সমালোচনার মুখে সৌদি বাদশাহ ও ক্রাউন প্রিন্স
ওমর শাহ : তুরস্কের ইস্তাম্বুল শহরে গত বুধবার অনুষ্ঠিত হয়েছে ওআইসি’র জরুরি শীর্ষ সম্মেলন। কিন্তু এতে যোগ দেননি সৌদি আরবের বাদশাহ সালমান বিন আবদুল আজিজ ও ক্রাউন প্রিন্স মুহাম্মাদ বিন সালমান। ফলে মুসলিম বিশ্বের তোপের মুখে পড়েছে সৌদি আরব। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে এ নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা হচ্ছে। ইস্তাম্বুলে অনুষ্ঠিত এ জরুরি সম্মেলনে সৌদি আরব পররাষ্ট্র মন্ত্রীকেও পাঠায়নি। মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তাকে পাঠিয়েই দায় সেরেছে দেশটি। অথচ সৌদি আরবেই ওআইসি’র সদর দপ্তর। এছাড়া মিসরসহ অন্য আরো কয়েকটি আরব দেশ তাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে পাঠিয়েছে।
বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ মূলধারার গণমাধ্যমে নানা সন্দেহে ছড়িয়ে পড়েছে। অনেকে বলছেন, সৌদি আরবের সঙ্গে ইসরায়েলের সাম্প্রতিক নানা যোগাযোগের পরই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বায়তুল মুকাদ্দাসকে ইসরায়েলের রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতি দিতে উৎসাহী হয়ে ওঠেন। সেই কারণেই সম্ভবত সৌদি রাজা কিংবা যুবরাজ এ সম্মেলনে যাননি। অনেকে বলেছেন, তোপের মুখে পড়ার আশংকায় সম্মেলনে অংশ নেননি সৌদি রাজা কিংবা যুবরাজ। আবার অনেকে বলেছেন, সৌদি আরবের শীর্ষ নেতৃত্ব এ সম্মেলনে অংশ না নিয়ে প্রমাণ করেছেন তারা ফিলিস্তিনের জনগণের পক্ষে নন, বরং ইহুদিবাদী ইসরায়েল ও আমেরিকা স্বার্থের পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন।
১৯৬৯ সালে পবিত্র আল-আকসা মসজিদে ইসরায়েলিরা আগুন দিলে মরক্কোর রাজধানী রাবাতে মুসলিম দেশগুলোর অংশগ্রহণে একটি সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় এবং সেখানেই ওআইসি গঠিত হয়। এটি এখন জাতিসংঘের পরেই সবচেয়ে বড় আন্তর্জাতিক সংস্থা। তবে ৪৮ বছরের ইতিহাসে এ সংস্থা খুব বড় কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি বরং দিন দিন এর কার্যকারিতা হারিয়েছে। বেশিরভাগ সময় এ সংস্থা নিন্দা প্রকাশ ও বিবৃতি দেওয়ার মাঝেই এর তৎপরতা সীমাবদ্ধ রেখেছে। তবে এবারের সম্মেলনে যে ভাষায় বিবৃতি প্রকাশ করা হয়েছে, তা কিছুটা আশা জাগানোর মতো বলে মনে করছেন পর্যবেক্ষকরা।
এবারের জরুরি বৈঠক থেকে এরই মধ্যে বেশ কিছু কঠোর সিদ্ধান্তের কথা জানা গেছে। সম্মেলনে মুসলিম বিশ্বের নেতারা ট্রাম্পের ঘোষণাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়েছেন এবং জেরুজালেমকে ফিলিস্তিনের রাজধানী ঘোষণা করেছেন। সেখানে আমেরিকার প্রতি অর্থনৈতিক অবরোধ আরোপেরও আবেদন উঠেছে। এমনকি এ বৈঠক থেকে ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস যুক্তরাষ্ট্রকে মধ্যস্থতাকারী দেশ হিসেবে মানবে না বলেও ঘোষণা দিয়েছেন। জরুরি এ সম্মেলনে সৌদি ও মিসরের যোগ না দেওয়া স্বভাবতই দেশগুলোর ব্যাপারে ভিন্ন কিছুর ইঙ্গিত, যা মুসলিম বিশ্বের কাছে কোনো সহনীয় খবর নয়। সূত্র : আল আরাবিয়া, সম্পাদনা : গিয়াস উদ্দিন আহমেদ