে দেখতে পারত, নওয়াজকে কিভাবে হটানো যায়। একই সঙ্গে বিরোধীরা চাইলে যখন নওয়াজ ও তার পরিবারের লোকেরা দুর্নীতি মামলা মোকাবিলা করছে তখন নওয়াজের নেতৃত্ব তাদের ঐক্যবদ্ধ হওয়াকে ছত্রভঙ্গ করে দিতে পারতেন। এখন নওয়াজ শরীফের রাজনৈতিক ভাগ্য অনেকটা উন্মুক্ত হয়ে গেল।
নওয়াজ কি আবার রাজনৈতিকভাবে পুনর্বাসিত হতে পারবেন? যদিও নওয়াজ শরীফের সরকারে ফিরে আসার সম্ভাবনা খুবই সামান্য, তারপরও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রীকে ফিরে আসতে হলে বৈধ বাস্তবতার চাইতে রাজনৈতিক ভাগ্যের উপরই নির্ভর করতে হবে সবচেয়ে বেশি। অতীতের দিকে তাকালে দেখা যায়, রাজনীতি ক্ষেত্রে যাদের একবার ক্যারিয়ার বিপর্যয় ঘটে যায় তাদের আবার ফিরে আসতে যথেষ্ট বেগ পেতে হয়। এখানে পিপিপি প্রধান আসিফ আলী জারদারির কথা উল্লেখ করা যায়। তিনি ঘুরেফিরে সেই রাজনৈতিক ভাগ্যের উপরই নির্ভরশীল হয়ে পড়েছেন।
রাজনীতির ক্ষেত্রে নওয়াজ শরীফকে সুবিধাভোগীই বলা যায়। অগণতান্ত্রিক শক্তি পদ্ধতিগত নীতি-নৈতিকতা দেখিয়ে তাকে দূরে সরিয়ে রাখতে চেয়েছিল। তিনি সামরিক স্বৈরশাসক পারভেজ মোশাররফের সময় দীর্ঘদিনের নির্বাসন থেকে ফিরে দেখেন তার দল প্রথম নির্বাচনে পাঞ্জাবে এবং পরের নির্বাচনে কেন্দ্র জয় করে ফেলেছে।
তৃতীয় পর্যায়ের নির্বাচনেও তিনি দেখলেন যে তার প্রতি ব্যাপক জনসমর্থন রয়েছে, যা তাকে ক্ষমতায় নিয়ে যেতে পারে। কিন্তু পানামা পেপার্স কেলেঙ্কারিকে কেন্দ্র করে সুপ্রিম কোর্ট তাকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে অযোগ্য ঘোষণা করলে তিনি ক্ষমতাচ্যুত হয়েছেন। কিন্তু সে কি আজীবনের জন্য, নাকি সীমিত সময়ের জন্য- সেটাই এখন দেখার বিষয়। সূত্র : ডন