আজ পূর্ণ হচ্ছে সরকারের ৪ বছর আওয়ামী লীগ ও বিএনপিসহ দেশব্যাপী কর্মসূচি ‘গণতন্ত্র রক্ষা’ ও ‘গণতন্ত্র হত্যা’ দিবস নিয়ে সংঘাতের আশঙ্কা
উম্মুল ওয়ারা সুইটি ও মাঈন উদ্দিন আরিফ : সরকারের চার বছর শেষ হচ্ছে আজ। একাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে এই দিনটিকে বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে আওয়ামী লীগ। ২০১৪ সালের পর থেকে প্রতি বছর এই দিনকে দলটি ‘গণতন্ত্র রক্ষা দিবস’ হিসেবে উদযাপন করছে। আবার সংসদের বাইরে থাকা বড় রাজনৈতিক দল বিএনপি বরাবরই এদিনকে ‘গণতন্ত্র হত্যা দিবস’ উল্লেখ করে বিক্ষোভ ও কালো দিবস হিসেবে কর্মসূচি পালন করে আসছে।
আওয়ামী লীগের সমমনা দলগুলো ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের পক্ষে অবস্থান নিয়ে এবং বিএনপি সমর্থিত দলগুলো এই নির্বাচনকে অবৈধ দাবি করে কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। এবারও দিবসটির তাৎপর্য তুলে ধরতে দুদিনব্যাপী কর্মসূচির পরিকল্পনা নিয়েছে আওয়ামী লীগ। তবে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করার অনুমতি না পেয়ে দলটি আজ রাজধানীতে কোনো কর্মসূচি রাখেনি। ফলে ঢাকায় সংঘাত হওয়ার সুযোগ অনেকটাই কম। তবে জেলা-উপজেলা এবং তৃণমূলে সংঘাতের আশঙ্কা করছেন সবাই।
আজ দেশব্যাপী রাজনীতির মাঠে সক্রিয় থাকছে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি। ফলে দুই দলের মধ্যে কর্মসূচি পালনের ক্ষেত্রে সংঘাতের আশঙ্কা করছে দুই দলের জ্যেষ্ঠ নেতারা। বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী জানান, সারাদেশে জেলা, মহানগর ও উপজেলা পর্যায়ে কালো পতাকা মিছিল অব্যাহত থাকবে। ঢাকায় সমাবেশ নিয়ে শুধু ঝামেলা। এই বিষয়ে আজ আমরা জানাব। তিনি বলেন, ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি আওয়ামী লীগ গণতন্ত্র হত্যা করে অবৈধভাবে ক্ষমতায় এসেছে। প্রতিবছর বিএনপি ও ২০ দলীয় জোট কালো পতাকা হাতে প্রতিবাদ সভা-সমাবেশ বিক্ষোভ কর্মসূচি করে আসছে। জনগণ জানে কিভাবে এই সরকার দেশকে গণতন্ত্রহীন করে তুলছে। সরকারের দমন-পীড়নের চিত্র আমরা জনগণের কাছে তুলে ধরবো। তিনি বলেন, সংঘাতের আশঙ্কা তো রয়েছেই। সরকার পক্ষ যদি কর্মসূচি পালনে বাধা দেয় তাহলেই কোনো ঝামেলা হবে।
আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ব্যাপক শোডাউন হবে সারা দেশে। আন্দোলনের নামে বিএনপি-জামায়াতের ধ্বংসাত্মক কর্মকা- জাতির সামনে আবার উপস্থাপন করা হবে। আগামীকাল জাতীয় শিল্পকলা মিলনায়তনে আন্দোলনের নামে পেট্রোল-বোমা মেরে বিএনপি-জামায়াত যাদের পুড়িয়ে মেরেছিল এবং হতাহত করেছিল, তাদের পরিবারের সদস্যদের নিয়ে সেমিনার হবে। সেমিনারে দেশি-বিদেশি অতিথিদের সামনে আবার বিএনপি-জামায়াতের নাশকতার ভিডিওচিত্র প্রদর্শন করা হবে। তিনি আরও বলেন, বিএনপির জ্বালাও-পোড়াওয়ের চিত্র সারা দেশে প্রচার করা হবে।
‘গণতন্ত্রের বিজয় দিবস’ উপলক্ষে রাজধানীতে জনসভা করবে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের উদ্যোগে বঙ্গবন্ধু এভিনিউ ও মহানগর উত্তরের উদ্যোগে বনানী পূজা মাঠে এ জনসভা অনুষ্ঠিত হবে। জনসভা উপলক্ষে সংগঠনের মহানগর, জেলা, উপজেলা ও থানা পর্যায়ে বিজয় র্যালি ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। আওয়ামী লীগের সব মহানগর, জেলা, উপজেলা ও থানাগুলো অনুরূপ কর্মসূচি পালন করবে। দেশব্যাপী এই কর্মসূচিতেও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা অংশ নেবেন।
আওয়ামী লীগের একজন প্রেসিডিয়াম সদস্য বলেন, তৃণমূলে নেতাকর্মীদের বলা হয়েছে, সরকারবিরোধী কর্মসূচি প্রতিহত করতে হবে। এ ব্যাপারে তাদের প্রস্তুতিও রয়েছে।
বিএনপির প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী বলেন, ডিএমপি কমিশনারকে আমরা ৫ জানুয়ারি গণতন্ত্র হত্যা দিবস উপলক্ষে সোহরাওয়ার্দীতে সমাবেশের কথা বলেছিলাম। কিন্তু অনুমতি পাইনি। তাই ঢাকায় আজ বিএনপির কোনো কর্মসূচি থাকছে না। শুধু নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে কালো পতাকা উত্তোলন করা হবে। সম্পাদনা : হাসিবুল ফারুক চৌধুরী