সাক্ষাৎকারে মাহমুদুর রহমান মান্না নির্বাচনবিহীন ভোটের নামে ভয়ঙ্করী খেলায় ক্ষমতায় থাকতে চায় আওয়ামী লীগ
খন্দকার আলমগীর হোসাইন : ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি আওয়ামী লীগ যেটা করেছে, সেটা কোনো নির্বাচনই ছিল না। তারা আবার এটাই করতে চাচ্ছে। নির্বাচনবিহীন ভোটের নামে ভয়ঙ্করী খেলায় ক্ষমতায় থাকতে চায় আওয়ামী লীগ। সেটাকে গণতন্ত্র বলে চালানোর চেষ্টা করছেন। দৈনিক আমাদের অর্থনীতিকে নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না এসব কথা বলেন।
তাদের লক্ষ্য যদি রাষ্ট্রের জনকল্যাণ হতো, তাহলে তারা ফ্লাইওভার প্রকল্প নিতে পারতো না। পদ্মা ব্রিজ নিয়ে বলা হচ্ছে, স্বপ্নের ব্রিজ ইত্যাদি ইত্যাদি। তার পেছনে পদ্মা ব্রিজ নিয়ে যে বিটার দুর্নীতি-লুটপাট হচ্ছে কেউ তা বলছে না। এই পদ্মা সেতুর সাথে তুলনা করেই ভারতে মেঘালয় আশালয়ের মধ্যে সংযোগকারী নদীর উপর ৯ কিলোমিটারের ব্রিজ নির্মাণ করতে লেগেছে মাত্র সাড়ে ১১শ কোটি টাকা। আর আমাদের পদ্মা সেতু ৬ কিলোমিটার ব্রিজ ৫০ হাজার কোটি টাকায়ও শেষ হবে কিনা সন্দেহ।
জনগণ মনে করছে, আছেই তো দুটো দল। বিএনপির প্রতি ক্ষুব্ধ হয়ে আওয়ামী লীগকে ভোট দিচ্ছে, আওয়ামী লীগের উপর ক্ষুব্ধ হয়ে বিএনপিকে ভোট দিচ্ছে। তাতে কিন্তু মূল সমস্যার সমাধান হচ্ছে না। ক্ষমতার ওই জায়গায় যারা গেলে সমাধানটা করতে পারবে, তারা তো যাচ্ছে না। যুক্তফ্রন্ট নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা একটা কল্যাণ রাষ্ট্র গঠন করতে ঐক্যবদ্ধ হয়েছি। যেহেতু দুইটা শক্তিই অনেক বড়, তাদের কাছে আমরা হয় তো কিছুই না। আমাদের বিশ্বাস হয়েছে, জনগণ এই একটা ব্যবস্থা চায় না। জনগণ পরিবর্তন চায়। তারা কোনো শক্তি দেখছে না। সেই শক্তিকে দৃশ্যমান করব, জনগণের কাছে যাব, তাদের বুঝাব। বড় দুই দলের প্রতিপক্ষ হিসেবে সুরাজনীতি, সুস্থ রাজনীতি, দুর্বৃত্তায়নের বিপক্ষে একটা সৎ রাজনীতি গড়ার চেষ্টা করছি।
অপর প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বড় যে দুই জোট আছে তাদের মধ্য থেকে তো সরকারি জোটের সাথে জোট হওয়ার তো কোনো সুযোগ নেই। আমরা বলছি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন দেন, সে দায়িত্ব তো সরকারের। আমরা প্রায়শই মনে করি বিএনপি এবং আওয়ামী লীগের মধ্যে চরিত্র গত কোনো পার্থক্য নেই। সেই জন্য আমরা কারো সঙ্গে নেই। আজকে আমি যে গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের দাবি তুলছি, সেটা তো বিএনপির কাছে করছি না, আওয়ামী লীগের কাছে করছি। বিএনপিও একই দাবি তুলছে, এ দাবির জায়গায় তো আমরা কাছাকাছি আছি। কিন্তু এখানেই তো শেষ হয়ে যাচ্ছে না। এই দাবি আদায় হলে সরকারের প্রশ্ন আসবে। তখন আমি যা যা বলছি তখন যদি বিএনপির সাথে মিলে, জোট হতেও পারে। বিএনপি যে ভিশন ২০৩০ দিয়েছে, সেখানেও কল্যাণ রাষ্ট্রের কথা রয়েছে। যদি এই রকম কোনো পরিস্থিতি আসে নির্বাচনি সমঝোতা ব্যাপার আসে, তখন ভিন্ন বিষয়। আমাদের জোটের পরিধিও বাড়তে পারে। অনেকের সাথে আলাপ আলোচনা চলছে।