বিচার বিভাগের আলাদা সচিবালয় অবাস্তব ধারণা : আইনমন্ত্রী
জান্নাতুল ফেরদৌস পান্না : আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক বলেছেন, বিচার বিভাগে আলাদা সচিবালয় করার প্রস্তাব অবাস্তব। পৃথিবীর কোনো গণতান্ত্রিক কিংবা অগণতান্ত্রিক দেশে বিচার বিভাগের আলাদা সচিবালয় নেই। গতকাল রোববার বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে জেলা ও দায়রা জজ এবং সমপর্যায়ের বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাদের ২১তম জুডিশিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন ট্রেনিং কোর্সের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক বিচারপতি খোন্দকার মুসা খালেদের সভাপতিত্বে আইন সচিব আবু সালেহ শেখ মো. জহীরুল হক, আইন মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা রেজাউল করীমসহ বিচারপতি ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
আইনমন্ত্রী বলেন, বিচার বিভাগের জন্য আলাদা সচিবালয়ের কথা বলা হচ্ছে। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করার পর এবং ৩ নভেম্বর ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে চার জাতীয় নেতাকে হত্যার পর ইনডেমনিটি অর্ডিন্যান্স জারি করা হয়েছিল। সেটি ২১ বছর বিদ্যমান ছিল। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পরও ২১ বছর কোনো মামলা হয়নি। তখন আদালত স্বপ্রণোদিত হয়ে কোনো আদেশ দেয়নি, এমনকী জনস্বার্থেও মামলা হয়নি।
আইনমন্ত্রী বলেন, জাতিসংঘভুক্ত ১৯৩টি দেশের বিচার বিভাগেরও কোনো আলাদা সচিবালয় নেই। ফলে বর্তমান প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশে বিচার বিভাগের জন্য আলাদা সচিবালয় গঠন অবাস্তব ধারণা।
মাসদার হোসেন মামলার চূড়ান্ত শুনানি করে ১৯৯৯ সালের ২ ডিসেম্বর সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ সরকারের নির্বাহী বিভাগ থেকে বিচার বিভাগকে আলাদা করতে ঐতিহাসিক এক রায় দেয়। ওই রায়ে বিসিএস (বিচার) ক্যাডারকে সংবিধান পরিপন্থি ও বাতিল ঘোষণার পাশাপাশি জুডিশিয়াল সার্ভিসকে স্বতন্ত্র সার্ভিস ঘোষণা করা হয়। বিচার বিভাগকে নির্বাহী বিভাগ থেকে আলাদা করার জন্য সরকারকে ১২ দফা নির্দেশনা দেয় সর্বোচ্চ আদালত, সেখানে বিচার বিভাগের জন্য আলাদা সচিবালয় করার কথাও ছিল।
ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন প্রসঙ্গে আনিসুল হক বলেন, রাষ্ট্রপক্ষ রিভিউ করার অধিকার রাখে। আমরা যে রিভিউ আবেদন করেছি এর দ্রুত নিষ্পত্তি হবে তা অনেকের মতো আমিও চাই। কবে শুনানি হবে তা আপিল বিভাগই বলতে পারবেন। সম্পাদনা : হাসিবুল ফারুক চৌধুরী