চালের মূল্য বৃদ্ধি কারণ হতে পারে : এবি মির্জ্জা আজিজ দেশে মানুষের খাবার গ্রহণ কমে গেছে
বিশ্বজিৎ দত্ত : সারাদিন শুধু শসা খান। রাতে আধা পেট খেয়ে ঘুমান। এসব ডায়েটিং ফর্মুলা নয়। প্রকৃত অর্থেই দেশের মানুষ খাবার কম গ্রহণ করছে। এ কারণে তাদের গড় শক্তি কমে যাচ্ছে। তাতে উন্নয়ন কাজ ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে মনে করেন ডেভেলপমেন্ট সাইনাজি ইনস্টিটিউটের উন্নয়ন গবেষক মনোয়ার মোস্তফা।
২০১৬ সালের পার্লামেন্টারি জরিপ রিপোর্ট থেকে জানা যায়, গত ৬ বছরে দেশের মানুষের খাদ্যগ্রহণ কমে গেছে। জরিপটি করা হয়েছে দেশের মানুষের গড় আয় ও ব্যয়ের উপরে। সেখানে দেখানো হয়েছে, ২০১০ সালে প্রতিদিন মানুষ বিভিন্ন ধরনের খাবার গ্রহণ করতো ১০০০ গ্রাম। ২০১৬ সালে কমে হয়েছে ৯৭৫ গ্রাম। একইসঙ্গে ২০১০-এ মানুষের বার্ষিক গড় ক্যালরি ছিল ২,৩১৮ কিলো ক্যালরি। ২০১৬ সালে তা কমে হয়েছে ২,২১০ কিলো ক্যালরি।
খাদ্য গ্রহণ কমে যাওয়ার বিষয়ে অর্থনীতিবিদ এ বি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম মনে করেন, সাম্প্রতিক সময়ে চালের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় মানুষের খাবার গ্রহণ কমতে পারে। তা ছাড়া খাদ্যপণ্যের মূল্যও বেড়েছে। অন্যদিকে সরকারি হিসাবে মানুষের গড় আয় বৃদ্ধি পেলেও প্রকৃত আয় বৃদ্ধি পেয়েছে কি না তা হিসাব করা হয়নি। প্রকৃত আয় কমে যাওয়ায় মানুষ খাবার খরচ কমিয়ে দিতে পারে। তা ছাড়া দেশে বৈষম্যও বৃদ্ধি পেয়েছে। দেশের উন্নয়ন সমভাবে হচ্ছে না। কোথাও কোথাও চরম দারিদ্র্য এখনো রয়ে গেছে। দেশে মানুষের গড় আয়ও বৃদ্ধি পেয়েছে। খাবার ব্যয়ও বৃদ্ধি পাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু কেন তা কমেছে তা নিয়ে সরকারকে ভাবতে হবে। মনোয়ার মোস্তফা জানান, ২০১০ সালে দেশে দরিদ্রের সংখ্যা ছিল মোট জনশক্তির ৩১ ভাগ। বর্তমানে তা কমে হয়েছে ২৪ ভাগ। তবে উত্তরবঙ্গে বিশেষ করে রংপুর, নীলফামারি, কুড়িগ্রাম, দিনাজপুর, কিশোরগঞ্জ, বান্দরবান জেলায় সবচেয়ে বেশি দারিদ্র্য রয়েছে। যেমন কুড়িগ্রামে দারিদ্র্য শতকরা ৭০ ভাগ। এই অসম উন্নয়ন গড় খাদ্যগ্রহণের হিসাবে সমস্যার সৃষ্টি করেছে। কোথাও আসলে শুধুমাত্র ভাত আর অল্প কিছু খাওয়া হচ্ছে। কোথাও খাদ্যের বাড়তি রয়েছে। আবার নন-ফুড আইটেম ক্রয়ে মানুষের ব্যয় কিছুটা বেড়েছে। সম্পাদনা : হাসিবুল ফারুক চৌধুরী