‘গত নির্বাচন সুষ্ঠু ছিল না এবার আশা করছি সুষ্ঠু হবে’
খন্দকার আলমগীর হোসাইন : নগর নিয়ে যে কোনো ভালো উদ্যোগকে আমরা সাধুবাদ জানাই। আমি যদি আগামীতে দায়িত্ব পেতে পারি, তাহলে আমার প্রধান দায়িত্বই হবে অতীত ধীরগতি সম্পন্ন উদ্যোগগুলোকে অতিদ্রুত সম্পন্ন করা। তার পাশাপাশি আমাদের তিন বছর আগের প্রত্যাশিত চিন্তাগুলো এবং নতুন নতুন কিছু উদ্যোগ নিয়ে নগরবাসীর জন্য কিছু সেবামূলক কাজ করা; সেগুলোকেও এখন একসাথে শুরু করতে হবে। আগামী দুই বছরে সব হয়তো সমাপ্ত করতে পারবো না। কিন্তু অতীত কাজগুলো শেষ করা এবং নতুন কিছু কাজ একসাথে শুরু করা হবে প্রথম চিন্তা।
গণতান্ত্রিক দল হিসেবে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার উপরে আমরা সবচেয়ে বেশি বিশ্বাস ও আস্থা রাখতে চাই। বিধিমালা মোতাবেক এবং প্রক্রিয়া মোতাবেক তফসিল ঘোষণার পর ১৮ তারিখ নমিনেশন দেওয়ার শেষ দিন। এরই মধ্যে দল তার প্রার্থী চূড়ান্ত করে জানিয়ে দিবে। আমি দলের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আছি। আমার প্রত্যাশা এবং আমার জোরালো আশা হলো, দল আমাকেই নমিনেশন দিবে, যে কারণে দল আমাকে সমর্থন দিয়েছিল আজ থেকে তিন বছর আগে। এখন অপেক্ষায় আছি, বিএনপি এবং ২০ দলীয় জোটের প্রার্থী হিসাবে নমিনেশন পাওয়ার। আমি পাবো এবং আমি আশাবাদী।
জামায়াতের প্রার্থী দেওয়া সম্পর্কে জানতে চাইলে তাবিথ আউয়াল বলেন, আমরা বার বার বলে আসছি, একটি সুস্থ এবং অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন যদি হয়, তাহলে তো আমরা চাইবো যে যত প্রার্থীই আসুক তত প্রার্থীকে আমলে নিতে। এটাই কিন্তু একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিচয় এবং গণতান্ত্রিক দেশের পরিচয়। অতএব কে প্রার্থী দিলো এটা বিবেচনা করা ঠিক হবে না। আমাদের বিবেচনা করা উচিত কী ধরনের প্রার্থী আসছেন এবং এই প্রার্থীগুলো আসলেই যোগ্য কিনা ঢাকার মতো শহরকে পরিচালনা করার জন্য।
সাবেক নির্বাচন কমিশন ও নির্বাচন সম্পর্কে তিনি বলেন, সম্পূর্ণ নতুন একটি নির্বাচন কমিশন, নির্বাচনটা নতুন নয়, এটা একটা উপনির্বাচন এবং এটা ধারাবাহিকভাবে চলে আসছে। এখন যদি আমরা গত ঢাকা উত্তরের সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের অভিজ্ঞতা চিন্তা করি, একটি রাষ্ট্রের তিনবারের প্রধানমন্ত্রীর গাড়িতে হামলা হয়। সে নির্বাচন সুস্থ তো বলা যায় না, যেখানে খোলামেলা কারচুপি হয়। যে নির্বাচনের আগেই অনেক নেতাকর্মীদের জেলে ঢুকানো হয় এবং জামিন দেওয়া হয় না, সেটাকে আসলে একটা নির্বাচন বলা হয় না। বর্জন করেছি না প্রত্যাহার করেছি, এটা ব্যক্তিগত ব্যাপার নয়। অনেক প্রার্থীরাই এই নির্বাচনের বিপক্ষে ছিলেন, নির্বাচনের ফলাফলের বিপক্ষে ছিলেন। নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা মানে এই নয় যে, সব অনিয়ম মেনে নিয়ে আমরা বসে থাকবো। আমরা চেষ্টা করেছিলাম নির্বাচনটাকে ভালোভাবে, সুষ্ঠুভাবে শেষ করতে কিন্তু দুঃখজনক ব্যাপার হলো, পরিবেশ ওই রকম ছিলো না। সেজন্যই আমাকে গত নির্বাচনটাকে বর্জন করতে হয়েছিল।
নির্বাচন কমিশন নিয়ে বলেন, যেহেতু নতুন একটি নির্বাচন কমিশন এবং তারা বার বার আশ্বাস দিয়েছেন, ভালোভাবে ও সুষ্ঠু নির্বাচন দিতে চায়। তারা কোনো দলীয় নির্দেশে বা সরকারের নির্দেশে কাজ করবেন না। এর মধ্যে নারায়ণগঞ্জ, কুমিল্লা ও রংপুরের নির্বাচন হয়েছে। যেটা দেখে আমরা একটু আশাবাদী, তাদের কাজকর্ম সঠিক উদ্দেশ্য নিয়ে নেমেছে। আবার এই তিন নির্বাচনকে ঢাকা উত্তরের সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের সাথে তুলনা করলে চলবে না। কারণ, ভোটার সংখ্যা ও এলাকার ডাইমেনশন দেখতে হবে। তিন সিটি নির্বাচনকে এক করলেও কিন্তু ঢাকার সমান হচ্ছে না। আর রাজধানীর নির্বাচনটাকে একটু ভিন্নভাবেই দেখতে হবে। আর এই সময়টা নির্বাচনের বছর বলা হচ্ছে। ঢাকার নির্বাচনটাসহ আরও পাঁচটা শহরে নির্বাচন হবে। তারপর আমাদের মূল জাতীয় নির্বাচন হবে। সবকিছু নিয়ে আমরা আশাবাদী নির্বাচন কমিশন যদি এই নির্বাচনটাকে সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষভাবে করেন, তাহলে সামনের নির্বাচনগুলোয় তাদের উপর আস্থা ফিরে আসবে।
জনগণের উপর আমার আস্থা আছে এবং জনমত যে আমার পক্ষে আসবে সেই আস্থা রয়েছে। কিন্তু দুঃখজনক কথা হলো, এই মুহূর্তে আমরা জনগণকে আস্থায় দিতে পারছি কিনা। আমরা প্রার্থীরা, নির্বাচন কমিশন এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সম্মলিতভাবে জনগণকে আস্থা দিতে পারছি কিনা। একটি সুষ্ঠু নির্বাচন হবে এবং ভোট কেন্দ্রে তারা নির্ভয়ে যেতে পারবে, ভোট দিবে এবং সঠিক গণনা করা হবে।
আমি আশাবাদী, একটি সুষ্ঠু নির্বাচন হবে এবং সেই ভোটে জনগণ নির্ভয়ে কেন্দ্রে যেতে পারবে, ভোট দিবে এবং সঠিক গণনা করা হবে। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করতে চাই, নির্বাচন কমিশন এটা করবে। সম্পাদনা : বিশ্বজিৎ দত্ত