নব্য জেএমবির প্রতিষ্ঠাতা সদস্য সামাদসহ ৩ জঙ্গি গ্রেফতার
মাসুদ আলম ও মামুন আহম্মেদ : রাজধানীর মহাখালী এলাকা থেকে নব্য জেএমবি’র অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা এক সদস্যসহ ৩ জনকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম এন্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট। গ্রেফতারকৃতরা হলো- আব্দুস সামাদ ওরফে আরিফ মামু ওরফে আশিক এবং তার দুই সহযোগী জিয়াদুল ইসলাম ও মোঃ আজিজুল ইসলাম ওরফে মেহেদী হাসান ওরফে শিশির। গতকাল ঢাকা মেট্রোপটিলটন পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের ডিআইজি মনিরুল ইসলাম। এদিকে অ্যান্ট্রি টেরোরিজম ইউনিটের প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি শফিকুল ইসলাম বলেন, গ্রেফতারকৃত তিন জঙ্গি তামিম চৌধুরীর ডান হাত হিসাবে পরিচিত । জিজ্ঞাসাবাদে বিস্তারিত জানা যাবে। এছাড়া আসামিদের ১০ দিনের রিমা- চেয়ে আদালতে পাঠালে আদালত তিনজনের ৫ দিন করে রিমা- মঞ্জুর করেন।
তিনি বলেন, আসামি আব্দুস সামাদের বাড়ি দিনাজপুর। সে ২০০২ সালে দাওয়া হাদিস এবং ২০১১ সালে ফাজিল পর্যন্ত পড়াশুনা করেছে। জিয়াদুল এবং আজিজুল ইসলামের বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জ। গ্রেফতারকৃত জিয়াদুল ৪র্থ শ্রেণী এবং আজিজুল ২০১৩ সালে দাখিল মাদ্রাসায় নবম শ্রেণী পর্যন্ত পড়াশুনা করেছে। আব্দুস সামাদ ২০১০ সালে প্রথম জেএমবিতে যোগ দেয়। ২০১৪ সালে তামিম চৌধুরীর সঙ্গে মিলিত হয়ে ‘জুনদ আল তাওহীদ আল খিলাফাহ’ নামক একটি দল গঠন করে এবং তাতে তামিম চৌধুরী প্রধান এবং আব্দুস সামাদ সেকেন্ড ইন কমান্ড হিসেবে নিযুক্ত হয়।
তিনি আরো জানান, গ্রেফতারকৃত আব্দুস সামাদ দলের জন্য নীতিগত সিদ্ধান্ত প্রদান, সদস্য সংগ্রহ, অর্থ সংগ্রহ, বোমা তৈরিসহ নানাবিধ কাজে পারদর্শী ছিল। এছাড়াও অস্ত্র চালানো এবং গ্রেনেড বিস্ফোরণের বিষয়ে আব্দুস সামাদ নবীন সদস্যদের প্রশিক্ষণ প্রদান করতো। বিভিন্ন সময় নব্য জেএমবির উচ্চপর্যায়ের নেতারা গ্রেফতার এবং নিহত হওয়ার পর তার নেতৃত্বে নব্য জেএমবির কার্যক্রমে নতুন মাত্রা যোগ হয়। কল্যাণপুর ও মিরপুর এলাকায় তামিম চৌধুরীসহ আসামি আব্দুস সামাদ অবস্থান করে প্রায় ডজনখানেক প্রশিক্ষণ ক্যাম্পে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করে। হাতকাটা মাহফুজ গ্রেফতার হওয়ার পর সে দীর্ঘদিন পলাতক থেকে দলের যাবতীয় কার্যক্রম পরিচালনা করতো। গ্রেফতারকৃত জিয়াদুল আব্দুস সামাদের শ্বশুর। এছাড়াও জিয়াদুল চাঁপাইনবাবগঞ্জ এলাকার সীমান্ত দিয়ে নব্য জেএমবির অস্ত্র, বিস্ফোরক, ডেটোনেটর গ্রহণ, সংরক্ষণ এবং বিতরণের দায়িত্ব পালন করতো। গত ২ বছর যাবত আসামি শিশির পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে জঙ্গি কার্যক্রমে যোগ দিয়ে জিহাদি প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছে। নারায়ণগঞ্জে সিটিটিসি’র অভিযানে নিহত হয় তামিম।
মনিরুল ইসলাম বলেন, সামাদ ওরফে মামু মূলত তামিমকে শীর্ষ জঙ্গি নেতাদের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার সেতু বা সংযোজক হিসেবে কাজ করেছে। তবে গুলশানের হোলি আর্টিজান হামলার আগে তাকে আবার উত্তরবঙ্গে সদস্য সংগ্রহের কাজে নিয়োজিত করা হয়। এছাড়া গ্রেফতারকৃতদের কাছ থেকে ২০০টি ডেটোনেটর, একটি নাইন এমএম পিস্তুল ও ৫ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়। সম্পাদনা : গিয়াস উদ্দিন আহমেদ