দুর্নীতি দমনের ক্ষেত্রে তথ্য প্রযুক্তি
আবুল কালাম আজাদ : দুর্নীতি দমনের ক্ষেত্রে তথ্য প্রযুক্তির একটা উদহারণ দিচ্ছি। এখন কি হচ্ছে? সে ঘরে বসে অনলাইনে আমাদের সিস্টেমে দরখাস্ত করতে পারছে। সে কোন কলেজ থেকে কোন কলেজে যেতে চাচ্ছে এবং সে দরখাস্তটির সাথে ব্যাংকে জমা টাকার রসিদ দিলে সেক্ষেত্রে দুই কলেজের প্রিন্সিপালই দেখতে পারছেন দরখাস্তটি। তখন যদি তারা গ্রহণ করেন তাহলে দ্রুত কাজটি হয়ে যায়। শিক্ষার্থী বিনা হয়রানিতে সহজেই টিসি পেয়ে যাচ্ছে। এতে দুর্নীতিও অনেকখানি কমে গেছে। তারপর রেজিষ্ট্রশন কার্ড কালেকশনের জন্য সেখানেও অনলাইন করে দিয়েছে । জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের আওতায় যে কলেজগুলো ছিল , সেখানে অনেক বড় অংকের টাকার দুর্নীতি হতো। সেখানেও অনলাইন করে দিয়েছে । এখন গভর্নিং বডি চেঞ্জ হয়েছে, সেখানে অনলাইন করে দিয়েছে । সবকিছু অনলাইন এ ফিলাপ করছে । তাহলে অনেক দুর্নীতি কমে গেল না? এখানে শুধু দুর্নীতি কমছে না। জীবনটাকে ফ্রি করে দিচ্ছে । এরপর প্রাইভেট কোম্পানিগুলোতে বিভিন্ন ব্রাঞ্চ থেকে হেড অফিসে যখন কোন বিল দিচ্ছে, সেটা তার হেড অফিস থেকে অটোমেশন এর মাধ্যমে দেখতে পারছে। এখানে শুধু দুর্নীতি কমছে না, সময়ও কমে যাচ্ছে। এই অটোমেশন টা আমাদের অর্থনীতির জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ । বর্তমানে ফোর‘জি চালু হয়েছে, এটা কাজের ক্ষেত্রে অনেক সহায়ক হচ্ছে। আগে আমার ইনভেনটরি সিস্টেম তাল্লু স্পিনিং-এ চলছিল। আমাকে ঢাকা থেকে চুয়াডাঙ্গা যেতে হয়েছে বা চট্ট্রগ্রামের মর্ডাণপোল ইন্ড্রাস্টিজে যেতে হয়েছে । এখন টেকনোলজিগুলো আসার কারণে আমি এখান থেকে তাদের রিমোর্টে, সার্ভারে ঢুকে সমস্যাগুলো সমাধান করে দিচ্ছি। ফলে আমার টাইম সেইভ হলো, আর্থিক খরচটি সেইভ হলো। এগুলো সবই টেকনোলজির বেনিফিট। এখন ঘরে বসেই এসব সাপোর্টগুলো দেওয়া যায়। ইআরপি মানে এন্টারপ্রাইজ রিসোর্স প্ল্যান। এটা টোটাল ব্যবসাটিকে অটোমেশন করার প্রক্রিয়া। যেমন লাইফ ইন্স্যুরেন্সে প্রত্যেকটি ডিপার্টমেন্ট সময়ের উপযোগি করে সব সিস্টেম দাঁড় করিয়ে দিয়েছি। এন্টারপ্রাইজ রিসোর্স প্ল্যানিং এর মাধ্যমে টোটাল রিসোর্সটিকে আমি একটি অটোমেশনে নিয়ে এসেছি। প্রত্যেকটি ডিপার্টমেন্ট একটির সাথে অন্যটির ইন্টিগেশন আছে। আমি দেখে নিশ্চয়তা দেই। এতে গ্রাহকরাও আশ্বস্ত হচ্ছে। তাদের মোবাইলে ম্যাসেজ যাচ্ছে। তখন তারা নিশ্চিত হয়ে যায়, তাদের টাকাটা জমা পড়েছে। আগে একটা বিষয় ছিলো, যার কাছে গ্রাহক পলিসি করতো, তার কাছে বিভিন্ন হাতে চেক যেতো। সে অনেক সময় চেকটি দিতো না। আজকাল করে গ্রাহকদের হয়রানি করতো। এখন আমরা সিস্টেম করে দিয়েছি, সে যখন নিয়িমিত হয়ে যাবে তখন আমার সিস্টেম বলবে যে, সে কতগুলো পলিসি জমা দিয়েছে। তখন আমি যে পলিসিগুলো জমা পড়েছে সেগুলোকে একটি প্রসেস করে আমাদের সার্ভিসিং সিস্টেমে নিয়ে আসি। তারা সার্ভিস করে আমাদের একাউন্টস স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের মাধ্যমে গ্রাহকের একাউন্টে টাকাটা অটো পাঠিয়ে দিচ্ছে। আর এই সুবিধাগুলো অটোমেশনের কারণে হচ্ছে। সুতরাং দুর্নীতিরোধ ও কাজের সুবিধা সৃষ্টিতে অটোমেশন তথা তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার খুবই প্রয়োজনীয়।
লেখক : মহাব্যবস্থাপক ও হেড অব আইটি, প্রগতি লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানী লি.
সম্পাদনা : মোহাম্মদ আবদুল অদুদ