প্রশ্নপত্র ফাঁস নিয়ে দুদক ও শিক্ষামন্ত্রীর ভিন্নমত
তরিকুল ইসলাম সুমন : পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের জন্য শিক্ষাবোর্ড, সরকারি বিজি প্রেস, ট্রেজারি এবং পরীক্ষা কেন্দ্রের অসাধু কর্মকর্তাদেরই দায়ী করছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কমিশনার ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ড. নাসির উদ্দিন আহমেদ। অন্যদিকে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ প্রশ্নপত্র ফাঁসের জন্য অসাধু শিক্ষকদের দায়ী করেছেন। গতকাল সকালে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে দুদকের মতবিনিময় সভায় দুজন ভিন্নমত ব্যক্ত করেন। সভায় মন্ত্রী, সচিব, ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন বিভিন্ন সংস্থার প্রধানরা উপস্থিত ছিলেন।
দুদক কমিশনার ড. নাছির উদ্দিন বলেন, শিক্ষামন্ত্রীকে আমি অনুরোধ করি ‘আমি এবং আমার বিদ্যালয় দুর্নীতি মুক্ত’ কথাটা প্রতিটি বিদ্যালয় ও কলেজে প্রতিষ্ঠান প্রধান স্বাক্ষর করে টাঙ্গিয়ে রাখতে ব্যবস্থা করুন। আমরা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ করে দেখেছি শিক্ষকদের সঙ্গে সরকারি লোকদের মিটিং হচ্ছে না। এ বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়া দরকার। অপরদিকে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ সাংবাদিকদের বলেন, প্রশ্নপত্র ফাঁসের জন্য অসাধু শিক্ষকরাই দায়ী। কারণ বর্তমানে শিক্ষা ব্যবস্থার মূল সমস্যা হচ্ছে ক্লাসে না পড়িয়ে শিক্ষকরা বাড়িতে বা কোচিং সেন্টারে পড়াচ্ছেন।
বৈঠকে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আমরা শিক্ষা আইনটি চূড়ান্ত করেছি। আইনটি হলে কোচিং সেন্টারগুলো বন্ধ করতে পারব।
দুদকের পক্ষ থেকে করা সুপারিশগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলোÑ প্রশ্নপত্র প্রণয়ন কমিটিতে মেধাবী, সৎ ও মূল্যবোধসম্পন্ন শিক্ষক নিয়োগ, প্রশ্নপত্র প্রণয়ন কমিটিতে একজন ইংরেজি অনুবাদক নিয়োগ, প্রশ্নপত্র প্রণয়ন ও বিতরণের দায়িত্বে যারা থাকবেন তাদের কাছ থেকে পরীক্ষায় নিজের সন্তান বা সংশ্লিষ্ট কেউ অংশ নেবে না মর্মে লিখিত নেওয়া, প্রশ্নপত্র প্রণয়ন সংক্রান্ত কাজে নিয়োজিত মডারেটরসহ সংশ্লিষ্টদের কঠোর নজরদারিতে রাখা, প্রশ্নপত্র বিশেষ লগ সম্বলিত বাক্সের মাধ্যমে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও শিক্ষা কর্মকর্তার মাধ্যমে প্রতিটি ট্রেজারিতে পাঠাতে হবে এবং ওই লগ জেলা প্রশাসকের উপস্থিতিতে খুলতে হবে। একই প্রক্রিয়া অনুসরণ করে তা উপজেলা পর্যায়ে পাঠানো, পরীক্ষা কেন্দ্রের সংখ্যা কমিয়ে আনা, একটি উপজেলায় দুইটির বেশি কেন্দ্র না রাখা, পরীক্ষা কেন্দ্র উপজেলা শহরে রাখা, প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগে যাদের গ্রেফতার করা হচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে পাবলিক পরীক্ষা আইনে মামলাসহ মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন অথবা তথ্য প্রযুক্তি আইনে মামলা করা, এসব অপরাধের সঙ্গে জড়িত সরকারি কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অপরাধজনক বিশ্বাস ভঙ্গের অভিযোগে দুদক আইনে মামলা করারও সুযোগ রয়েছে, এছাড়া শিক্ষা সংক্রান্ত সব কাজ অনলাইন সার্ভিসের আওতায় আনা।