বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সংগঠনকে শক্তিশালী করতে চাই
তরিকুল ইসলাম : জননেত্রী শেখ হাসিনা তার একটি প্রবন্ধে ছাত্র রাজনীতির মূল লক্ষ সম্পর্কে লিখেছেন- ‘ছাত্র রাজনীতির মূল লক্ষ্য হচ্ছে সমাজ, দেশ ও রাষ্ট্রের ভবিষ্যৎ নেতৃত্বদানে নিজেকে গড়ে তোলা।’ (শেখ হাসিনা রচনাসমগ্র ১, পৃ ১৭৯)। এজন্য তিনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে শিক্ষার উপযুক্ত শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখার প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছিলেন ১৯৯৪ সালের প্রথম থেকেই। নেত্রীর এই প্রত্যাশা অনুসারে ছাত্রলীগের জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি হিসেবে আমি চাই বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও তার স্বপ্ন বাস্তবায়নে নিজেকে উৎসর্গ করে দিতে। যে আদর্শ ও স্বপ্ন নিয়ে ১৯৪৮ সালের ৪ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু ছাত্রলীগ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন, সেই বঙ্গবন্ধুর সেই আদর্শের সংগঠনকে সুশৃঙ্খল ও শক্তিশালী করতে যে কোনো ত্যাগ স্বীকারে প্রস্তুত আছি। একজন ছাত্রনেতা হিসেবে নয়, একজন ছাত্র হিসেবে আমি চাই ক্যাম্পাসে সব সময় শিক্ষার ভাল পরিবেশ বজায় থাকুক। আর একজন সাধারণ ছাত্রের চাহিদা হিসেবে আমি সব সময় শিক্ষার উত্তম পরিবেশ বজায় রাখতে সব ধরনের কাজ করে যাব। শেখ হাসিনা ‘স্কুল জীবনের কিছু স্মৃতিকথা’ (সাদা কালো) প্রবন্ধে লিখেছেন, ‘আমাদের দেশে ছাত্র রাজনীতির ঐতিহ্য ছিল অন্যায়-অবিচারের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবার আন্দোলন করার জন্য। ছাত্র রাজনীতির এই ঐতিহ্য নষ্ট করার জন্য এবং আইয়ুব খানের আমলেই ছাত্র রাজনীতিতে অস্ত্রধারীদের মহড়া শুরু হয়। মেধাবী গরিব ছাত্রদের অর্থ দিয়ে ছাত্র রাজনীতি ধ্বংসের এই চক্রান্ত আজও বিদ্যমান।’ ক্যাম্পাসে অস্ত্রধারীদের মহড়া করিয়ে ছাত্র রাজনীতি ধ্বংসের ষড়যন্ত্র করা হলে আমরা তা প্রতিরোধ করে শিক্ষার পরিবেশ রক্ষা করব। সব সময় ছাত্র রাজনীতির মধ্য দিয়ে ভবিষ্যৎ রাজনীতিবিদ তৈরি হয়। ছাত্ররাজনীতি হলো রাজনীতির প্রাইমারি লেভেল। আমি মনে করি, যে নেতা অতীতে ছাত্ররাজনীতি করেননি তার রাজনীতি পরিপক্ক নয়। ছাত্র রাজনীতির মধ্য দিয়ে রাজনীতির প্রকৃত শিক্ষা-অর্জিত হয়। অবশ্যই সারাদেশে ছাত্রলীগের কর্মকা- প্রশংসা পাওয়ার দাবি রাখে। ছাত্রলীগের প্রতিটি নেতাকর্মী বঙ্গবন্ধু ও শেখ হাসিনার আদর্শ ধারণ করে। আর যারা এ আদর্শ ধারণ করে না, তারা তো ছাত্রলীগ নয়। ছাত্রলীগ মানেই তো বঙ্গবন্ধু ও শেখ হাসিনা। ছাত্র রাজনীতিকে কেন্দ্র করে কোনো বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হলে আমরা তা কঠোর হস্তে দমন করব। কেননা, শৃঙ্খলা ছাত্রলীগের অন্যতম প্রধান শর্ত। যেখানে শৃঙ্খলা নেই, সেখানে শান্তি থাকতে পারে না। আর যেখানে ছাত্রলীগের মূলনীতি হল- শিক্ষা, শান্তি ও প্রগতি- সেখানে ছাত্রলীগ বিশৃঙ্খলা মেনে নিতে পারে না। বিভিন্ন বাস্তবধর্মী কর্মশালার মাধ্যমে ছাত্রলীগের কর্মীদের আদর্শ ও নৈতিকতার শিক্ষা দেওয়া হয়। জননেত্রী শেখ হাসিনা সব সময় বলে থাকেন, ‘জনগণের ভাত ও ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠা করাই আমার রাজনীতি।’ আমিও তাই মনে করি। আমি আমার ব্যক্তিগত স্বার্থের চেয়ে দেশ ও দলের স্বার্থকে বেশি প্রাধান্য দেই। শেখ হাসিনা সরকারের ভিশন ও মিশন বাস্তবায়নে আমি আমার জায়গা থেকে কাজ করে যাচ্ছি এবং করে যাব ইনশাল্লাহ। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের অবদান সম্পর্কে জননেত্রী শেখ হাসিনা লিখেছেন, ‘সুশাসন কাকে বলে? যে-সরকার রাষ্ট্র পরিচালনার মাধ্যমে মানুষের মনে আস্থা ও বিশ্বাস স্থাপন করতে পারে এবং খাদ্যের অভাব দূর করতে পারে, নতুন কর্মসংস্থান করতে পারে, তাকেই তো অল্প কথায় সুশাসন বলে। আওয়ামী লীগ সরকার সব সময়ই জনগণকে কিছু দিয়েছে। এদেশের মানুষ যা অর্জন করেছে তার সিংহভাগ আওয়ামী লীগের দেওয়া।’ (কণ্ঠ আজিকে রুদ্ধ আমার, সবুজ মাঠ পেরিয়ে) জাতীয় নির্বাচনে আমরা শুধু ছাত্রলীগের কর্মী নয়, দেশের শিক্ষিত সচেতন নাগরিক হিসেবে এদেশ ও এদেশের জনগণকে নিয়ে বঙ্গবন্ধু ও তার সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরতœ শেখ হাসিনার এই স্বপ্নকে প্রচার করব। আমাদের এদেশের জনগণের ভাগ্যোন্নয়নে শেখ হাসিনা সরকারের যে কোনো বিকল্প নেই, সেটার বাস্তব চিত্র তুলে ধরব। আমরা বিভিন্ন প্রচার ও প্রচারণার মাধ্যমে শেখ হাসিনা সরকারের উন্নয়নের বিচিত্র বার্তা জনগণের কাছে পৌঁছে দেব এবং দেশের স্বার্থে, দেশের জনগণের স্বার্থে যে আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনা সরকারের কোনো বিকল্প নেই, সেটা বুঝাতে চেষ্টা করব।
পরিচিতি : সভাপতি, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ
মতামত গ্রহণ : এস এম আল-আমিন
সম্পাদনা : মোহাম্মদ আবদুল অদুদ