মানব রুচিবৈচিত্র্য মূল্যায়নে ইসলাম
মু. ইলিয়াস আলমগীর
রুচি-অভিরুচি বললে সাধারণত মানুষের মার্জিত ও পরিশীলিত আচার ও আচরণকেই বুঝি আমরা। ‘লোকটার রুচি বলতে কিছু নেই’ কথাটা মানুষ বলে এটাই বুঝায়, তার আচার আচরণ স্বভাব মেজাজ মার্জিত ও পরিশীলিত নয়! অবশ্য মানুষের নিজস্ব পছন্দকেও ব্যক্তির রুচি বলে আমরা অভ্যস্ত! বলি, মানবরুচি কতটুকু মানোত্তীর্ণ হলে সাধারণ মাত্রা ছাড়িয়ে উন্নত রুচি হিসেবে অভিহিত হবে, সে সর্বজনীন মানদ- কিন্তু আজো অসংজ্ঞায়িত! আধুনিক সভ্যতায় এসেও উন্নত রুচির সর্বজনমনোহরী স্ট্যান্ডার্ড এখনও অনাবিস্কৃত! বলতে গেলে মানুষের আচার আচরণের গ্রহণযোগ্যতা নির্ভর করে অনেকটা সমাজ কিংবা সম্প্রদায়ের মৌলিক গঠনের উপর। ফলে সামাজিক ও সাম্প্রদায়িক বৈচিত্রের বিভায় মানবরুচিও ফুটে উঠে বিচিত্রভাবে। তাই রুচির সংজ্ঞা এবং পরিচয়টাও আজ বহুরৈখিক রেখায় বৈচিত্রময়! এ কারণে এক সমাজে যা উন্নত রুচির পরিচায়ক, অন্য সমাজে তা আদৃত নাও হতে পারে! কথা কি, ব্যক্তির রুচি থেকেই অনেকাংশে গড়ে ওঠে পারিবারিক রুচিবোধ! পরিবার সাধারণত নির্মাণ করে সামাজিক রুচিবোধ! সমাজ গঠন করে জাতীয় রুচিবোধ! আর জাতীয় রুচির বহুকেলে চর্চাকেই আমরা সাধারণত কালচার বলে থাকি! জাতীয় রুচিবোধ কিন্তু কোন জাতির প্রতিটি এককের পূর্ণ রুচিবোধের প্রকাশ নয় বরং যৎসামান্য সামষ্টিক দ্যোতনা মাত্র! তবু পৃথিবীতে জাতীয় রুচিবোধ কত যে বৈচিত্র্যময় তা কল্পনা করাও কঠিন। চলুন, মানব রুচিবৈচিত্র মূল্যায়নে আমরা রাসূল সা:এর হাদীস দ্বারাই শুরু করি! তিনি বলেছেন, তোমরা মানুষের সাথে তার স্বভাব চরিত্র এবং রুচি অনুযায়ী আচরণ কর! উল্লেখ্য, হাদিসে বর্ণিত স্বভাব চরিত্র এবং রুচি বলতে আমরা সমাজে পরিচিত মার্জিত ও পরিশীলিত রুপটাকেই বুঝব! এবং কল্পনায় সুরুচিকেই চিত্রায়িত করব কুরুচিকে নয়! মানব সমাজের মার্জিত আচরণের বিভিন্নতায় যে বৈচিত্র উদ্ভাসিত হয়, সে বিচিত্র অধ্যায়ের নির্দেশক শিরোনাম হলো বিশ্বনবীর এই বাণী! রাসূল সা:এর কথায় কী চমৎকারভাবে ফুটে উঠেছে সুরুচি মূল্যায়ণের সূর্যরেখা! শুধু তথ্যবিজ্ঞপ্তিতে নয়, রাসূলের সা: আচরণবিজ্ঞপ্তিতেও দেখতে পাই অন্যের রুচিকে মূল্যায়ন করার অনুপম দৃষ্টান্ত!
লেখক : কবি ও কলামিস্ট
সম্পাদনা : মোহাম্মদ আবদুল অদুদ