২০১৭ সালে আলোচিত উখিয়া-টেকনাফের রোহিঙ্গা পরিস্থিতি,২০১৮ সালে প্রত্যাবাসন চ্যালেঞ্জ
শ.ম.গফুর,উখিয়া,কক্সবাজার : গতকাল রাত ১২টায় মৃত্যু হয়েছে ২০১৭ সালের। আজ উদিত হয়েছে নতুন বছরের। গতকালের গোধূলি বেলায় রক্তিম সূর্য অস্ত যাওয়ার মধ্য দিয়ে মহাকালের অতলে হারিয়ে গিয়েছে প্রাপ্তি অপ্রাপ্তির আরেকটি বছর। ঘড়ির কাটা রাত ১২ টা পৌঁছানোর সাথে সাথেই বিদায় নিয়েছে বৈচিত্র্যময় বছর ২০১৭। অনেক স্মৃতি, অনেক আশাজাগানিয়া রাত, অনেক সূর্যালোকিত ভোরকে সাথে নিয়ে স্মৃতির খাতায় জায়গা করে নিবে ঘটনাবহুল ওই বছরটি। আজ শুরু হয়েছে আরও একটি নতুন বছর ২০১৮। বিদায়ী বছরের সুখকর ঘটনায় পুলকিত হওয়ার চেয়ে অনাকাঙ্খিত ঘটনায় জেলাবাসীর হৃদয় ভারাক্রান্ত হয়েছে বারংবার। অর্থনীতি, শিক্ষা ও চিকিৎসা ক্ষেত্রে কক্সবাজারের চিত্র পাল্টালেও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি, মাদকের পাচার, যোগাযোগ এবং রাখাইনের বাস্ত্যুচূত রোহিঙ্গাদের এই জেলায় প্রবেশের ঘটনায় বার বার ভারাক্রান্ত হয়েছে জেলার লোকজন। প্রতি বছরের ন্যায় এবারও শুরু থেকে ইয়াবা পাচার, সড়ক দূর্ঘটনা ছিল নিত্য নৈমত্তিক ঘটনা। তবে এবছরের সবচেয়ে বড় বিষফোড়ার নাম রোহিঙ্গা। ২০১৬ সালের শেষভাগে শুরু হয়ে যায় এই জেলায় রোহিঙ্গা প্রবেশের ঢল। চলতি বছরের মধ্যভাগের কয়েকমাস বন্ধ থাকলেও ২৫ আগষ্টের পর থেকে আবারো শুরু হয় রোহিঙ্গা প্রবেশ। যা চলছে এখনো। এনিয়ে বিশ্বজুড়েই চলেছে কক্সবাজারবাসীর বন্দনা। তবে প্রায় ১২ লাখ রোহিঙ্গার কারণে নষ্ট হয়েছে পাহাড়, নদী, পরিবেশ ও স্বাস্থ্যখাত। আর একারণেই তাদেরকে ঝামেলা মনে করেন জেলাবাসী। একসময়ে মানবাপাচারের কারণে আলোচিত কক্সবাজার এবছরও দেশব্যাপী ছিল ইয়াবার কারণে সমালোচিত। প্রতিমাসেই কয়েকদফা সড়ক দূর্ঘটনার কারণে শিরোনাম হওয়া এই জেলার এবছরের নতুন ভোগান্তির নাম যানজট এবং ভাঙ্গা সড়ক।
দুটি প্রশিক্ষণ বিমানের দূর্ঘটনা চাঁদাবাজির টাকাসহ সাতজন ডিবি সদস্য সেনাবাহিনীর হাতে গ্রেফতার ও রিমান্ডের নামে পুলিশের হাতে এক নারী নির্যাতনের ঘটনা এখনো দগদগ করে জেলাবাসীর মনে। কঠোর হাতে রোহিঙ্গাদের নিয়ন্ত্রণ করে জেলা পুলিশ যেমন সমাদৃত হয়েছে। এর বিপরীতে সাত ডিবি সদস্যের কারণে সারাদেশে সমালোচিতও হয়েছে। একদিকে যেমন জেলায় বেড়েছে গরু চুরি, ছিনতাই ও অপহরণের মত ঘটনা। অন্যদিকে মহেশখালিতে প্রেমে ব্যর্থ হয়ে প্রেমিকাকে ছুরিকাঘাতের ঘটনাটি এখনো ভুলতে পারেনি মানুষ। এক বছরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দুদফা এবং রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদের এক দফা কক্সবাজার সফরে আনন্দে ভেসেছে জেলাবাসী। অন্যদিকে রোহিঙ্গাদের কারনে সারাবছরই দু:খ আর কষ্টকে মাথা পেতে নিয়েছে। ২০১৮ সালে প্রত্যাবাসন চ্যালেঞ্জ এখন বড় বিষয়। সব প্রতিকূলতার পরেও মানুষ স্বপ্ন দেখে বন্ধ হবে ইয়াবা পাচার, ফিরে যাবে রোহিঙ্গারা, রোধ হবে ছিনতাই আর অপহরণ। পুলিশ, শিক্ষক, চিকিৎসকসহ সর্বস্তরের মানুষ সততার সাথে তাদের দায়িত্ব পালন করবেন আগত বছরে। পর্যটন শহর আবারো পরিনত হবে স্বাস্থ্যকর নগরীতে, পাহাড় ফিরে পাবে আপন সৌন্দর্য, শিশুদের জন্য গড়ে উঠবে পার্ক এমন কামনায় বিদায় ২০১৭ সাল। সম্পাদনা : মাহফুজ উদ্দিন খান