শিক্ষিতের একাল-সেকাল !!!
সাইফুর সাগর
মেধাশূন্য শিক্ষিতের হার ক্রমান্বয়ে বেড়েই চলেছে। শুধু সার্টিফিকেটধারী শিক্ষিতের যাঁতাকলে সমাজে বুদ্ধিদীপ্ত মানুষের অবমূল্যায়ন নিত্যনৈমত্তিক ব্যাপার।
কোনো রকম শিক্ষায় ইউনিভার্সিটি পাস করে তথাকথিত ‘জেন্টেলম্যান’ সেজে দেশের ঘাঁড়ে চেপে বসে আছে লক্ষ লক্ষ যুবক। তাদের কাছে কৃষি কাজ একটি নি¤œ শ্রেণির কর্ম হিসেবে পরিলক্ষিত হয়। কোনো রকম শিক্ষিত বেশভূষা গায়ে পরিধান করলেই, ক্ষেত খামার একটি অপমান জনক পেশা হিসেবে দেখা শুরু করে, একজন দিনমজুরের সন্তানের কাছেও সমান অবস্থা।
পরিবারের অশিক্ষিত এবং তুলনামূলক অকর্মন্য সন্তানটিকে সংসারের বোঝা কমানোর উদ্দেশ্যে বিদেশে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
একটা সময় এসে উচ্চ শিক্ষিত সন্তানটি নামমাত্র শিক্ষা সনদটি প্রাপ্তির পর, অশিক্ষিত প্রবাসী সন্তানের উপরেই নির্ভর করে চলতে থাকে।
যত বিদ্যা বুদ্ধি বাড়ে ততই এক রকম জন্তুতে পরিণত হয়।
সমাজের মাঝে শ্রেণি বৈষম্য তৈরি করতে শুরু করে।
অথচ যে খাবারটি খেয়ে আর গায়ে আতর মেখে বিকাল বেলাতে বের হয়, সেই খাবারটি যাদের ঘাম ঝরা পরিশ্রমে উৎপাদন করেছে, তাদেরকেই অবমূল্যায়ীত করা হয় আমাদের সমাজে, তথাকথিত শিক্ষিত ফানুসের কুশিক্ষার পরামর্শে।
এমন শিক্ষা আমরা চাই না যে শিক্ষা থেকে দেশ ও দশের কোনো উপকার হবে না। সঠিক শিক্ষা আমাদের জন্য অমূল্য প্রয়োজন হয়ে দাঁড়িয়েছে। স্বল্প ভয়ঙ্করী শিক্ষিত মানুষগুলো আমাদের সমাজের জন্য হুমকি হয়ে যাচ্ছে।
এরাই সমাজে নেশা, চোরাচালান এবং সামাজিক অবক্ষয়ের সব রকম কাজের সাথে জড়িত থাকে।
কারিগরি শিক্ষার দিকে নজর দেয়ার কোনো বিকল্প নেই।
কৃষিতে শিক্ষায় উৎসাহ দেওয়া অনেক জরুরি।
যে হারে খাদ্য শস্যের জন্য প্রতিনিয়ত পরনির্ভরশীল হতে চলেছি, তাতে অচিরেই চালের দাম ২০০ টাকাতে পৌঁছে যাবে। মূল্যহীন শিক্ষার প্রসার কমিয়ে, শিক্ষা ক্ষেত্রে অধিক নজরদারি বাড়ানো দরকার।
তথাকথিত শিক্ষা কমিয়ে, গুণীদের বের করে আনতে হবে।
এই বিষয়গুলি এখন আমাদের দেশের উন্নয়নের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
লেখক : কলামিস্ট, সাংবাদিক
সম্পাদনা : মোহাম্মদ আবদুল অদুদ