হারিয়ে যাচ্ছে বেতাগীতের খেজুর গাছ ও রস
ডেস্ক রিপোর্ট : বেতাগীতে ধীরে ধীরে হারিয়ে যাচ্ছে খেজুর গাছ ও রস। কালের পরিক্রমায় গ্রাম খেজুর গাছ উজাড় যাওয়ায় এ সংকট তৈরি হয়েছে। তবে এরজন্য স্থানীয়রা দায়ী করেছেন ইট ভাটার মালিকদের। তারা অবাধে গাছ কেটে ইট ভাটায় জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করছে। এতে একদিকে নষ্ট হচ্ছে প্রাকৃতিক ভারসাম্য ও হারিয়ে যাচ্ছে গ্রামীণ ঐতিহ্য। ইত্তেফাক অনলাইন
দেড়লাখ জনসংখ্যা অধ্যুষিত এ উপজেলাবাসী রসের ঋতু শীতকাল আসলেই মেতে উঠতো নবান্ন উৎসবে। এর পরিপূর্ণতা এনে দিতো খেজুর রসে তৈরি গুড়। উপজেলার প্রত্যন্ত কিছু এলাকায় গাছিরা এখনো গাছ কেটে রস সংগ্রহ করলেও নেই আগের আমেজ। রসনা তৃপ্তিতে এখানকার বাসিন্দাদের খেজুরের রস ও গুড়ের বিকল্প ছিল না। যত শীত পড়তো খেজুর গাছের রস তত মিষ্টি দিতো। রস আর গুড়ের মিষ্টি গন্ধে ধীরে ধীরে আমোদিত উঠতো এ জনপদ। একসময় গাছ কাটা গাছি ও খেজুর গাছের সঙ্গে এখানকার মানুষের নিবিড় সম্পর্ক ছিল। গুড় এবং পাটালি তৈরির সঙ্গে জড়িতদের মধ্যে প্রাণচাঞ্চল্যের সৃষ্টি হতো। গ্রামীণ পরিবেশ উঠতো মধুর। এখানে আগে খেজুর গাছ মধুবৃক্ষ হিসেবেও পরিচিত ছিল। এ সম্পর্কে স্থানীয়রা জানান, গাছিরা হেমন্তের প্রথম থেকেই গাছ ঝোড়া শুরু করতেন। শীত বইতেই গাছ ছেঁটে চেঁছে প্রস্তুত করে রস আহরণের চেষ্টা চালাতো। গোধূলি বেলায় তাতে মাটির হাঁড়ি পাততো। সারারাত গাছ কাঠি বেয়ে রসে ভরে উঠতো মাটির হাঁড়ি। একসময় একেকটি পরিবার ৩০ ৪০টি খেজুর গাছ কাটতো। কেউ কেউ এর চেয়ে আরো অধিক গাছ কাটতো। ভোর ও সন্ধ্যারাতে রস জাল দিয়ে গুড় তৈরি করা হতো। তবে রস পাওয়া এখন দুষ্কর। তারপরও বাজারে কেউ নিয়ে আসলে মানুষ হুমড়ি খেয়ে পড়ে। বর্তমানে বাজারে এক কলস রস ৩৫০ ৪০০ টাকা ধরে বিক্রি হচ্ছে। সম্পাদনা : সৈয়দ নূর-ই-আলম