চালের বাড়তি দাম দিয়েই শুরু ২০১৮
জাফর আহমদ : চালের বাড়তি দাম দিয়েই শুরু হচ্ছে নতুন বছর। বিদায়ী ২০১৭ সালের হাওড়ে আগাম বন্যা ও উত্তরাঞ্চলে ধান ডুবে যাওয়ায় চালের দাম উঠেছিল সর্বোচ্চ। যা ছিল বর্তমান সরকারের নির্বাচনি প্রতিশ্রুত ১০ টাকার সাড়ে ৫ গুণ, ৫৫ টাকা। বছরের শেষে কিছুটা কমলেও এখনো বিক্রি হচ্ছে ৪৫ থেকে ৫৫ টাকা। চালের দামের আতঙ্ক দিয়ে নতুন বছর শুরু হচ্ছে।
সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থার হিসাব অনুযায়ী দুটি বন্যায় ধানের ক্ষতি হয়েছে প্রায় ১০ লাখ মেট্রিক টন। বন্যায় পূর্বাঞ্চলের হাওড়ে কি পরিমাণ ধান ডুবে যায়, সরকারের কাছে তার সঠিক তথ্য ছিল না। সে কারণে সরকার ঘাটতি পূরণে চাল আমদানি করতে তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্তে যেতে পারেনি। ফলে চাল ব্যবসায়ীরা কৃত্রিমভাবে চালের দাম দ্বিগুণ বাড়িয়েছে। বন্যার আগে মোটা চাল ধরণ ভেদে যেখানে ৩৫ থেকে ৩৮ টাকা ছিল। সেখানে মাত্র এক মাসের ব্যবধানে তিন ধাপে ৫০ থেকে ৫৫ টাকায় ওঠে। ৪২ থেকে ৪৮ টাকার চিকন চাল উঠে ৬৫ থেকে ৬৮ টাকাতে। যা নির্দিষ্ট আয়ের শ্রমজীবি মানুষের নাভিশ্বাস ওঠে যায়।
চালের দামে স্বাভাবিক করে আনতে সরকারেও কোন ত্রুটি ছিল না। তবে তা ছিল তুলনামুলক প্রলম্বিত। বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গর্ভনর ড. আতিউরের মতে, যারা চাল আমদানির জন্য উদ্যোগ নিয়েছে তারা আরও দ্রুত এ সিদ্ধান্ত নিতে পারতো। চাল আমদানির প্রতিবন্ধকতা দূর করে সরকারি পর্যায়ে চাল আমদানি শুরু করা হয়। বেসরকারি পর্যায়েও চাল আমদানি শুরু হয়। দুই মাসের মধ্যে চাল আমদানির এলসি (ঋণপত্র) খোলার পরিমাণ ২০ লাখ মেট্রিক টন ছাড়িয়ে যায়। ততোদিন চালের দাম উঠে সর্বোচ্চে।
নতুন আমন ধান উঠাতেও চালের বাজারে বড় ধরনের প্রভাব ফেলতে পারেনি। এখনো মোটা চালের কেজি ৪৮ থেকে ধরণ ভেদে ৫৫ টাকা পর্যন্ত। চিকন চালের কেজি ৬২ থেকে ৬৫ টাকা পর্যন্ত।
এ ব্যাপারে চালকল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক লায়েক উদ্দিন এই প্রতিবেদকে বলেন, চিকন চালের দামে নতুন বছরের কোন সুখবর নেই। তবে মোটা চাল যে পর্যায়ে নেমেছে, এর চেয়ে বৃদ্ধির সম্ভাবনা নেই, বরং একটু কমতে পারে। কারণে এরই মধ্যে অনেক চাল আমদানি হয়েছে, এখনো ভারতীয় চাল দেশে ঢুকছে। বিদায়ী ২০১৭ সালের শুরুতে যে দামে চাল বিক্রি হয়েছে, সে দামে ফেরা সম্ভব নয়।