ব্যাংক ঋণের টাকা আত্মসাত করে বিদেশে পালানোর চেষ্টা
ইসমাঈল হুসাইন ইমু : আল আরাফা ইসলামী ব্যাংক চট্টগ্রামের আগ্রাবাদ শাখার কতিপয় কর্মকর্তার যোগসাজশে একটি প্রতারক চক্র কোটি কোটি ঋণ নিয়ে বেসরকারি কোম্পানীর এক পরিচালককে ফাঁসানোর পায়তারা করছে। ওই চক্রের সদস্যরা চট্টগ্রামের এম এস সু ইন্ডাস্ট্রিজ প্রা: লি: কোম্পানীর সহযোগী প্রতিষ্ঠান দেখিয়ে মেসার্স আর্কস ট্রেডিং কোম্পানীর নামে এই টাকা উত্তোলন করেছে। গতকাল বুধবার সকালে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন এম এস সু ইন্ডাস্ট্রিজ এর পরিচালক ও মাজকান জিন্স লি: কোম্পানীর চেয়ারম্যান নাফিসা শারমিন।
তিনি বলেন, মাজকান জিন্স কোম্পানীর বিশেষ প্রয়োজনে ২০১৫ সালে মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকে লোনের আবেদন করলে ব্যাংক তাকে ঋণ খেলাপী হিসেবে চিহ্নিত করে। পরে তিনি জানতে পারেন এমএস সু ইন্ডাস্ট্রিজের চেয়ারম্যান নাহিদ জাবিন নুসা, ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম ইউ এম আবুল হোসেন প্রকাশ ঝন্টু, সরফরাজ কাদের রাসেল, পরিচালক নামধারী খাজা খাওয়ার ওয়াসিম আল আরাফা ইসলামী ব্যাংকের আগ্রাবাদ শাখা থেকে ২০০৬ সালে ৩ কোটি টাকা ঋন উত্তোলন করে আত্মসাত করেছেন। এছাড়া পরবর্তী সময়ে আরও কয়েক কোটি টাকা ঋণ নিয়েছেন। এতে কোম্পানী ঋণ খেলাপী হিসেবে চিহ্নিত হয়।
কোম্পানীর পরিচালক হিসেবে নাফিসা শারমিনও খেলাপীর তালিকায় পড়েন। এ বিষয়ে জানতে কোম্পানীর চেয়ারম্যান আবুল হোসেনের সরনাপন্ন হলে তিনি নানা তালবাহানা করতে থাকেন। পরে নাফিসা শারমিন ২০১৫ সালের ৩০ নভেম্বর বন্দর থানায় একটি জিডি (১২৭৫) করেন।
নাফিসা আরও বলেন, তিনি ১৯৯২ সাল থেকে ২০১৫ সালের ১৫ মে পর্যন্ত কোম্পানীর যাবতীয় আর্থিক লেনদেনের কাগজপত্র পরিদর্শনের জন্য আদালতের সরনাপ্না হন। পরে কাগজপত্র সংগ্রহ করে পর্যালোচনা করে জানতে পারেন, এম এস সু ইন্ডাস্ট্রিজের খাজা খাওয়ার পরিচালক না হলেও তাকে পরিচালক দেখিয়ে ১৯৯৬ সালে একটি চলতি হিসাব (নং-৩৩০০১৫৬৪) খুলে আর্থিক লেনদেন করা হচ্ছে। ওই হিসাব থেকেই ব্যাংক কর্মকর্তাদের যোগসাজশে ৩ কোটি টাকা ঋণ নেয়া হয়। পাশাপাশি ওই কোম্পানীর সহযোগী প্রতিষ্ঠান দেখিয়ে মেসার্স আর্কস টেডিং এর নামে আরও দেড় কোটি টাকা লোন নেয় ওই চক্রের সদস্যরা।
এদিকে ব্যাংকের ঋণ পরিশোধ না করায় কর্তৃপক্ষ কোম্পানীর পরিচালনা পর্ষদের বিরুদ্ধে দুটি চেক জালিয়াতির মামলা করে। এতে কোম্পানী ঋণ খেলাপী হিসেবে চিহ্নিত হয়। কোম্পানীর ১০% শেয়ার থাকায় নাফিসাকেও ঋণ খেলাপী হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাংক সিআইবি রিপোর্ট দেয়। অপরদিকে মাজকান জিন্স কোম্পানী আর্থিক দৈন্যতায় পড়লে কোন ঋণ তুলতে না পারায় এক পর্যায়ে কোম্পানী বন্ধ করতে বাধ্য হন নাফিসা। পরে ২০১৭ সালের মার্চে ওই প্রতারক চক্রের বিরুদ্ধে চট্টগ্রাম বন্দর থানায় মামলা করেন তিনি। মামলাটি বর্তমানে বিাচারাধীন রয়েছে। এছাড়া নিজের পাওনা টাকা ও ক্ষতিপূরন পেতে আদালতে আরেকটি মামলা করেন নাফিসা। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে আবুল হোসেন গ্রুপ তাকে বিভিন্নভাবে হুমকি দিচ্ছেন। পাশাপাশি ব্যাংকের ঋণের টাকা পরিশোধ না করে এরা বিদেশে পালানোর পায়তারা করছে বলে জানান নাফিসা শারমিন।