কওমি তরুণদের ভাবনায় বিজয় দিবস
মুহাম্মদ আতাউর রহমান মারুফ
সংঘাতময় এই পৃথিবী। সবাই এখানে লড়াকু। লড়াই চলছে নিরবধি। কেউ লড়ে আদর্শের জন্য। কেউ লড়ে বাঁচার জন্য। কেউ প্রতিষ্ঠিত হওয়ার জন্য। আবার কেউ বা লড়ে ভিনদেশী হিং¯্র শকুনের লোভাতুর দৃষ্টি থেকে মুক্ত,স্বাধীন একটি ভূখ-ের জন্যে। এ লড়ার দীর্ঘতা কতকাল ব্যাপ্তি হবে তার হিসেব কষতে কোন স্বাধীনকামীকেই আজ অবধি দেখা যায়নি। কেননা এ ভূখ- যে তার মা! তার হৃদয়ের সবআকুলতার কেন্দ্রস্থল হওয়া এক পূণ্যময় মাটি ।
প্রেমময় মা ! আর মাটি ! এই দুটি শব্দের তুলনা পৃথিবীর কোন কিছুর সাথেই হয় নয়। শত কবির কবিতা আর সুরকারের সুর এ মাটির গুণকীর্তন করতে করতে ইতি টেনেছে। কিন্তু এ যে শেষ হওয়ার নয়। মক্কার কাফেরদের নির্মম অত্যাচারে অতিষ্ট হয়ে রাসূল সা. যেদিন মাতৃভূমি মক্কা ছেড়ে মদীনায় হিজরত করেছিলেন, সেদিন এ মাতৃভূমির টানে রাসুলের গ-াদেশ বেয়ে তপ্ত অশ্রু ঝরেছিল। আর করুণ স^রে রাসুল সা. বলছিলেন হে বায়তুল্লাহর মাটি ! আমায় যদি কাফেররা অত্যাচার না করতো তবে কখনো তোমায় ছেড়ে যেতাম না। এ মাটির টানে, এ মাটির মানুষের টানে পূর্ণশক্তি অর্জন করে আট বছর পর পুনরায় ফিরেছিলেন রাসুল সা. মক্কার পানে । তাঁদের একনিষ্ঠ ত্যাগ,আতœ বিসর্জন আর শাহাদাতের ভিত্তিতে নির্মিত হয়েছে আমাদের অস্তিত্বের ফাউন্ডেশন। স্বাভাবিক আমরা তাদের কাছে চির ঋণী। স্বাধীনতা যুদ্ধে কারো কারো ভিন্ন দৃষ্টির কারণে বিপুল সংখ্যক উলামায়ে কেরাম সশস্ত্র যুদ্ধে অংশগ্রহণ করার পরও আলেমদের গায়ে স্বাধীনতা বিরোধী তকমা লেগে যায়। এ তকমা মুছাতে অকাট্য প্রমাণের ভিত্তিতে বহু চেষ্টা ফিকির করা হলেও তাদের দৃষ্টিকোণ থেকে তা যেন মুছবার নয়। তবে যে যাই বলুক আজকের সচেতন তরুণ কওমী পড়ুয়ারা সে সব কথার দিকে মোটেও কান দিতে চান না। তথাকথিত ঐতিহাসিকদের দ্বারা মনগড়া ইতিহাস রচিত হলেও আজকের তরুণ ছাত্র সমাজ ভাল করেই জানেন স্বাধীনতা সংগ্রামে তাঁদের আকাবির ও আসলাফের অসামান্য অবদানের কথা।
তাই আকাবিরদের অনুসৃত পথে চলে গড়তে চান তারা সুন্দর,সমৃদ্ধ ও উন্নয়নশীল দেশ । তথ্য সন্ত্রাসী করে যতই তাঁদের স্বাধীনতা বিরোধী শক্তি বলে অপবাদ দেওয়া হোক না কেন দেশ, মাটি ও জাতির কল্যাণে তাঁরা বরাবরের ন্যায় ঝাঁপিয়ে পড়তে সর্বদা বদ্ধপরিকর। তারা চান সবার অংশগ্রহণে সুন্দর, সুশৃঙ্খল ও ক্ষুধা দারিদ্র মুক্ত একটি আধুনিক দেশ গড়তে। সুতরাং আজকের কওমী পড়ুয়া আগামী প্রজন্মের ভবিষ্যত তরুণ আলেম বা ছাত্র সমাজের সম্মিলিত ভাবনার মূল নির্যাস এটাই যে, দেশের সংরক্ষণ এবং দেশের বিজয়ে পূর্বে যেমন আমাদের আকাবিরগণই অগ্রগণ্য ছিলেন। আমরাও তেমন আগামীতে দেশের সংরক্ষণে, দেশের নিরাপত্তায় হতে চাই সর্বাগ্রে সবার উপরে। সুতরাং বন্ধুরা ! চলো মহান বিজয় দিবসে এটাই হোক আমাদের দীপ্ত অঙ্গীকার। সম্পাদনা : জাকারিয়া হারুন