ভর্তিযুদ্ধ নিয়ে চিন্তিত অনেক অভিভাবক এস এম সাব্বির
আবার এসেছে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্কুলে ভর্তির মৌসুম। ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকদের নামতে হচ্ছে ভর্তিযুদ্ধে। আদরের সন্তানটিকে পছন্দের স্কুলে ভর্তি করতেই হবে। পছন্দের স্কুল মানে ভালো স্কুল, নামী স্কুল। যে স্কুলে শুধু পড়া-লেখাই ভাল নয়, ভাল পরিবেশও বটে। এজন্য চেষ্টার কোনো কমতি নেই। কেজি ও প্রথম শ্রেণিতে ভর্তি পরীক্ষা উঠিয়ে লটারির নিয়ম করায় ছাত্র-ছাত্রী ও অভিভাবকদের কিছুটা স্বস্তি আসলেও, দ্বিতীয় থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত ভর্তি পরীক্ষা যুদ্ধের বিকল্প নেই। এজন্য ঘরে ভর্তিচ্ছুদের পড়াশোনায় বাড়তি নজর, প্রাইভেট টিউটর রাখা, কোচিং সেন্টারে নিয়ে যাওয়াÑ আরও কত কি! এত কিছুর পরও ৮০-৯০ শতাংশেরই তাদের পছন্দের স্কুলে ভর্তির সুযোগ হয় না।
এর কারণ খুবই স্পষ্ট। প্রতিটি জেলায় সরকারি-বেসরকারি নামী-সাধারণ মিলিয়ে অসংখ্য স্কুল রয়েছে, কিন্তু ভালো স্কুল বা পছন্দের স্কুলের সংখ্যা একেবারেই কম। এই সুযোগে ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়ে উঠেছে অসংখ্য কোচিং সেন্টার। নানা প্রতিশ্রুতি ভরা কোচিং সেন্টারগুলো। নানা ফন্দি-ফিকিরও রয়েছে তাদের। এই সংকটের সুযোগ নেয় চাহিদাসম্পন্ন স্কুলগুলোও। প্রকাশ্যে বা অপ্রকাশ্যে ফি’র নামে চলে টাকা আদায়। ভর্তি পরীক্ষার ফল এড়িয়ে চলে ডোনেশনে, ভর্তির লড়াই। শুধু শিক্ষার্থীর মেধা থাকলেই হবে না, অভিভাবকদের থাকতে হবে টাকার জোর নয়তো প্রভাবশালীদের সঙ্গে সম্পর্ক। বলাই বাহুল্য এই অবস্থাটা শিক্ষার্থী ও অভিভাবক উভয়ের জন্যই এক বড় ধাক্কা। সন্তানদের নামী স্কুলে ভর্তির সঙ্গে এখন জড়িয়ে গেছে মা-বাবার সামাজিক মর্যাদাও। এই সংকট উত্তরণে প্রধান করণীয় হলোÑ স্কুলগুলোকে একটা সন্তোষজনক মানে নিয়ে আসা। দরকার অভিভাবকদের মানসিকতারও পরিবর্তন। শুধু নামী স্কুলের পেছনে ছোটার ও শিক্ষার্থীদের ওপর বাড়তি চাপ প্রয়োগের প্রবণতা থেকে বেরিয়ে আসা। কোচিং সেন্টারগুলোর ফন্দি-ফিকির, শিক্ষার্থী ভর্তি নিয়ে স্কুল কর্তৃপক্ষের অনিয়ম-দুর্নীতির মাধ্যমে জিম্মি করাÑ এসব দমনে সচেষ্ট হতে হবে সকলের। সন্তানদের ভবিষ্যতের কথা ভেবে এটা আমাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য।
লেখক : সাংবাদিক
সম্পাদনা : মোহাম্মদ আবদুল অদুদ