অযতœ-অবহেলায় ধ্বংসের পথে ভাওয়াল রাজার শ্মশানবাড়ি
মিলটন খন্দকার, গাজীপুর : গাজীপুরের ঐতিহাসিক প্রতœত্তাত্বিক নির্দশনগুলোর অন্যতম ভাওয়াল রাজাদের দ্বারা নির্মিত অপূর্ব কারুকার্যখচিত শ্মশানবাড়িটি অযতœ-অবহেলায় বর্তমানে একেবারে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে উপনীত হয়েছে। দীর্ঘদিনেও প্রয়োজনীয় সংস্কার ও রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে এ ঐতিহাসিক নিদর্শনটি যে কোন সময় ধসেপড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
ইতিহাস প্রসিদ্ধ ভাওয়াল রাজাদের আমলে নির্মিত উল্লেখযোগ্য নিদির্শনগুলো প্রায় দুইশ বছর পূর্বে নির্মাণ করা হয় বলে জানা গেছে। এ সব নিদর্শনগুলো মধ্যেও রয়েছে- ভাওয়াল রাজ প্রসাদ (বর্তমান জেলা প্রশাসক কার্যালয়), শ্মশান বাড়ি, শিববাড়ি, কাচারী বাড়ি, বড়বাড়ি (রাজাদের আত্মীয় বাড়ি), কৃপাময়ী কালী মন্দির, টেরিটেবল ডিসপেনসরি ইত্যাদি। এ সব প্রাচীন নিদর্শন গুলোর অন্যতম হচ্ছে শ্মশানবাড়ি। জেলা শহরের জয়দেবপুর রাজবাড়ি থেকে (বর্তশান জেলা প্রশাসক কার্যালয়) প্রায় ১ কিলোমিটার উত্তর পূর্বকোনে চিলাই নদীর তীরে খানিকটা নির্জন এলাকায় মনোমুগ্ধকর প্রাকৃতি পরিবেশে শ্মশানবাড়িটি অবস্থিত। তৎকালীন রাজ পরিবারের সদস্যদের শবদেহ দাহ করার জন্য এটি নির্মাণ করা হলেও এতে রয়েছে অত্যন্ত কারুকার্যখচিত সুদৃশ্য কয়েকটি মিনার। এর মধ্যে প্রধান মিনারটির উচ্চতা প্রায় ২শত ফুট। এছাড় একটি স্মৃতি সৌধসহ কয়েকটি শিবলিঙ্গ, শ্মশানের পুরোহিতদের বাসস্থান এবং একটি ছোট্ট বেশি গভীর পুকুর আছে শ্মশানবাড়ির আঙ্গিনায়। প্রায় ৭ একর জায়গা জুড়ে নির্মিত শ্মশানবাড়িতে দৃশ্যমান সাতটি স্মৃতিস্তম্ভ বা মিনার রয়েছে যা রাজপরিবারে সাত পুরুষের স্মৃতি ধারণ করে বলে জনশ্রুতি রয়েছে। গাজীপুরের জেলা প্রশাসক ড. দেওয়ান মোহাম্মদ হুমায়ুন কবীর জানান, শিগশিগরই শ্মশানের জায়গা জরিপের মাধ্যমে নির্ধারণ করে সীমানা প্রাচীর দেওয়া হবে। এ পর এটি সংস্কার ও রক্ষণাবেক্ষণের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে একটি দর্শনীয় স্থানে পরিণত করা হবে। সম্পাদনা : মুরাদ হাসান