রাজস্ব ঘাটতিতে বাজেট কমছে ২৯ হাজার কোটি টাকার
বিশ্বজিৎ দত্ত : রাজস্ব আদায় আশানুরুপ বৃদ্ধি না পাওয়ায় এ মাসেই বাজেট সংশোধনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। অর্থমন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, বাজেটে রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারিত হয়েছিল ২ লাখ ৮৭ হাজার ৯৯০ কোটি টাকা। যারমধ্যে এনবিআর’র আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২ লাখ ৪৮ হাজার ১৯০ কোটি টাকা। এই লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে প্রথম ৬ মাসে রাজস্ব বোর্ডের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল প্রায় ১ লাখ কোটি টাকা। কিন্তু জুন থেকে অক্টোবর পর্যন্ত রাজস্ব বোর্ড লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে পারেনি। আগামী কয়েক মাসেও এই লক্ষ্যমাত্রা অর্জন হবে বলেও মনে করছে না মন্ত্রণালয়। এখন বাস্তবতার নিরিখে প্রায় ২৯ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আয় সংশোধনের প্রস্তাব করা হয়েছে। রাজস্ব বোর্ড থেকে জানা যায়, অক্টোবর পর্যন্ত তাদের কর আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৬৫ হাজার ৪৫৮ কোটি টাকা। কিন্তু আদায় হয়েছে ৫৮ হাজার ৮৯৭ হাজার কোটি টাকা। লক্ষ্যের চেয়ে প্রায় ৮ হাজার কোটি টাকা কম আদায় হয়েছে। যদিও রাজস্ব বোর্ড বলছে লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত না হলেও তাদের আদায়ের প্রবৃদ্ধি বিগত ৫ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ ১৮ শতাংশ। গতবছরের চেয়ে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১ শতাংশ বেশি।
রাজস্ব বোর্ডের এ প্রবৃদ্ধির সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করে সাবেক এনবিআর সদস্য আমিনুর রহমান বলেন, দেশে জিডিপি হার বৃদ্ধি পেয়েছে ৭ দশমিক ২৪ শতাংশ। মূদ্রাস্ফীতি হয়েছে ৬ শতাংশের ওপর। এটি বিবেচনায় নিলে করের প্রবৃদ্ধি হওয়া উচিৎ ২৩ থেকে ২৪ শতাংশ। ১৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্থনীতির বিশালতায় খুবই কম। বাজেটে মোট জাতীয় উৎপাদন ধরা হয়েছে ২২ লাখ ২৩ হাজার কোটি টাকা। আগের বছরের বাজেটেও আয়কর ক্ষেত্রে সংশোধন করা হয় প্রায় ২৬ হাজার কোটি টাকা। অর্থাৎ, ২ বছরে প্রায় ৫৫ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব কম আদায় হয়েছে। আর অর্থবছরের মাঝামাঝি যদি ২৯ হাজার কোটি টাকা সংশোধন করতে হয় তবে বছর শেষে আরো সংশোধন করতে হতে পারে। এটি হিসাবে নিলে রাজস্ব আদায়ের প্রবৃদ্ধি আগের যেকোন বছরের চেয়ে ঋণাত্মক।
এ ব্যাপারে রাজস্ব বোর্ডের সদস্য আব্দুর রাজ্জাক জানান, প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে গত কয়েক মাসে আয়কর আদায় কম হয়েছে। কিন্তু ডিসেম্বরের পরে তা ঠিক হয়ে যাবে। রাজস্ব আয় সংশোধন করা হচ্ছে বলে এখনো জানি না। তবে রাজস্ব আদায়ের অন্যতম একটি খাত ব্যাংক। এবছর ব্যাংকের আয় কম হয়েছে। অনেক ব্যাংক তো দেউলিয়ার পথে। এ হিসাবে কর আদায় কম হতে পারে। সেক্ষত্রে বাজেট সংশোধনের প্রয়োজন রয়েছে। আবার সরকারের এডিপি শতভাগ বাস্তবায়িত হলে বাজেট সংশোধনের প্রয়োজন নাও হতে পারে। সম্পাদনা : সান্দ্রা নন্দিনী