‘পোপ কে?’ প্রশ্ন রোহিঙ্গাদের
পরাগ মাঝি : ‘পোপ আসছেন!’ খবরটি কানে কানে ছড়িয়ে গেলো কক্সবাজারে অবস্থিত রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে। সন্ধ্যার আলো-আঁধারীতে সবার মাঝেই তখন একটি চাপা উত্তেজনা। বিস্ময়ের চোখে রোহিঙ্গারা একে অপরের মুখের দিকে তাকিয়ে মাথা ঝাঁকাচ্ছিলো। কেউ কেউ বলেই বসলো ‘পোপ কে?’
পোপের ছবি দেখে অনেকেই ভাবছিলো, তিনি বোধহয় কোন দেশের রাজা। আবার কেউ ভাবছিলো উনি আমেরিকা থেকে আসছেন, খুবই গুরুত্বপূর্ন কেউ। আর পোপের মাথায় টুপি দেখে অনেকে তাকে কোন মুমলিম নেতা হিসেবেই সাব্যস্থ করলো।
৪২ বছরে বয়সী রোহিঙ্গা নূরুল কাদের হঠাৎই বলে বসলেন, ‘খবরে উনারে দেখেছি, কিন্তু উনি কি করেন, খুব গুরুত্বপূর্ন কেউ নাকি?’
খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের প্রধান ধর্মীয় গুরু পোপ রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়ে শুরু থেকেই সোচ্চার। এই সমস্যা সমাধানে নানা কূটনৈতিক ও আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টায়ও যখন কোন কুল কিনারাই হচ্ছেনা, ঠিক তখনই বিবাদমান অঞ্চলে সফর করছেন পোপ। সফরের শুরুতেই তিনি মিয়ানমারে যান এবং দেশটির সবচেয়ে শক্তিশালী নেতা অং সান সুচির সঙ্গে বৈঠক করেন। সুচির বিরুদ্ধে রোহিঙ্গা মুসলিমদের উপর গণহত্যা, ধর্ষণ ও বাড়ি-ঘর পুড়িয়ে বিতাড়িত করার ঘটনায় নীরব ভূমিকা পালন ও মৌন সম্মতি জ্ঞাপনের অভিযোগ আনছে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়।
আশা এবং সহনশীলতার বার্তা বয়ে নিয়ে আসা পোপ ফ্রান্সি রোহিঙ্গা সমস্যা মোকাবিলায় গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা রাখবেন এমনটিই আশা করছে বিশিষ্টজনরা। কারণ প্রায় ৬ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশকারী বাংলাদেশে অবস্থান করে সমস্যাটিকে আরও জটিল করে তুলেছে। জনসংখ্যার চাপ, সাম্প্রতিক বন্যা, ফসলহানীর মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগ কাটিয়ে উঠার চেষ্টা করছে বাংলাদেশ। মিয়ানমার থেকে তাই এখন বাংলাদেশে অবস্থান করছেন পোপ। রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলো পরিদর্শনে না গেলেও এই সম্প্রদায়ের একটি প্রতিনীধি দলের সঙ্গে ঢাকায় দেখা করবেন তিনি। শোনাবেন আশার বাণী। এই আশাই এখন রোহিঙ্গাদের সবচেয়ে বড় ভরসা। সম্পাদনা : মরিয়ম চম্পা