১ লাখ নতুন রোহিঙ্গাকে ত্রাণের ই-ভাউচার দেবে ডব্লিউএফপি
মোহাম্মদ আলী বোখারী, টরন্টো থেকে
কক্সবাজারের উখিয়ায় রোহিঙ্গারা ত্রাণের সামগ্রী খোলা বাজারে দেদারছে বিক্রি করছে, গত ১১ ডিসেম্বর এমন সংবাদটি ছেপেছে টেকনাফের অনলাইন ‘নাফ জার্নাল’। শ. ম. গফুরের ‘রোহিঙ্গাদের ত্রাণ বিক্রি, স্থানীয়রা সংকটে’ শিরোনামের ওই সচিত্র সংবাদে বলা হয়েছে যে, উখিয়া ও টেকনাফের বাজার ত্রাণের চাল, ডাল, তেল, চিনি থেকে শুরু করে অপরাপর পণ্যে সয়লাব। ফলে স্থানীয় কৃষকরা নিজেদের উৎপাদিত ধানের ন্যায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত, সেটাই হতাশার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এতে বাজারে ডব্লিউএফপির প্রতি কেজি চাল ২০ টাকা, তিন কেজি ডাল ৩০ টাকা এবং ইউএনএইচসিআর লোগো সংবলিত উদ্বাস্তু সংস্থার শীতের কম্বল ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এই প্রতিনিধি পত্রিকাটির প্রধান সম্পাদক মোহাম্মদ সেলিম ও সম্পাদক নুরতাজুল মোস্তফা শাহীন শাহের সঙ্গে টেলিফোনে সরাসরি কথা বললে খবরের সত্যতা পাওয়া যায়।
পাশাপাশি রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ‘অতিরিক্ত’ ত্রাণ বিতরণের কারণে তা মজুদ করা হচ্ছে বিধায় ‘অপচয়’ রোধে খাদ্য কর্মসূচি এক সপ্তাহের জন্য স্থগিত ঘোষণা করেছে স্থানীয় প্রশাসন। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ আশরাফ হোসেন স্বাক্ষরিত এক পরিপত্রে ১১-১৭ ডিসেম্বর সংশ্লিষ্ট সকল বেসরকারি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনকেও তা অনুসরণের অনুরোধ জানান হয়েছে। ওই পরিপত্রে বলা হয়েছে যে, ‘বলপূর্বক বাস্তুচ্যুত মিয়ানমারের নাগরিকদের মাঝে প্রায় বেশিরভাগ এনজিও ত্রাণ হিসেবে খাদ্য বিতরণ করছে। ফলে প্রয়োজনের তুলনায় অধিক পরিমাণ খাদ্য সামগ্রী এবং নন-ফুড আইটেম রোহিঙ্গাদের দ্বারা সংরক্ষিত হচ্ছে ও অপচয় হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিচ্ছে’।
এতে এই প্রতিনিধি সরাসরি ঢাকায় উদ্বাস্তু সংস্থা ‘ইউএনএইচসিআর’ ও বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি বা ‘ডব্লিউএফপি’র যথাক্রমে সিনিয়র তথ্য কর্মকর্তা জোসেফ ত্রিপুরা এবং জনসংযোগ কর্মকর্তা মাহেরিন আহমেদের সঙ্গে টেলিফোন ও ই-মেইলে যোগাযোগ করেন। তাতে ডব্লিউএফপির পক্ষে মাহেরিন আহমেদ জানান, শরণার্থীরা ত্রাণ সামগ্রী খোলা বাজারে বিক্রি করবে ‘সেটি আমাদের ইচ্ছে নয়। তথাপি খাদ্য সামগ্রী যারা পায়, তাদের কর্র্তৃত্বটাই হয় মুখ্য, অর্থাৎ তা দিয়ে কী করবে সেটি তাদের ইচ্ছের উপর বর্তায়। এমন পরিস্থিতিতে যেখানে শরণার্থীরা সব কিছু হারিয়ে মৌলিক চাহিদা পূরণের প্রচেষ্টায় সচেষ্ট, সেক্ষেত্রে রেশনের সামগ্রী বিক্রি করে অত্যাবশ্যকীয় জিনিষ, ওষুধ ও আশ্রয়ের সামগ্রীটি কেনাটাই স্বাভাবিক’। তাই এ সমস্যা থেকে উত্তরণে মাহেরিন আহমেদ জানান, ‘চাল, ডাল ও তেলের মতো সাধারণ খাদ্য বিতরণ কর্মসূচিটি ই-ভাউচারে উত্তোরিত হচ্ছে। নতুন রোহিঙ্গা স্রোতের আগে ২০১৪ সাল থেকে তেমন ই-ভাউচার কর্মসূচিতে ৩৪ হাজার রোহিঙ্গা আনুষ্ঠানিকভাবে নিবন্ধিত রয়েছেন, যারা সেগুলো দিয়ে ডব্লিউএফপির দোকান থেকে খাদ্যসামগ্রী কিনছেন। এ বছর শেষে মিয়ানমার থেকে আসা ১ লাখ রোহিঙ্গাকে তেমন খাদ্য কর্মসূচিতে ই-ভাউচারের আওতাধীনে আনা হবে। ২০১৮ সালে সেই সংখ্যা আরো বৃদ্ধি পাবে এবং নিবন্ধিত পরিবারগুলো ই-ভাউচারের ক্ষেত্রে ডব্লিউএফপির সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ দোকান থেকে ১৯ ধরনের পণ্য সামগ্রী কিনতে পারবেন। তাতে বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে প্রবর্তিত ই-ভাউচারের মাধ্যমে প্রকৃত সুবিধাভোগীরা তাদের পছন্দের পণ্যটি কিনতে পারবেন’।
ই-মেইল : নঁশযধৎর.ঃড়ৎড়হঃড়@মসধরষ.পড়স