প্রযুক্তি বাজিয়ে দেখেই নেব, গিনিপিগ হবনা- মতিয়া চৌধুরী
মতিনুজ্জামান মিটু : কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী বলেছেন, নতুন উদ্ভাবিত প্রযুক্তি বারবার বাজিয়ে দেখেই নেয়া হবে। আমরা গিনিপিগে পরিণত হবনা। গতকাল ( ১৩ ডিসেম্বর) রাজধানীর বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল মিলনায়তনে ‘ ফিড দ্য ফিউচার বাইয়োটেকনোলজি পটেটো পার্টনারশীপ’ প্রকল্পের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট এ অনুষ্ঠান আয়োজন করে।
মতিয়া চৌধুরী বলেন, দেশের মানুষের কল্যাণে পৃথিবীর যে কোনো নতুন আবিস্কার গ্রহনে আমরা উদার। তবে তা যথেষ্ট সাবধানতার সঙ্গে বাইয়ো সেফটি রুলসহ সব ধরনের নিয়ম মেনে বারবার বাজিয়ে দেখেই গ্রহন করা হবে। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ও বাংলাদেশের কৃষককে ব্যবহারের কোনো সুযোগ নেই। আমরা গিনিপিগে পরিণত হবনা। নতুন উদ্ভাবিত যে কোনো শস্যের অনুমোদন দায়িত্ব নিয়েই দেয় সরকার । এজন্য সরকার জবাবদিহি করতে বাধ্য। বাংলাদেশে বায়োটেকনোলোজির যাত্রা খুব মসৃন নয়। লাভে মানুষ লোহা বয়, বিনা লাভে তুলাও বয়না। কৃষক আজ বিটি বেগুন নিয়ে খুশি। পুলিশ দিয়ে কৃষককে চাষ করানো যায়না। সরকারের নিজস্ব জমি নেই। তাই কৃষির মালিক কৃষক। বাংলাদেশের কৃষক ওপেন মাইন্ডেড, লেখাপড়া না জানলেও তাদের বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গি আছে। তারা রক্ষণশীল নয়। বিশ্বের ২৬টি দেশে জিএম ফুড উৎপাদন হচ্ছে। জিএম (জেনেটিক্যালি মোডিফাই) ফুড খেয়ে মারা যায়নি।
তিনি বলেন, আলুতে আমরা অভূতপূর্ব উন্নতি করেছি। আলু উৎপাদনকারি দেশগুলোর মধ্যে আমরা সপ্তম স্থানে রয়েছি। কম হোক আর বেশি হোক আমরা বিশ্বের ২০টি দেশে আলু রপ্তানী করেছি। স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনের পর অতিরিক্ত উৎপাদনের জন্য রপ্তানী করতে হবে। এজন্য রপ্তানীকারকদের সাবধান হতে হবে। রপ্তানীকারকদের উদ্দেশ্যে কৃষি মন্ত্রী বিনয়ের সঙ্গে বলেন, জেনে শুনে কৌশল করে নি¤œ মানের পণ্য রপ্তানী করবেন না। খাদ্যের ব্যাপারে বিশ্বের কোনো দেশে কৌশল চলেনা। সমস্যা হলে সরকার আর লাভের অংশ আপনাদের এই নীতি পরিহার করুন।
মতিয়া চৌধুরী বলেন, এক শ্রেনীর মানুষ আছে যারা জেনেশুনে কিছু না হতেই সব গেল গেল বলে চিৎকার করেন। তারা যার কাছ থেকে টাকা নেয় তাদের পক্ষে সরব হয়। তাদের কেউ গুম হয়। আবার গুমের পর বৈষœবিসহ ধরা পড়ে। বিজ্ঞানের অবদানে এখন বাজারে সারাবছর সব ধরণের সবজি পাওয়া যায়। দেশে এখন কেউ আর না খেয়ে থাকেনা।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে থ্রী আর জিন এবং সিঙ্গেল আর জিন দুটোর গবেষণা এক সঙ্গেই চলবে। আমরা একটা ছেড়ে আরেকটা ধরবনা। আলুর লেট ব্লাস্ট রোগ প্রতিরোধে থ্রী আর জিন গবেষণা ভাল একটা জাত দিতে পারবে। এখন লবন সহিষ্ণু জিএম ধান আবিস্কার এবং উৎপাদন করা দরকার। এজাতের আলুর মধ্যে অন্য আলুর জিন ঢুকিয়েই বিটি আলু তৈরী হবে। এটি অনেকটাই নিরাপদ। আইসিটি ক্ষেত্রে সাফল্যের সঙ্গে সঙ্গে বাংলাদেশ অনু বিজ্ঞান অর্থাৎ আনবিক যুগেও প্রবেশ করেছে।
কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (পিপিসি) মোহাম্মদ নজমুল ইসলাম এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. ভাগ্য রানী বণিক ও বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. মো. আবুল কালাম আযাদ। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন, ইউএসএইড বাংলাদেশের এফটিএফ প্রোগ্রাম লিডার ডেভিড ওয়েস্টারলিংক।
ফিড দ্যা ফিউচার বায়োটেক পটেটো পার্টনারশীপ বিষয়ে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন মিশিগান স্টেট ইউনির্ভাসিটির অধ্যাপক ও ফিড দ্যা ফিউচার বায়োটেকনোলজি পটেটো পার্টনারশীপ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক ড. ডেভিড ডাউচেস। মূল প্রবন্ধের ওপর আলোচনায় অংশ নেন গোপালগঞ্জ বিজ্ঞান প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. মো. নাসির উদ্দিন, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনটিটিউটের সাবেক মহাপরিচালক ড. মো. রফিকুল ইসলা