যোগ-বিয়োগে রোহিঙ্গা ইস্যু : জিএম কাদের
রোহিঙ্গাদের ওপর অমানবিক নির্যাতন ও তাদের দেশত্যাগের বিষয়টি বিশ্বের সর্বত্রই নিন্দনীয় হয়েছে। কিন্তু মিয়ানমার সেনাবাহিনী যে ঘটনাটি ঘটাচ্ছে, তাদের সঙ্গে সহাবস্থানে এখন সু চি। আবার সেনাবাহিনীকে প্রকাশ্যে সমর্থন জানাচ্ছে মিয়ানমারে অন্যসব জনগোষ্ঠীও। রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে তারা বিক্ষোভও করছে। অবস্থানের ক্ষেত্রে তারা ঐক্যবদ্ধ। তাদের এই অবস্থান (রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে) খারাপ বা ভালো সেটা পরে, তাদের অবস্থান নিশ্চয়ই খারাপ। কিন্তু দেখা যাচ্ছে মিয়ানমারের জনগণ, সেনাবাহিনী এবং অং সান সুচিও এ বিষয়ে একমত। এখানে তাদের কোনো দ্বিমত নেই। রোহিঙ্গা ইস্যুটি সমাধানের ক্ষেত্রে এখনো কোনো ফলপ্রসূ কিছু হয়নি। ফলে কার্যকর কিছু হচ্ছে না বলা যায়। কিন্তু এখানে সরকার ব্যর্থ হচ্ছে বা হবে তা ভবিষ্যৎ দেখে বলতে হবে। সরকার এখনো বিভিন্ন উদ্যোগ নিচ্ছে। সমঝোতা স্মারকে সই করেছে। বিভিন্ন ফোরামে সংকট নিরসন নিয়ে কথা বলছে। বিশ্বজনমতকে পক্ষে নেওয়ার চেষ্টা করছে। এখনো পর্যন্ত চেষ্টার কার্যকর ফল হয়তো পাওয়া যায়নি। তবে ভবিষ্যতে যদি আমরা তা সম্পূর্ণভাবে করতে না পারি তাহলে তখন হয়তো ব্যর্থতার একটা প্রশ্ন আসতে পারে।
বিশ্বজনমত সঙ্গে নিয়ে মিয়ানমারের ওপর চাপ সৃষ্টি করাই হচ্ছে সকলের মত। এর বাইরে সশস্ত্র শক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে সমাধান খোঁজা মোটেও ভালো সমাধান নয় বলে আমার মনে হয়। মিয়ানমারের ওপর চাপ সৃষ্টির জন্য হয়তো অনেক সময় অনেক রকমের পরিবেশ সৃষ্টি হতে পারে। কিন্তু সত্যিকার অর্থেই আলাপ-আলোচনা ও বিশ্বজনমতের চাপের কারণে কিছু হলে সেটাই ভালো। এবং শান্তিপূর্ণ সমাধানই আমাদের সবার কাম্য।
মিয়ানমার যখন সারাবিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন ছিল তখন থেকেই তাদের পাশে চীন। ফলে সামগ্রিকভাবে চীনের সঙ্গে মিয়ানমারের একটা সহানুভূতিশীল বা বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আছে। চীনের বিনিয়োগ যে সমস্ত জায়গা রয়েছে, সেখানে তারা বাণিজ্যিক বা অর্থনৈতিকভাবে লাভজনক হওয়ার সুযোগ রয়েছে। এসব ক্ষেত্র বিবেচনায় চীনকে আমরা যথেষ্ট পরিমাণ চাপ সৃষ্টি করতে পারিনি যে, তারা মিয়ানমারের পাশ থেকে সরে এসে আমাদের পাশে দাঁড়াবে।
পরিচিতি : কো- চেয়ারম্যান, জাতীয় পার্টি
সম্পাদনা : আশিক রহমান