আমরা ইতিহাসের চর্চায় বর্তমানকে অবমাননা করছি
সাইফুর সাগর
কথায় কথায় শুধু ইতিহাসের পেছনে ছুটি, এতে উন্নয়নের কোনো কানা অংশ ও কাজে আসে না। বৈদাশিক আয় দিয়ে আর যাই হোক, দেশের স্থায়ী উন্নয়ন ও দীর্ঘদিন চাঙ্গা অর্থনীতি ধরে রাখা যায়না। আমরা আবেগ ও ক্যাশ টাকায় সংসার চালাচ্ছি, আমাদের কি আছে ? সকালে পান্তা ভাত আর দুপুরে গরম ভাত খেয়ে, গলায় টাই লাগিয়ে বের হলেই উন্নত রাষ্ট্রের নাগরিক হওয়ার দাবী করা যায় না। রাজনীতিবিদ আর পুঁজিবাদীরা আমাদেরকে ছাগলের ৩ নাম্বার বাচ্চা বানিয়ে, যা বুঝাচ্ছে তাই বুঝে নিচ্ছি। দেশ যেভাবে চলছে, আগামী ১০০ বছরেও নিন্ম মধ্যবিত্তের ছোঁয়াতে আসার সম্ভাবনা একেবারেই ক্ষীণ। যতদিন বাংলাদেশের বাইরে গিয়ে উপলব্ধি করতে না পারবো যে, উন্নয়ন কাকে বলে, ততদিন মগবাজার ফ্লাইওভার আমাদের কাছে উন্নত বলেই মনে হবে। আমাদের সম্পদ বলতে কি আছে ? কিছুই নেই। মানব সম্পদ আমাদের এক বিশাল বোঝা রূপে কাঁধে ভর করে আছে, সঠিক শিক্ষা থেকে অনেক দূরে সরে যাচ্ছে পুরো নতুন প্রজন্ম। এক মহাকালের সম্মুখে এসে পৌঁছেছে আমাদের দেশ। কেউ কাউকে বিশ্বাস করেনা, এখানে সবাই সবার চেয়ে বড়ো, কেউ এক ইঞ্চি দেখালে, অন্যজন ২ ইঞ্চি দেখায়। এখানে সহনশীলতা, সন্মান, ভাতিত্ববোধ শুধুমাত্র মুখের ভাষায় প্রকাশ পায়, এগুলির সঠিক অর্থ সমাজের ৮০ ভাগ মানুষ ভুলে গেছে। আমরা শুধু নিজের স্বার্থে দেশ এবং মানুষের চেতনাকে ব্যবহার করছি, সঠিক মানুষ, মানব পূজারী, মানবতার পাগল কেউ নেই। এর শেষ কোথায়? নীতিকথা গুলো গুমরে গুমরে মরছে, জোর যার মুল্লুক তার চলছে, এখানে সৎ ও সরল মানুষকে বলা হয় নিরীহ, এখানে পেশীশক্তিকে বলা হয় জনদরদী। হীরক রাজার দেশ হয়ে গেছে আমার সোনার বাংলা, এ এক অভিশপ্ত জীবন যাপন, অভিশপ্ত সমাজ ব্যবস্থা। ইতিহাস ততদিন ইতিহাস হবেনা, যতদিন ইতিহাসের দাবীদার থাকবে, ইতিহাসের দাবীদার যতদিন থাকবে, সেটা ইতিহাস নয়, শুধুমাত্র গল্পের মতোই মনে হবে। হে প্রভু, ফিরিয়ে নাও আমায়, অভিশপ্ত সমাজে আমি বড়ো অসহায়, না পারো, পাঠাও আমায় শালিকের বেশে।
লেখক : কলামিস্ট, সাংবাদিক/সম্পাদনা : খন্দকার আলমগীর হোসাইন