বারি উদ্ভাবিত আলুর ৪টি জাত অবমুক্ত
মতিনুজ্জামান মিটু : চলতি বছরে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট বারি উদ্ভাবিত উচ্চ ফলনশীল আলুর নতুন চারটি জাত অবমুক্ত হয়েছে। চলতি ২০১৭ সালে অবমুক্ত হওয়া এ জাতগুলো হচ্ছেÑ বারি আলু ৭৪, ৭৫, ৭৬ ও ৭৭। এই নিয়ে বারি উদ্ভাবিত উচ্চ ফলনশীল ৭৭টি জাত অবমুক্ত হলো। চলতি বছরের অবমুক্ত হওয়া বারি আলু ৭৪, ৭৫ ও ৭৬ এর অরিজিন নেদারল্যান্ডস এবং বারি আলু ৭৭ এসেছে ডেনমার্ক থেকে। ১৯৯০ সালে ৩টি নতুন জাতের অবমুক্তির মধ্য দিয়ে এদেশে কৃষক পর্যায়ে বারি উদ্ভাবিত উচ্চ ফলনশীল আলু চাষ শুরু হয়। হলুদ রংয়ের বারি আলু ৭৪-এর হেক্টরপ্রতি ফলন হবে ৩৭ থেকে ৬৭ মেট্রিক টন, লাল রংয়ের ৭৫-এর ফলন হবে ২৩ থেকে ৫৩ মেট্রিক টন, হলুদ রংয়ের ৭৬-এর ফলন ২৭ থেকে ৪৪ মেট্রিক টন ও লাল রংয়ের বারি আলু ৭৭-এর ফলন ২৭ থেকে ৪২ মেট্রিক টন।
জাতীয় বীজ বোর্ড কর্তৃক জাতের নামকরণের সুনির্দিষ্ট নীতিমালা তৈরির আগেই আলুর ১০টি বিদেশি জাত চাষের জন্য অনুমোদন দেয়া হয়েছিল। পরে নিজস্ব শংকরায়নের মাধ্যমে উদ্ভাবিত ১১টি জাত, সিআইপি জার্মপ্লাজম থেকে ৬টি জাত, বিদেশি জাত মূল্যায়নের মাধ্যমে ৪৮টি জাত এবং ২টি টিপিএস জাতসহ মোট ৭৭টি আলুর জাত কন্দাল ফসল গবেষণা কেন্দ্রের অনুমোদন নিয়ে এ পর্যন্ত বিএআরআই হতে অবমুক্ত করা হয়। বারি উদ্ভাবিত উচ্চ ফলনশীল আলুর জাত কৃষক পর্যায়ে চাষাবাদের কারণে বিগত কয়েক বছরে বাংলাদেশ আলু চাষে স্বয়ংম্পূর্ণতা অর্জন করেছে। বর্তমানে দেশের চাহিদা পূরণ করেও আলু বিদেশে রপ্তানি হচ্ছে। বাংলাদেশে ২০১৫-১৬ অর্থ বছরে ৪ দশমিক ৯৬৩ লাখ হেক্টর জমিতে ১০৩ দশমিক ০৪০ লাখ মেট্রিক টন আলু উৎপাদিত হয়। চাষাবাদের দিক থেকে বাংলাদেশে ধান ও গমের পরেই আলুর অবস্থান। বাংলাদেশ এখন পৃথিবীর সপ্তম আলু উৎপাদনকারী দেশ। আর এশিয়ার মধ্যে তৃতীয়।
বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বারি) সফলতার সঙ্গে উচ্চ ফলনশীল জাতসহ অন্যান্য কৃষি প্রযুক্তি উদ্ভাবন করে আসছে। দেশের জলবায়ু ও কৃষকের চাহিদা অনুযায়ী বিএআরআই এ যাবৎ বিভিন্ন ফসলের ৫২৭টি উচ্চ ফলনশীল জাত এবং ৪৪২টি ফসল উৎপাদনের প্রযুক্তিসহ মোট ৯৬৯টি প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেছে। এছাড়া ডাল, তৈলবীজ, সবজি, ফল ইত্যাদির ১০ হাজারের বেশি কৌলি সম্পদ (জার্মপ্লাজম) জিন ব্যাংকের মাধ্যমে সংরক্ষণ করছে বারি। সম্পাদনা : হাসিবুল ফারুক চৌধুরী