৫০০ কোটি টাকার বন্ড ছাড়ছে ফারমার্স ব্যাংক
মোরশেদ মুকুল : ৫০০ কোটি টাকার বন্ড ছাড়ার অনুমতি পেয়েছে ফারমার্স ব্যাংক। মূলধন সংকট কাটাতে এই বন্ড ছাড়ার অনুমতি পেয়েছে নতুন প্রজন্মের ব্যাংকটি। পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) অনুমোদনের পর সোমবার এর অনুমোদন দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। বন্ডটির নাম দেওয়া হয়েছে দি ফারমার্স ব্যাংক প্রসপারেটি বন্ড-২০১৭। এই বন্ড বিক্রি করতে পারলে সংকটে পড়া ব্যাংকটির মূলধন বাড়বে। সেই সাথে ব্যাংকটি সরকারি ব্যাংকের পাশাপাশি অন্য ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে এই বন্ড বিক্রি করতে পারবে।
সূত্র জানায়, রাজনৈতিক বিবেচনায় বর্তমান সরকারের গত মেয়াদে অনুমোদন পাওয়া নতুন নয়টি ব্যাংকের একটি ফারমার্স ব্যাংক। অনুমোদন পাওয়ার আগেই দপ্তর খুলে নিয়োগ দেওয়া শুরু করেছিল ব্যাংকটি। ২০১৩ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে কার্যক্রম শুরুর পর বছর না ঘুরতেই ঋণ অনিয়মে জড়িয়ে পড়ে ব্যাংকটি। তারল্য সংকটে পড়ে নিয়মমতো বাংলাদেশ ব্যাংকে টাকা জমা রাখতে ব্যর্থ হচ্ছে ব্যাংকটি। এ ছাড়া ইতোমধ্যে ব্যাংকটিতে চেক দিয়েও টাকা পাচ্ছেন না গ্রাহকেরা।
ফারমার্স ব্যাংকের চেয়ারম্যান ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহীউদ্দীন খান আলমগীকে ব্যাংক চালাতে ব্যর্থ হওয়ায় গত ২৭ নভেম্বর পদত্যাগ করতে বাধ্য হন। সেই সাথে ব্যাংকটির নিরীক্ষা কমিটির চেয়ারম্যান ও পরিচালক মাহাবুবুল হক চিশতীকেও পদ ছাড়তে হয়।
গত সেপ্টেম্বর শেষে ফারমার্স ব্যাংকের খেলাপি ঋণ বেড়ে দাড়ায় ৩৭৭ কোটি টাকা। অর্থাৎ বিতরণ করা ঋণের ৭ দশমিক ৪৫ শতাংশই খেলাপি। নতুন এ ব্যাংকের মূলধনেও ঘাটতি রয়েছে ৭৫ কোটি টাকা। এসব কারণে ব্যাংকটি তড়িঘড়ি করে বন্ড ছেড়ে অর্থ সংগ্রহের উদ্যোগ নিয়েছে। পর্ষদে পরিবর্তন আসায় বাংলাদেশ ব্যাংকও এতে অনুমোদন দিয়েছে।
এদিকে ব্যবস্থাপনায় ব্যর্থতার জন্য ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) এ কে এম শামীমের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া শুরু করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ জন্য আজ বুধবার অভিযোগের জবাব দিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের স্থায়ী কমিটি তাঁকে ডেকেছে।
এর আগে এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংকের এমডি দেওয়ান মুজিবর রহমানকে অপসারণ করে বাংলাদেশ ব্যাংক। তারও আগে অগ্রণী ব্যাংকের এমডি সৈয়দ আবদুল হামিদ ও বেসিক ব্যাংকের এমডি কাজী ফখরুল ইসলামকে একই প্রক্রিয়ায় অপসারণ করা হয়েছিল।