দেশব্যাপি বইপড়া প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরনী উৎসব শুরু
জাফর আহমদ : বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র পরিচালিত দেশভিত্তিক উৎকর্ষ কার্যক্রমের আওতায় ঢাকা মহানগরীর স্কুল পর্যায়ের ২০১৭ শিক্ষাবর্ষের ছাত্রছাত্রীদের দুই দিনব্যাপী পুরস্কার বিতরণী উৎসব উদ্বোধন করেছেন বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ।
গতকাল শুক্রবার সকালে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের শিখা চিরন্তন সংলগ্ন মাঠে নানান রঙের বেলুন আকাশে উড়িয়ে তিনি এ অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন।
দুই দিনব্যাপী পুরস্কার বিতরণী উৎসবে তিনটি পর্বে ৯০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মোট ৬ হাজার ১৯৪ জন শিক্ষার্থীর হাতে পুরস্কার দেওয়া হবে। শুক্রবার সকালে পুরস্কার বিতরণী উৎসবের প্রথম পর্বে ৩০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ২১০২ জন ছাত্রছাত্রী পুরস্কার নিয়েছে। দ্বিতীয় পর্বে পুরস্কার গ্রহণ করেছে ২৯টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ২০৭৫ জন ছাত্রছাত্রী। আজ শনিবার বিকেলে ৩১টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ২০১৭ জন ছাত্রছাত্রী অতিথিদের নিকট থেকে পুরস্কার গ্রহণ করবে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথিদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর প্রাক্তন মূখ্য সচিব ও কবি ড. কামাল আবু নাসের চৌধুরী, লেখক কলামিস্ট এবং শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল, কথাসাহিত্যিক ও দৈনিক কালের কণ্ঠ পত্রিকার সম্পাদক ইমদাদুল হক মিলন, নাট্য অভিনেতা, অনুবাদক ও লেখক খায়রুল আলম সবুজ, নৌ-পরিবহন সচিব ও বিশিষ্ট কবি আবদুস সামাদ, কথাসাহিত্যিক ও দৈনিক প্রথম আলোর সহযোগী সম্পাদক আনিসুল হক।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের শুরুতে অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে আসা ছাত্র-ছাত্রীদের উদ্দেশে বলেন, তোমরা যারা বই পড়ে পুরস্কার পাচ্ছো, আমি বিশ্বাস করি তাদের মানসিক শক্তি অন্যদের তুলনায় অনেক উন্নত। তিনি আরো বলেন, সর্বোপরি বইগুলো পড়ে তোমরা অনেক মজা পাচ্ছো এবং তোমারদের সময় অনেক ভালো কাটছে। যারা জীবনের পুরোটা সময় আনন্দে কাটাতে পারে তারাই সেরা মানুষ আর এক মাত্র বই-ই পারে মানুষের জীবন আনন্দে ভরিয়ে তুলতে।
ড. কামাল আবু নাসের চৌধুরী বলেন, এই রেসকোর্স ময়দানে তোমাদের মতো বয়সে আমি আমার বাবার হাত ধরে ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ শুনতে এসেছিলাম। সুতরাং আমিও ইতিহাসের সাক্ষী। আজ সেই ঐতিহাসিক মাঠে দাঁড়িয়ে তোমাদেরকে বলছি তোমরা যদি বই পড়, তাহলে মহাসমুদ্রের কল্লোল শুনতে পারবে। তিনি আরো বলেন, তোমরা বইয়ের পোকা হও, এটা আমি চাই না। আমি চাই তোমরা বইয়ের ফুল হও।
অধ্যাপক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল বলেন, তোমরা প্রযুক্তি ব্যবহার করবে। কিন্তু প্রযুক্তি যেন তোমাদের ব্যবহার করতে না পারে। তিনি আরো বলেন, তোমাদের বন্ধুদের মধ্যে যারা বই পড়ে না, তাদেরকে একটি মজার বই পড়ার জন্য উপহার দাও। দেখবে এইভাবে বই পড়–য়াদের সংখ্যা বেড়ে যাবে।
কথাসাহিত্যিক ইমদাদুল হক মিলন বলেন, ত্রিশ লক্ষ শহীদের বিনিময়ে যে বাংলাদেশ আমরা পেয়েছি, সেই বাংলাদেশকে তোমাদেরই বিনির্মাণ করতে হবে। তোমারাই আগামী দিনের বাংলাদেশ। কথাসাহিত্যিক আনিসুল হক বলেন, তোমরা বেশি বেশি করে বই পড়বে। আর তোমরা যদি বই পড়ার মাধ্যমে জেগে ওঠো, তাহলে দেখবে একদিন সত্যি সত্যিই বাংলাদেশ জেগে উঠবে। সম্পাদনা : আনিস রহমান