মিরসরাইয়ের নারী মুক্তিযোদ্ধা আলো রানী ও মধুমিতা
ইলিয়াছ রিপন, মিরসরাই (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি : দুই বোন মধুমিতা বৈদ্য এবং আলো রানী বৈদ্য দুই নম্বর সেক্টরে মুক্তিযুদ্ধের কাজ করেন। চিকিৎসা সেবা দেন বিশ্রামগঞ্জ হাসপাতালে। স্বাধীন দেশেও সুইজারল্যান্ড ও নরওয়ের চিকিৎসকদের সাথে স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে কাজ করেছেন। চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে ১৯৫৬ সালের ১১ই মে জন্মগ্রহণ করেন আলো রানী বৈদ্য। বাবা ক্ষিতিষ চন্দ্র বৈদ্য এবং মা মালতী রানী বৈদ্য। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ শুরুর সময় আবুল কাশেম বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী ছিলেন আলো রানী। আর তাঁর বড় বোন মধুমিতা বৈদ্য পড়তেন নবম শ্রেণিতে। প্রাণপ্রিয় মাতৃভূমি ছেড়ে ভারত যাওয়ার ঝুঁকিপূর্ণ এবং বেদনাহত দিনগুলি সম্পর্কে আলো রানী বৈদ্য বলেন, আমরা যখন দেশ ছেড়ে যাই, তখন আমার বয়স মাত্র ১৫-১৬ বছর। সেসময় নিজ দেশ ছেড়ে যাওয়ার বেদনা আমাকে খুব পীড়া দেয়। আর ভারতে গিয়েও বাবা আমাকে হাসপাতালে দিয়ে আসেন এবং বলেন যে, দেশের জন্যই এখানে এসেছো। দেশের জন্য কাজ করবে। বাবা-মা যে এভাবে দেশের জন্য আমাদের উৎসর্গ করেছিলেন সেটি ছিল অনেক বড় পাওয়া। আমার বাবা তখন সীমান্তের কাছে মুক্তিযোদ্ধাদের দল গঠন করছিলেন। ভারতে যাওয়ার পর হরিনা শিবিরের পাশে মনুবাজারে এক আত্মীয়ের বাড়িতে ছিলাম আমরা। কিছুদিন হরিনা শিবিরে কাজ করি। এরপর বাবা সেখানে গিয়ে আমাদেরকে বিশ্রামগঞ্জ হাসপাতালে কাজ করার জন্য রেখে আসেন। সেখানে ক্যাপ্টেন ডা. সিতারা বেগমের নেতৃত্বে আমরা সেবিকা হিসেবে কাজ করেছি। এভাবে দুই নম্বর সেক্টরের আওতায় আমরা মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করি। এসময় তাঁর কাজ সম্পর্কে তিনি জানান, দেশ স্বাধীন হওয়ার পর বাংলাদেশে সুইজারল্যান্ড ও নরওয়ে থেকে চিকিৎসক দল এসেছিল ১৯৭২ সালে। তখন ওদের সাথে স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে ত্রাণ বিতরণ ও চিকিৎসা সেবার কাজ করেছি আমরা। বর্তমানে বন্দর হাসপাতালে ঊর্ধ্বতন সেবিকা হিসেবে কর্মরত আছেন আলো রানী বৈদ্য। ইতোমধ্যে তিনি বন্দর কর্তৃপক্ষ এবং বাংলাদেশ মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থা সহ বিভিন্ন স্থানে ও পর্যায়ে নারী মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে সংবর্ধিত হয়েছেন। সম্পাদনা : মাহফুজ উদ্দিন খান