৩ দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে ঢাকায় পোপ ফ্রান্সিস
তরিকুল ইসলাম : শান্তি ও সংহতির বার্তা নিয়ে ক্যাথলিক খ্রিষ্টানদের প্রধান ধর্মগুরু পোপ ফ্রান্সিস ৩ দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাকায় এসেছেন। বেলা ৩টার কিছু আগে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তিনি অবতরণ করেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আমন্ত্রণে পোপ ফ্রান্সিসের এ সফর। বাংলাদেশ সফরকালে পোপ ফ্রান্সিস ভ্যাটিক্যান দূতাবাসে অবস্থান করবেন। রোহিঙ্গা সংকটের পরিপ্রেক্ষিতে পোপের এবারের ঢাকা সফরকে খুবই তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। তবে তার এ সফর চলমান রোহিঙ্গা সংকটের ওপর কী প্রভাব ফেলে, সেদিকেই সবার দৃষ্টি থাকবে। যদিও তিনি মিয়ানমার সফরকালে ‘রোহিঙ্গা’ শব্দ উচ্চারণ করেননি, তবে ঢাকায় সফরকালে একদল রোহিঙ্গাকে পোপের সঙ্গে দেখা করতে আনা হচ্ছে। তিনি রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের ওপর পরিচালিত নিষ্ঠুরতার বর্ণনা সরাসরি তাদের কাছ থেকে শোনবেন।
বাংলাদেশের খ্রিস্টান ক্যাথলিক সম্প্রদায়ের সর্বোচ্চ ধর্মগুরু কার্ডিনাল প্যাট্রিক ডি’রোজারিও বলেছেন, পোপ বাংলাদেশ সফরকালে রাখাইন থেকে বিতাড়নের শিকার হয়ে পালিয়ে আসা সংখ্যালঘু মুসলিমদের ওপর নিষ্ঠুর দমন-পীড়নের নিন্দা জানাবেন। বিমানবন্দরে প্রেসিডেন্ট মো. আবদুল হামিদ পোপকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানান। একই সঙ্গে তাকে গার্ড অব অনারসহ সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় সম্মান জানানো হয়। পোপকে স্বাগত জানাতে মন্ত্রিপরিষদের সদস্যসহ রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ প্রতিনিধি এবং ভ্যাটিকান রাষ্ট্রদূতসহ কূটনীতিকরাও উপস্থিত ছিলেন। বিমানবন্দর থেকে তিনি সরাসরি সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে গিয়ে বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধের অমর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এরপর বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরে গিয়ে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন ও সেখানে তিনি স্মৃতিগ্রন্থে স্বাক্ষর করেন। সন্ধ্যায় বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। এছাড়া বঙ্গভবনে রাষ্ট্রের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ, সুশীল সমাজ ও কূটনৈতিক মহলের সঙ্গেও বৈঠক করেন পোপ ফ্রান্সিস।
সফরের দ্বিতীয় দিন আজ শুক্রবার সকাল ১০টায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে খ্রিস্টধর্মীয় উপাসনা ও যাজক অভিষেক অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখবেন পোপ। একই দিনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভ্যাটিকান দূতাবাসে পোপের সঙ্গে বৈঠক করবেন। বিকালে ক্যাথিড্রাল পরিদর্শন করবেন এবং রমনায় প্রবীণ যাজক ভবনে পোপের সঙ্গে বাংলাদেশের বিশপদের বিশেষ বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। সেখানে পোপ বক্তব্য রাখবেন। তারপর আর্চবিশপ হাউসের মাঠে শান্তির জন্য আন্তঃধর্মীয় ও আন্তঃমান্ডলিক সমাবেশে পোপ বক্তব্য রাখবেন।
পোপ তার সফরের শেষদিন শনিবার সকালে তেজগাঁওয়ে মাদার তেরেসা ভবন ব্যক্তিগতভাবে পরিদর্শন করবেন। তারপর তেজগাঁও গির্জায় যাজকবর্গ, ব্রাদার-সিস্টার, সেমিনারিয়ান ও নবিশদের সমাবেশে পোপ বক্তব্য রাখবেন। তিনি তেজগাঁওয়ে পুরনো গির্জা পরিদর্শন করবেন। বিকালে নটরডেম কলেজে যুব সমাবেশে বক্তব্য শেষে শনিবার ৫টার দিকে রোমের উদ্দেশে তিনি ঢাকা ত্যাগ করবেন। সম্পাদনা : গিয়াস উদ্দিন আহমেদ