মৃত্যু ও পরকালীন জীবন ওমর ফারুক খন্দকার
দুনিয়ার মধ্যে এমন কোন বিষয় নেই, যে বিষয়ে মানুষের কোন ইখতিলাফ নেই, মতপার্থক্য নেই, বরং সব বিষয়ে কিছু না কিছু মতপার্থক্য অবশ্যই আছে। তবে একটা বিষয় রয়েছে, যে ব্যাপারে দুনিয়ারকোন মানুষের কোন রকম মতপার্থক্য নেই। তা হল মৃত্যু। মুসলিম কি অমুসলিম, হিন্দু বা বৌদ্ধ, ঈয়াহুদী বা খ্রীষ্টান, যে ধর্মের, যে বর্ণেরই হোকনা কেন সকলেই বিশ্বাস করে মৃত্যু আসবেই। মৃত্যুর হাত থেকে বাঁচার যেমন কোন উপায় নেই তেমনি পালাবারও কোন পথ নেই। মৃত্যু সম্পর্কে মানুষের বিশ্বাসের মুল হল বাস্তব অভিজ্ঞতা। সে প্রতিনিয়ত এর সম্মুখীন হচ্ছে।বিশ্বাস না করে কোন উপায় নেই। তবে আমরা মুসলমান।আমাদের বিশ্বাস আরো বেশি মজবুত, আরো বেশি দৃঢ়।আমরা বাস্তব অবস্থা দেখে যেমন বিশ্বাস করি,তেমনি আল্লাহ ও তাঁ র রাসুলের বাণি,কুরআন ও হাদিসের ভাষ্য আমাদের বিশ্বাসের ভীতকে আরো মজবুত ও দৃঢ় করে দিয়েছে। আল্লাহ তা’য়ালা পবিত্র কুরআনে ইরশাদ করেছন প্রত্যেক প্রাণি মৃত্যুর স্বাদ গ্রহন করবে। আর কিয়ামাত দিবসে তোমাদের আমলের প্রতিদান পরিপূর্ণ ভাবে দেয়া হবে।অতঃপর যাকে জাহান্নাম থেকে দূরে রাখা হবে,জান্নাতে প্রবেশ করানো হবে। সে সফলকাম।আর দুনিয়ার জীবন ধোকা ছাড়া আর কিছুই নয় (আলে ইমরান-১৮৫) প্রত্যেক প্রাণী যার প্রাণ আছে।তার মৃত্যু আছে।চাই সে মানুষ হোক বা অন্য কোন প্রাণী।সমস্ত ফেরেস্তার মৃত্যু হবে।এমনকি একদিন মৃত্যুরও মৃত্যু হবে। একমাত্র আল্লাহ ব্যতিত কেউ বাকি থাকবেনা। অর্থাৎ মানুষ কোন জ্ঞান বা গুন,অর্থ সম্পদ ক্ষমতা দ্বারা মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা পাবেনা। যদি সম্ভবই হত,তাহলে নমরূদ মারা যেতনা।সুলাইমান আলাইহিস সালাম ও মরতেন না। আমাদের সকলকে মৃত্যুবরণ করতে হবে। তবে হ্যা,মৃত্য সবার নিকট একরূপে আসেনা। আল্লাহ তা’য়ালা পবিত্র কুরআনে ইরশাদ করেনঃযারা দুষ্কর্ম উপার্যন করেছে, তারা কি মনে করে যে, আমি তাদের সে লোকদের মত করে দিব,যারা ঈমান আনে ও সৎকর্ম করে এবং তাদের জীবন মৃত্যু কি সমান হবে? তাদের দাবি কত মন্দ! (সূরা জাসিয়া-২১) অপরাধ ও নিরপরাধ ব্যাক্তির জীবন মরণের চিত্র কোন অবস্থাতেই এক হতে পারেনা। নেককার ও বদকার লোকের মৃত্যুর মাঝে কত ব্যবধান। হযরত ইব্রাহীম (আ.) মালাকুল মউত কে পাপিষ্ঠ ব্যাক্তির মৃত্য সম্পর্কে জিজ্ঞেস করেছিলেন।আজরাইল! তুমি বদকারের রূহকে কোন সূরতে কবজ কর।তাকি আমাকে দেখাতে পারবে?আজরাইল আরজ করলেনঃ আপনি সহ্য করতে পারবেন না।ইব্রাহীম (আ.) আরজ করলেন, না কোন সমস্যা হবেনা।আজরাইল (আ.) বললেনঃআপনি অন্যদিকে তাকান।ইব্রাহীম (আ.) তাই করলেন।এবার আজরাইল (আ.) তার ভয়াবহ রূপ ধারন করে বল্লেনঃদেখুন।ইব্রাহীম (আ.) ফিরিয়ে তাকালেন। দেখলেন, ভীষন বিশ্রী দৈত্যের মত একলোক শরীরের লোমকূপ দাড়ানো,অবর্ণনীয় দুর্গন্ধ,নাক মুখ থেকে আগুনের ফুলকি বেরূচ্ছে।ইব্রাহীম (আ.) এবস্থা দেখে বেহুশ হয়ে পড়লেন।দীর্ঘক্ষণ পর তার চেতনা ফিরে এল।তখন তিনি আজরাইলকে আসল ছুরতে দেখলেন।এবার তিনি মন্তব্য করলেনঃপাপিষ্ঠ লোকদের জন্য কোন আজাব না থাকলেও এ সুরতই তাদের জন্য যথেষ্ট।
লেখক: কলামিস্ট, প্রাবন্ধিক