চা বিক্রেতা থেকে প্রধানমন্ত্রী মোদির এগিয়ে চলার উদাহরণ॥
লিহান লিমা: ভারতের হায়দ্রাবাদে অনুষ্ঠিত বৈশ্বিক উদ্যোক্তা সম্মেলনে সম্মেলনের ফাঁকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজের সঙ্গে দেখা করেন ফার্স্ট ডটার ইভানকা ট্রাম্প। এরপর উদ্বোধনী বক্তৃতায় নারী ক্ষমতায়ন, উন্নয়ন, ভারত-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক ও প্রধানমন্ত্রী মোদির ভূয়সী প্রশংসা করেন।
জিই সম্মেলনের উদ্বোধনী বক্তৃতায় ইভানকা মোদিকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, ‘ভারতকে বিশ্বে গণতন্ত্র এবং প্রত্যাশার দেশ হিসেবে তুলে ধরেছেন। আপনি পরিবর্তনের পথে এগিয়ে যাওয়ার অন্যতম উদাহরণ। ছোট বেলায় চা বিক্রেতা ছিলেন আর এখন ভারতের প্রধানমন্ত্রী।’
ইভানকা বলেন, আমার বাবার নির্বাচনের পর আমি নিজের ব্যবসা থেকে বের হয়ে আমার দেশের জন্য কাজ করার বিশাল সুযোগ নিজের চোখের সামনে দেখতে পাই। নারীর কাজ বিভিন্ন ক্ষেত্রে শক্তিশালী প্রভাব ফেলে। নারী ক্ষমতায়ন ছাড়া মানবিক উন্নয়ন অসম্পূর্ণ থেকে যায় প্রধানমন্ত্রী মোদির এই বিশ্বাসের জন্য আমি তাকে অভিনন্দন জানাচ্ছি। ভারত যদি অর্ধেক লিঙ্গ বৈষম্য কমাতে পারে তবে গত তিন বছরে ১৫০ বিলিয়ন অর্থনৈতিক উন্নয়ন হবে ।
ভারত-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক নিয়ে ইভানকা বলেন, ভারত হোয়াইট হাউসের প্রকৃত বন্ধু। এই সম্মেলন ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে অর্থনৈতিক ও নিরাপত্তা সহযোগিতা বৃদ্ধির একটি অন্যতম উদাহরণ।
নারী উন্নয়ন ইস্যুতে ইভানকা বলেন, ‘বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের ১১ মিলিয়ন নারীর নিজ ব্যবসা আছে। তাদের কর্মীর সংখ্যা ৯ মিলিয়ন। রাজস্বখাতে তাদের অবদান ১ ট্রিলিয়ন ডলার। বিশ্বের অনেক দেশে এখনও নারী একা রাস্তায় হাঁটতে পারে না। নারী উদ্যেক্তাদের অনেক বাঁধা অতিক্রম করতে হয়। আমরা নারী ও পুরুষ উভয়কে সহযোগিতার বিষয়ে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমরা এমন একটি ভবিষ্যত দেখতে চাই যেখানে, প্রতিটি দেশে সবাই একসঙ্গে কাজ করবে। প্রথমে নারী উন্নয়ন প্রয়োজন। তাহলে সার্বিক উন্নয়ন স্বাভাবিক নিয়ম মেনেই হবে।’
নিজের ভাষণে মোদি বলেন,‘ দক্ষিণ এশিয়ায় ভারতই প্রথম দেশ যেখানে এই সামিট আয়োজিত হচ্ছে। এ বছরের সামিটের বিষয় হল ‘উওমেন ফার্স্ট, প্রসপারিটি ফর অল’। ভারতীয় পুরাণে নারীর আরেক রুপ শক্তি, ক্ষমতার দেবী। আমরা উন্নয়নের জন্য নারী ক্ষমতায়নে বিশ্বাসী। এই সম্মেলনে ৫০ ভাগ প্রতিনিধিই নারী।’ এদিকে, নিজের বক্তৃতায় সুষমা স্বরাজ ইভানকাকে নারী ক্ষমতায়ন ও উন্নয়নের একজন উৎসর্গকৃত কর্মী বলে উল্লেখ করেন।
প্রায় ৪৪ হাজার শিল্পপতি এই সামিটে অংশ নিয়েছেন। আছেন ১২শ তরুণ উদ্যোক্তা। ইভানকার সঙ্গে রয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের ৩৫০ তরুণ উদ্যোক্তা। রিলায়েন্স গোষ্ঠীর কর্ণধার মুকেশ আম্বানি থেকে ভারতের একাধিক নামী শিল্পপতি এই সম্মেলনে যোগ দিচ্ছেন। আম্বানিসহ একাধিক শিল্পপতির সঙ্গেও দেখা করার কথা রয়েছে ট্রাম্প কন্যার।
এই সম্মেলনে হায়দ্রাবাদের প্রথা অনুযায়ী বিদেশী অতিথি ইভানকার হাতে তুলে দেয়া হবে রুপার চারমিনার। এর আগে প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিন্টন, জর্জ বুশের হাতেও এই চারমিনার তুলে দেয়া হয়েছিল। এছাড়া গোলকুন্ডা দুর্গে বুধবার আয়োজিত ডিনার পার্টিতে তেলেঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী কে চন্দ্রশেখর রাও ট্রাম্প কন্যাকে ‘মুক্তোর নেকলেসের সেট, একটি হিরের গহনা, একটি তাঁতের শাড়ি’ সম্বলিত গিফট বক্স উপহার দিবেন। ইভানকার পুরানো হায়দরাবাদ ও চারমিনার ভ্রমণে য্ওায়ার কথা আছে। হায়দরাবাদের চুড়ি বাজার ও ভ্রমণ করতে পারেন তিনি। ইতোমধ্যে ইভানকার জন্য এক চুড়ি ব্যবসায়ীর ইভানকার নাম খোদাইকৃত চুড়ি বানিয়ে ফেলার খবর শিরোনাম হয়েছে। ইভানকার চুড়ি বাজার পরিদর্শনের সময় তাকে ওই চুড়ি উপহার দেয়ার আশা করছেন তিনি। সূত্র: এনডিটিভি, টাইমস অব ইন্ডিয়া।