৭ হাজার স্কুল এমপিওভুক্তিতে বছরে লাগবে ২২০০ কোটি টাকা
তরিকুল ইসলাম সুমন : নতুন এমপিওভুক্তির (মান্থলি পেমেন্ট অর্ডার) প্রাথমিক কার্যক্রম শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যে শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে মাউশি বলেছে, দেশের নন-এমপিও ৭ হাজার ১৪২টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে এমপিওভুক্ত করতে বছরে দুই হাজার ১৮৪ কোটি ২৭ লাখ ৫২ হাজার ২৫০ টাকা প্রয়োজন হবে। এ প্রেক্ষিতে প্রাথমিকভাবে দেশের আড়াই হাজার নন-এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির উদ্যোগ গ্রহণ করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। ইতোমধ্যে সংশোধিত এমপিও নীতিমালার খসড়া অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। সেখান থেকে চূড়ান্ত হয়ে আসার পর শিক্ষক-কর্মচারীদের এমপিওভুক্তির জন্য আবেদন চাওয়া হবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
প্রধানমন্ত্রীর আশ্বাসে অনশন প্রত্যাহার করলেও এমপিওভুক্তির আন্দোলনকারী শিক্ষকরা এখনো অনিশ্চয়তায় রয়েছে। তারা আশা করছেন দ্রুত সময়ের মধ্যে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেবে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। যার ধারাবাহিকতায় শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে এমপিও প্রত্যাশী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান যাছাই-বাছাই করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরকে (মাউশি)।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে মাউশির করা প্রস্তাবে বলা হয়েছে, সারাদেশে নন-এমপিও ৭ হাজার ১৪২টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে এমপিওভুক্ত করতে বার্ষিক দুই হাজার ১৮৪ কোটি ২৭ লাখ ৫২ হাজার ২৫০ টাকা লাগবে। এরমধ্যে ১ হাজার ২২৭টি নিম্ন-মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের জন্য ২১৯ কোটি ৭১ হাজার ৩০০ টাকা, ১ হাজার ৮৯টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের জন্য ৩৬৮ কোটি ১৫ লাখ ২৭ হাজার ৮৫০ টাকা, এমপিওভুক্ত তিন হাজার ২৭৫টি নিম্ন-মাধ্যমিক বিদ্যালয়কে মাধ্যমিকে উন্নীত করে এমপিওভুক্ত করতে ৫২২ কোটি ৬০ লাখ ৮১ হাজার ২৫০ টাকা, ৫১৮টি উচ্চ মাধ্যমিক কলেজের জন্য ৩৫৭ কোটি ১২ লাখ ৪৭ হাজার ৪০০ টাকা এবং এমপিওভুক্ত এক হাজার ৩৩টি উচ্চ মাধ্যমিক কলেজকে ডিগ্রি স্তরে উন্নীত করে এমপিওভুক্ত করতে ৭১৭ কোটি ৩৮ লাখ ২৩ হাজার ৪৫০ টাকা। ডিগ্রি কলেজ এমপিওভুক্ত করতে বছরে ৬৯ লাখ ৪৪ হাজার ৬৫০ টাকা, উচ্চ মাধ্যমিক কলেজের জন্য ৬৮ লাখ ৯৪ হাজার ৩০০ টাকা, আর নিম্ন-মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের জন্য ১৫ লাখ ৯৫ হাজার ৭৫০ টাকা প্রয়োজন হবে।
এ বিষয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের পরিচালক (মাধ্যমিক) অধ্যাপক ড. মো. আবদুল মান্নান বলেন, নন-এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের এমপিওভুক্তকরণে আমরা প্রাথমিক প্রক্রিয়া শুরু করেছি। অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে অর্থ ছাড়ের আশ্বাসে এ কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এ মুহূর্তে থোক বরাদ্দ পাওয়া সাপেক্ষে দুই থেকে আড়াই হাজার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির সম্ভাবনা রয়েছে যা ২০১৮-২০১৯ অর্থবছর থেকে কার্যকর হতে পারে।
অর্থমন্ত্রীর কাছে জমা দেয়া সংশোধিত নীতিমালা অনুযায়ী, জনসংখ্যা অনুপাতে এমপিওর নির্ধারণ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নিজস্ব জমি (ভাড়া নয়), ভালো ফলাফল, প্রাতিষ্ঠানিক অবকাঠামো, পর্যাপ্ত শিক্ষার্থী, শিক্ষকের শিক্ষাগত যোগ্যতাসহ কয়েকটি বিষয় মূল্যায়ন করে শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির জন্য নির্বাচন করা হবে। নীতিমালা অনুসারে প্রাপ্য না হলেও দেশের পিছিয়ে পড়া এলাকা, চা-বাগান, হাওর, পার্বত্য এলাকাকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়াসহ প্রত্যেক উপজেলায় কমপক্ষে একটি প্রতিষ্ঠানকে এমপিওভুক্ত করা হবে।