নিউ ইয়র্কে স্বাস্থ্যবীমা জালিয়াতির অভিযোগে বাংলাদেশি ডাক্তার অভিযুক্ত
বিশ্বজিৎ দত্ত : নিউ ইয়র্কে একজন বাংলাদেশী ডাক্তারসহ ৩৪ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে বড় ধরনের স্বাস্থ্য বীমা জালিয়াতির অভিযোগ আনা হয়েছে। অভিযোগে বলা হয়েছে, সুস্থ মানুষকে রোগী সাজিয়ে চিকিৎসা দেওয়া এবং একাধিক অপ্রয়োজনীয় স্বাস্থ্য পরীক্ষা দেখিয়ে বিল বানিয়ে চক্রটি মেডিকেইড,মেডিকেয়ার এবং অন্য সরকারি স্বাস্থ্য ফান্ড থেকে ৩ বছরে ১৪৬ মিলিয়ন ডলার হাতিয়ে নিয়েছে। সূত্র : এবিসি নিউজ
এবিসি নিউজে বলা হয়, প্রতারকদের প্রধান হিসেবে হামিদ আলম নামের একজন বাংলাদেশী চিকিৎসকের নাম রয়েছে। ইতিমধ্যেই তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। হামিদ আলম একজন রেডিওলজিস্ট । লং আইল্যান্ডে তার মালিকানাধীন একটি মেডিকেল চেকআপ, এক্স-রে, এমআরআই সেন্টার আছে। তার বাড়ি চট্টগ্রামে, তিনি সিলেট মেডিকেল কলেজ থেকে ডাক্তারি পাশ করেছেন। নিউইয়র্কে মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন-বিএমএ’র সঙ্গেও তিনি সম্পৃক্ত ছিলেন।
এবিসি নিউজকে নিউ ইয়র্ক রাজ্যের মেডিকেইড-এর মহাপরিদর্শক ডেসিন রোজেন এবং নিউ ইয়র্ক স্টেট ফাইন্যান্সিয়াল ডিস্ট্রিক্টের সুপারেনটেনডেন্ট মারিয়া টি ভুলো জানিয়েছেন, মোট ২০ জন নাগরিক ও ১৪টি মেডিকেল প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অভিযোগ এসেছে। এই ২০ জনের মধ্যে ৪ জন চিকিৎসক আছেন।
তিনি বলেন, গত ৩ বছরে এই ৩৪ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান ১৪৬ মিলিয়ন ডলারের স্বাস্থ্য বীমা জালিয়াতি করেছে। যাদের কেউ রোগী হয়েছেন, কেউ অফিস সহকর্মী, কেউ ভুয়া বিল বানিয়েছেন আবার কেউ অর্থ সংগ্রহ করে পাচার করেছেন। ব্রুকলিনের ডিস্ট্রিক্ট অফিস এই প্রতারণার অভিনব বিষয়টির বর্ণনা দিতে গিয়ে বলেছে, রাষ্ট্রের ভান্ডার থেকে জনগণের ট্যাক্সের অর্থ হাতিয়ে নিতে প্রতারক চক্র যে পন্থা নিয়েছে, সেটি মারাত্মক অপরাধ।
মেডিকেইড, মেডিকেয়ার এবং অন্যান্য সরকারি অর্থায়নের যেসব স্বাস্থ্য বীমা আছে, সেগুলোর সুবিধা নিতে অভিযুক্তরা ব্রুকলিনের অনুন্নত এলাকার একটি স্যুপ রেস্টুরেন্ট এবং বুশউইক এলাকার একটি চাকরি কেন্দ্র ব্যবহার করেছে। কৌশল অবলম্বন করে একেকজনকে ৩০/৪০ ডলার দিয়ে অপ্রয়োজনীয় টেস্ট এবং মেডিকেল চেকআপের জন্য ব্যবহার করেছে।
এই মামলার কৌঁসুলি জানিয়েছেন, ‘খবর পেয়ে সাদা পোশাকের একজন অফিসারকে আমরা নিয়োগ করি তদন্ত করতে। বুঝতে না পেরে তাকেও ৩০ ডলার দিয়ে ওই ক্লিনিকে চেকআপ করার জন্য পাঠায় প্রতারক দল। ওই অফিসার ঘন্টাখানেক সেই মেডিকেল চেকআপ কেন্দ্রে ছিলেন কিন্তু সেখানে কোনো ডাক্তার ছিলেন না। পরে দেখা গেছে ওই অফিসারের নামে আলাদা আলাদা ১৮টি টেস্ট দেখানো হয়েছে, যেটা করতে কমপক্ষে ১২ ঘণ্টা সময় লাগার কথা। এভাবে তারা আরও অন্তত ২০ জনকে ব্যবহার করেছে এবং গত ৩ বছর ধরে এই জালিয়াতি করছে। সম্পাদনা : গিয়াস উদ্দিন আহমেদ