হারিয়ে যাচ্ছে গরুর হাল
প্রান্তোষ চন্দ্র দে (হালুয়াঘাট ) ময়মনসিংহ : বাংলাদেশ কৃষি প্রধান দেশ। এদেশে প্রায় ৮০ ভাগ লোক কৃষক। আর কৃষিকাজে তারা কামারের তৈরি এক টুকরো লোহার ফাল দিয়ে কাঠমিস্ত্রির হাতে তৈরি কাঠের লাঙল, জোয়াল আর বাঁশের তৈরি মই ব্যবহার করে জমির চাষাবাদ করতেন।কৃষিকাজে ব্যবহৃত এসব স্বল্প মূল্যের কৃৃষি উপকরণ এবং গরু দিয়ে হালচাষ করে তারা যুগের পর যুগ ধরে ফসল ফলিয়ে জীবিকা নির্বাহ করে আসছেন।
এতে করে একদিকে যেমন পরিবেশের উপর চাপ কম হয়, অন্যদিকে কৃষকের অর্থ ব্যয় হয় কম। লাঙল, জোয়াল ও বাঁশের মই ছাড়াও হালচাষিরা অতিগুরুত্বপূর্ণ যে দুটি জিনিস ব্যবহার করেন তা হলো গোমাই আর পান্টি। ফসলের পাশের কিংবা ঘাসপূর্ণ জমিতে চাষের সময় গরু যাতে কোনো খাদ্য খেতে না পারে, সেদিক লক্ষ্য রেখে পাট, বেত, বাঁশের কঞ্চি অথবা লতাজাতীয় এক ধরনের গাছ দিয়ে তৈরি গোমাই গরুর মুখে বেঁধে দেওয়া হয়। আর জোরে জোরে হাল চালানোর জন্য ব্যবহার করেন বাঁশের পান্টি।এটি খুব বেশি দিনের কথা নয়, প্রায় ১৫-২০ বছর আগে এসব গরুর হালে লাঙল-জোয়াল আর মই গ্রামগঞ্জের জমিতে হরহামেশাই দেখা যেত। চাষিদের অনেকে নিজের জমিতে হালচাষ করার পাশাপাশি অন্যের জমি চাষিয়ে পারিশ্রমিক হিসেবে কিছু অর্থও উপার্জন করতেন। তারা হাজারো কর্মব্যস্ততার মধ্যেও কখনো কখনো ফুরফুরে আনন্দে মনের সুখে গান গেয়ে গেয়ে জমি চাষ দিতেন। ভোররাত থেকে শুরু করে প্রায় দুপুর পযন্ত জমিতে হালচাষ করতেন তারা। গ্রামগঞ্জে গরুর হাল এখন দেখা যায় না বললেই চলে। লাঙলের জায়গা দখল করেছে ট্রাক্টর। সম্পাদনা : মুরাদ হাসান