ঢাকায় আকায়েদের স্ত্রী ও শ্বশুর-শাশুড়িকে জিজ্ঞাসাবাদ
ইসমাঈল হুসাইন ইমু, শহীদুল ইসলাম ও ইউছুপ রেজা : নিউইয়র্কেও ব্যস্ততম বাস টার্মিনালে সোমবার ‘সন্ত্রাসীা হামলার চেষ্টার’ অভিযোগে আটক বাংলাদেশি অভিবাসি আকায়েদ উল্লাহর ঢাকায় অবস্থানরত স্ত্রী জান্নাতুল ফেরদৌস জুঁই, শ্বশুর জুলফিকার হায়দার ও শাশুড়ি মাহফুজা আক্তারকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্র্যান্স ন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট (সিটিটিসি)। গতকাল মঙ্গলবার বিকাল সোয়া তিনটার দিকে রাজধানীর জিগাতলার মনেশ্বর রোডের একটি বাসা থেকে তাদের নিয়ে আসে সিটিটিসির কর্মকর্তারা।
সিটিটিসির অতিরিক্ত উপ-কমিশনার মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, আকায়েদ সম্পর্কে সাধারণ তথ্যের বাইরে এখনো তেমন কোনো কিছু পাইনি। তার সম্পর্কে বিস্তারিত জানার চেষ্টা করছি। সে জন্য তার স্ত্রী ও শ্বশুর-শাশুড়িকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আনা হয়েছে। আকায়েদের পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, গত বছর জানুয়ারি মাসে জান্নাতুল ফেরদৌস জুঁইয়ের সঙ্গে আকায়েদের বিয়ে হয়। এ বছরের ১০ জুন সন্তানের পিতা হয় আকায়েদ। সন্তান হওয়ার খবর পেয়ে গত ১৮ সেপ্টেম্বর দেশে এসেছিল আকায়েদ। এক মাস অবস্থানের পর গত ২২ অক্টোবর আবার যুক্তরাষ্ট্রে ফিরে যায়। আকায়েদের বাড়ি সন্দ্বীপের মুছাপুর ইউনিয়নে ভুটান বা বোতান তালুকদারের বাড়ি হিসেবে পরিচিত। আর নানাবাড়ি সন্দ্বীপের গাছুয়া আলম ডাক্তারের বাড়ি। সেখানে এখন শুধু তার খালু তুসান কোম্পানি থাকেন।
আকায়েদ উল্লাহর স্ত্রীর ভাই হাফিজ মাহমুদ বলেন, এ বছর আকায়েদ দেশে আসার পর তার সঙ্গে দেখা হয়েছে। তবে তারা টের পাননি সে অন্য কোনোদিকে মোটিভেটেড হয়েছে কিনা। সে সাধারণ মুসল্লির মতো মসজিদে গিয়ে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ত বলেও জানান তিনি।
আকায়েদের চাচাতো ভাই সোহরাব বলেন, আমার চাচা (সানাউল্লাহ) ঢাকার হাজারীবাগে থাকতেন। সেখানে চাচা একটি মুদি দোকান চালাতেন। সেখান থেকে তারা আমেরিকা গেছেন। ওরা ঢাকা থাকতো, গ্রামে তেমন একটা আসে না। ছোটবেলাতেই ওরা ঢাকা চলে যায়। যোগাযোগ তেমন একটা নাই, আসা-যাওয়া নাই। তাই আমরা খুব বেশি কিছু জানি না। গতকাল (সোমবার) টিভিতে দেখেছি। পরে থানা থেকে আমাকে ফোন দিয়েছিল। আমি যা যা জানি তাদের বলেছি। মনেশ্বর রোডের বাড়িটিতে ছয় মাস বয়সী সন্তানকে নিয়ে বাবা-মায়ের সঙ্গে থাকেন আকায়েদের স্ত্রী জান্নাতুল ফেরদৌস।
তিনি বলেন, আকায়েদরা চার ভাইবোন। সে বিয়ে করছে চাঁদপুরে। বিয়ের পরে আমরা জানতে পেরেছি এ কথা। তার একটি ছেলে আছে। তবে বয়স কতদিন বলতে পারি না। তার বড় বোনের শ্বশুরবাড়িও চাঁদপুরে।
সোহরাব বলেন, আমার চাচা মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। ২০০৯ বা ২০১০ সালের দিকে তারা যুক্তরাষ্ট্রে গেছেন। ২০১১ সালের শেষ দিকে আমি কয়েকদিন দেশে থেকে আসি। তার আগেই আমার চাচা আমেরিকা চলে যান। তিনি সেখানেই মারা গেছেন। আকায়েদ তার বড় সন্তান। সেখানে সে কী কাজ করতো জানি না। তার বাকি তিন ভাইবোন কী করে জানি না। যোগাযোগ তেমন একটা নাই। ওরাও তেমন যোগাযোগ করে না, আমরাও করি না।
আকায়েদ সাত বছর ধরে যুক্তরাষ্ট্রের রয়েছেন। প্রথমে ট্যাক্সিক্যাব চালালেও ২০১৫ সালের পর থেকে তিনি একটি আবাসন কোম্পানিতে বিদ্যুৎ মিস্ত্রির কাজ করতেন বলে যুক্তরাষ্ট্রের পুলিশ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।