একজন আদর্শ শিক্ষক মাস্টার আবদুল করিম
খন্দকার বিল্লাল হোসাইন
কুমিল্লার নাঙ্গলকোটের প্রাচীনতম ঐতিহ্যবাহী স্কুল কাকৈরতলা উচ্চ বিদ্যালয়। ১৯৪৫ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় স্কুলটি। এই অঞ্চলে এটাই প্রথম শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। দূর দূরান্ত থেকে এই বিদ্যাপিঠে শিক্ষাগ্রহণের জন্য আসতো ছাত্ররা। আর যার জন্য এই প্রতিষ্ঠানটি আলোকিত হয়েছিল, তিনি হলেন মাস্টার আবদুল করিম। এই স্কুল প্রতিষ্ঠা সময় থেকে প্রধান শিক্ষক ছিলেন তিনি। শুধু আমার নয়, আমার বাপ চাচারও শিক্ষাগুরু তিনি। সেই প্রাইমারি থেকে শুরু করে বাংলাদেশের সেরা বিদ্যাপীঠ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত পড়ালেখা করার সুযোগ পেয়েছি। দু-চার জন ছাড়া এমন আপাদমস্তক শিক্ষক আমার কমই চোখে পড়েছে। এখনকার শিক্ষকরা ক্লাসে রাজনৈতিক সবকসহ নানান অপ্রাসঙ্গিক বিষয় দিয়েই ক্লাস শেষ করেন। অথচ অবসরের আগ পর্যন্ত জানতাম না উনি কোন দল করেন। এখন রাজনীতি না করলে শিক্ষক হওয়া যায় না। এখন স্কুলের ছাত্ররা শিক্ষককে ভাই ডাকেন, ঠাট্টা-মসকরা করেন। করিম স্যার প্রধান শিক্ষক থাকাকালীন স্কুলের সময় কোনো ছাত্রছাত্রী বারান্দায় আসার সাহস করতো না। এমন ব্যক্তিত্ব সম্পন্ন শিক্ষক ছিলেন তিনি। উনার ছাত্ররা সচিব থেকে শুরু করে দেশের নামকরা সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত। বহমান এ নষ্ট সময়ে আজ এই স্কুলের শিক্ষকরা অনেকে ব্যবসা ও কোচিং বাণিজ্য নিয়ে ব্যস্ত। তাই এ নষ্ট সময়ে করিম স্যারকে খুব মনে পড়ছে। আল্লাহর কাছে প্রার্থনা, এ আপদ মার্কা শিক্ষক নামের ব্যবসায়ীদের থেকে যেন প্রিয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে রক্ষা করে। সর্বোপরি আল্লাহ যেন সর্বজন শ্রদ্ধেয় প্রিয় শিক্ষক মাস্টার আবদুর করিম স্যারকে বেহেস্ত নসিব করেন।
লেখক : সাংবাদিক/সম্পাদনা : মোহাম্মদ আবদুল অদুদ