জবাবদিহিতা নেই বলেই লুটপাট
রাজনীতি, অর্থনীতি, ব্যবসা-বাণিজ্য, ব্যাংক সমস্ত কিছুতেই দখলদারিত্ব চলছে। এখন ফারমার্স ব্যাংকের যে অবস্থা, এর বাইরেও প্রায় ৫৭ টার মত ব্যাংক, আরও তিনটা সরকার দিচ্ছে। খেলাপী ঋণের পরিমাণ যে হারে বেড়েছে, ফলে যেখানে ১-২ শতাংশ খেলাপী হয়, সেটা সরকারী ব্যাংকের ২৮-২৯% এ চলে গেছে । যেটা চলছে সেটা হল দলীয় করণ, দুঃশাসন এবং লুটতরাজের ফলাফল । আর বিভিন্ন জায়গায় খাস জমি দখল, জলাভূমি দখল, টেন্ডার দখল সমস্ত কিছু, সব জায়গায় সিট বাণিজ্য, ভর্তি বাণিজ্য, সবকিছু চলছে বেপরোয়াভাবে। শাসক দলের লোকেরা বিভিন্নভাবে যে যুক্ত সেটা প্রতিদিন পত্রিকায় পাওয়া যায়। সামান্য কিছু আইনের আওতায় আনা হচ্ছে, বেশির ভাগই আইনের বাইরে থেকে যাচ্ছে। জনগনের ওপরে আস্থাশীল হয়ে শাসন ব্যবস্থা পরিচালিত হয়। জনগনের কাছে জবাবদিহিতা থাকে। তাহলে পরে তাদের একটা নিয়ন্ত্রণ থাকে। এই সরকার জনগনের দ্বারা নির্বাচিতও হয়নি, জনগনের কাছে জবাবদিহিতাও তাদের তেমন নাই। এবং স্বচ্ছ্বতার যে ব্যাপারগুলো থাকা দরকার, প্রতিষ্ঠানগুলো প্রায় দলীয়করণ প্রক্রিয়ার ভেতর ঢুকে গেছে। ফলে বিচার ব্যবস্থাও এখন একটা শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থার মধ্যে পড়ে গেছে। এই সব কিছু মিলিয়ে, প্রতিষ্ঠান, আইন কানুন এগুলো এমন হয়েছে যে, সেগুলোর মধ্যে জবাবদিহিতা অনুপস্থিত, স্বচ্ছ্বতা অনুপস্থিত। জনগনের শাসন ব্যবস্থার ওপরে তাদের যে কর্তৃত্ব অনুপস্থিত হওয়ার কারণে এখন শাসন ব্যবস্থা দুর্নীতিগ্রস্ত এবং একটা অসুস্থ অবস্থার মধ্যে পতিত হয়েছে। রাজনীতি দুর্বৃত্তদের হাতে পড়ে গেছে। শাসকদলের লোকেরাও বলছেন, ৭০ ভাগ ব্যবসায়ীদের হাতে চলে গেছে। যেমন আমরা হরতাল ডেকেছি। বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধি, যে গণশুমারি হয়েছিল তারা প্রায় দেড় টাকার মত এটা কমানো সম্ভব ছিল। আলোচনাটা হয়েছিল মূল্য কমানোর জন্য। তারা যে দামটা বৃদ্ধি করেছিল, যে বিদ্যুৎ ব্যবসায়ী এবং তাদেরকে ২০১০ সাল থেকে ২১ সাল পর্যন্ত দায় মুক্তি দেয়া আছে। ফলে বিনা টেন্ডারে সেখানে যে বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো সেগুলো পাচ্ছে। অর্থাৎ সেখানে কিছু মুষ্টিমেয় লোকের ব্যবসা বাণিজ্যের বিস্তৃতি করার জন্যে জনগনের ওপর দুর্ভোগ নামানো হচ্ছে। আর বাজার সম্পূর্ণ অস্থিতিশীল। এখন পেয়াজের কেজি যদি ১০০ টাকা হয়, মোটা চাল ৪৫ টাকা । কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে মূল্যবৃদ্ধি করে সেখানে জনজীবনে দুর্ভোগ নামিয়েছে। বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধি করার মাধ্যমে সরকার এই দুর্ভোগ আরো ভারী করার দিকে যাচ্ছে। আর তার সাথে ব্যাংক ব্যবস্থা লুটপাটের আখড়ায় পরিণত হয়েছে। সেখানে সর্বস্তরের মানুষই সেই কথা বলছে। সেটাই এখন বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও ব্যক্তিত্বের মাঝে ফুটে উঠছে।
পরিচিতি : সাধারণ সম্পাদক, বাসদ
মতামত গ্রহণ : সানিম আহমেদ
সম্পাদনা : মোহাম্মদ আবদুল অদুদ