বাংলাদেশ বিমানের জন্য পোপের প্রশংসা ও প্রার্থনা
বিশ্বজিৎ দত্ত : বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের সেবার প্রশংসা করে বিমানের জন্য প্রার্থনা করেছেন খ্রিস্টান ধর্মগুরু পোপ ফ্রান্সিস। তিনি বাংলাদেশ বিমানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এম মোসাদ্দেক আহমেদের কাছে এ বিষয়ে একটি প্রশংসাপত্রও দিয়েছেন। পোপ রোমে ফেরার পথে বিমানের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের সঙ্গে উরোজাহাজেই একটি সৌজন্য বৈঠক করেন। সেখানে তিনি বলেন, বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। যদি সময় হয় তবে তিনি আবারো বাংলাদেশ বিমানে ভ্রমণ করবেন। বিমানের মহাব্যবস্থাপক শাকিল মেরাজ জানান, পোপের বাংলাদেশ সফর বিমানের জন্য একটি বিশেষ ঘটনা। কারণ অন্য কোনো দেশের রাষ্ট্রপ্রধান ও ধর্মগুরুকে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ বিমান বহন করেছে। অন্যদেশ থেকে কেবল নিয়ে আসাই নয়, সফর শেষে তাকে তার নিজ দেশে পৌঁছেও দিয়েছে। সম্পূর্ণ ভ্রমণটি হয়েছে যথাসময়ে ও নিরাপদে। এমনকি বাংলাদেশ বিমানে পোপের সংবাদ সম্মেলনের জন্য বিশেষ সাউন্ড সিস্টেম যুক্ত করা হয়। ফেরার পথে তিনি বিমানে সংবাদ সম্মেলন করেন। সেখানেই তিনি আলোচিত ব্যাখ্যাটি দেনÑ কেন মিয়ানমারে রোহিঙ্গা শব্দটি উচ্চারণ করেননি।
শাকিল মেরাজ জানান, মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে পোপকে নিয়ে আসার জন্য বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের সর্বাধুনিক উড়োজাহাজ ব্যবহার করা হয়েছে। বোয়িং ৭৮৬ ড্রিমলাইনার নামের বাহনটি ২০১৮ সালের আগস্টে বাংলাদেশ বিমানে যুক্ত হবে। এর আগেই বোয়িংটিকে ব্যবহার করা হয়েছে শুধুমাত্র পোপের জন্য। মিয়ানমার থেকে আসার সময় উড়োজাহাজটির নাম ছিল ‘মেঘদূত’। এসময় পোপ ছাড়াও বিমানে বিদেশি বিভিন্ন গণমাধ্যমের ৬৮ জন সাংবাদিক ছিলেন। পোপের ব্যক্তিগত স্টাফ ছিলেন ১১৩ জন। ফ্লাইটটি পরিচালনা করেন ক্যাপ্টেন তাসমিন। ৩০ নভেম্বর থেকে ২ ডিসেম্বর পর্যন্ত পোপ বাংলাদেশে অবস্থান করেন। পরে ফিরেও যান বাংলাদেশ বিমানে। উড়োজাহাজের নাম ছিল ‘অরুণোদয়’। এটি বোয়িং ৭৭৭ থ্রি হান্ড্রেড ইয়ার্স। বাংলাদেশ বিমানে এটি যুক্ত হবে আগামী বছর নভেম্বরে। ফেরার সময় উড়োজাহাজটি পরিচালনা করেন, ক্যাপ্টেন ফজল মাহমুদ।
বিমানে পোপের ব্যক্তিগত কেবিন ক্রু ছিলেন মারিয়া অধিকারী মেরী। তিনি বলেন, এটি ছিল অন্যরকম দিন। আমার জীবনের সেরা দিন। আমরা বাংলাদেশি ‘ক্রু’রা পোপকে বিমানে বাংলাদেশি খাবারই পরিবেশন করেছি। তবে অন্য খাবারও ছিল।
এ বিষয়ে বিমান ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন জানান, সাধারণত রাষ্ট্রীয় অতিথিরা নিজ বিমান বা যে দেশে যাবেন সেই দেশের বিমানেই ভ্রমণ করেন। এক্ষেত্রে বলা যায় বাংলাদেশের জন্য পোপ ফ্রান্সিস ব্যতিক্রম করেছেন। মিয়ানমারের বিমানে না চড়ে তিনি ভ্রমণ করেছেন বাংলাদেশ বিমানে। এমনকি বাংলাদেশ বিমানেই রোমে ফিরে গেছেন। এর জন্য প্রায় ৬ মাস আগেই বিমানের ক্রুদের বিশেষ প্রশিক্ষণ দিতে হয়েছে। কারণ পোপের সঙ্গে আসা মিডিয়া কর্মীদের চাহিদা ছিল হার্ড ড্রিংকসের। ২০০৫ সালের পর থেকে বাংলাদেশ বিমানে হার্ড ড্রিংকস পরিবেশন করা হয় না। সুতরাং কোনো হার্ড ড্রিংকস কিভাবে পরিবেশন করা হবে এর জন্য বিমান ‘ক্রু’দের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় হোটেল লা মেরিডিয়ানে।