ডাকসু নির্বাচনের দাবিতে অনশনরত ওয়ালিদ আশরাফ রাষ্ট্রপতি ও হাইকোর্টের নির্দেশনা মানছে না ঢাবি
তরিকুল ইসলাম : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কাউকে পাত্তা দিচ্ছে না জানিয়ে ডাকসু নির্বাচনের দাবিতে অনশনরত ওয়ালিদ আশরাফ বলেছেন, ডাকসু নির্বাচন নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় রাষ্ট্রপতি ও হাইকোর্টের নির্দেশনাও মানছে না। দীর্ঘ ২৭ বছর ডাকসু নির্বাচন হচ্ছে না, এটা নতুন প্রজন্মের সাথে ষড়যন্ত্র। এর ফলে মুক্ত চিন্তা চর্চাসহ নানা বিষয়ে বাধাগ্রস্ত হতে হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের। এছাড়াও তরুণ নেতৃত্ব তৈরি হচ্ছে না। অথচ আগে দেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় ছিল ডাকসু। গত মাসের ২৫ তারিখে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবনের সামনের স্মৃতি চিরন্তনে অনশনে বসেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের এমএসএস (সান্ধ্যকালীন) দশম ব্যাচের এ শিক্ষার্থী। গতকাল (বৃহস্পতিবার) দুপুরে আলাপকালে ওয়ালিদ আশরাফ এই প্রতিবেদককে জানান, বিশ্ববিদ্যালয় এখন দাস ও করুণায় পরিণত হয়েছে। ক্ষমতাসীনদের দখলে এভাবে দেশের সেরা বিদ্যাপিঠ নতজানু হয়ে থাকতে পারে না। ক্যাম্পাসের পরিবেশ ও ক্যাফেটেরিয়ার অবস্থা খুবই খারাপ। চাইলেও একজন বিদেশিকে এখানের হোস্টেল বা ক্যান্টিন পরিদর্শন করানো সম্ভব নয়। রুম দখলদারিত্বে সব এলোমেলো হয়ে আছে। একজন ছাত্র ভর্তি হওয়ার পর দুবছর পার হয়ে যায় সিট পেতে। কেন এটা কর্তৃপক্ষের নজরে থাকবে না? তিনি বলেন, অনশনের ১২ দিন চললেও ভিসি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখনো কেউ দেখা করতে আসেনি। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমি অনশন চালিয়ে যাব। ভিসি স্যারের সাথে কথা বলতে চাই।
আশরাফ আরও বলেন, আমার সাথে সকল ছাত্র সংগঠনগুলো রয়েছে। তাদের সমর্থন পাচ্ছি। আমরা এগিয়ে যেতে চাই। ছোট্ট একটি অস্থায়ী তাঁবু গেড়েছেন ওয়ালিদ আশরাফ। নিত্যপ্রয়োজনীয় কিছু জিনিস আর কম্বল নিয়ে সেখানেই কাটাচ্ছেন দিন-রাত। ওয়ালিদ আশরাফের এই ব্যতিক্রমী উদ্যোগের প্রতি শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের আগ্রহ বাড়ছে প্রতিদিন। পথচারীরা কেউ কেউ তার সঙ্গে আলাপ-আলোচনাও করছেন। টানা অনশনের কারণে শারীরিকভাবে অনেকটা দুর্বল হয়ে ওয়ালিদ ঢাকা মেডিকেল কলেজে চিকিৎসাও নিয়েছেন একবার। স্বাস্থ্য পর্যবেক্ষণ করে ডাক্তার জানিয়েছেন, রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ অনেক কমে গেছে, রক্তচাপও অনেক কম। তাই যেকোনো সময় বড় ধরনের অঘটন ঘটে যেতে পারে। তবুও তিনি ডাকসুর নির্বাচনের দাবিতে অনড়। ওয়ালিদের অনশনে সোচ্চার হয়েছে ঢাবির বাম ছাত্রসংগঠনগুলো। তার দাবির সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করেছে। শিক্ষার্থীরা ওয়ালিদের কাছে গিয়ে একাত্মতা প্রকাশ করেছেন। অনুষ্ঠিত হয়েছে প্রতিবাদী কনসার্ট। ঢাকার মগবাজার এলাকার ছেলে ওয়ালিদ নটরডেম কলেজ থেকে ২০০১ সালে এইচএসসি পাস করেন, এরপর সিদ্ধেশ্বরী ডিগ্রি কলেজ থেকে ২০০৫ সালে ডিগ্রি পাস করেন। সম্পাদনা : তরিকুল ইসলাম সুমন