দেশের আপামর জনসাধারনই একদিন এর বিচার করবে
৭৩ বছর বয়সী একজন শোকাতুর প্রিয় কন্যা এবং মমতাময়ী মাতা কে যখন তাঁর জন্মদাত্রী মা এবং প্রিয় সন্তানের মৃত্যু দিবসেও আদালত কে ব্যবহার করে হয়রানি করা হয়, তখন বিচার ব্যবস্থার প্রতি আর কতটুকু আস্থা রাখা যায়? বিচারালয় থেকে যখন নূন্যতম সূ-আচরণ কিংবা সৌজন্যবোধ না পাওয়া যায়, তখন সেখান থেকে সূ-বিচার পাওয়া যাবে এমনটা ভাববার বা প্রত্যাশা করবার সুযোগ কোথায়?
জিয়া চ্যারিট্যাবল ট্রাষ্ট মামলাটি এখন শেষ পর্যায়ে। এ মামলার এখন যুক্তি-তর্ক উপস্থাপন চলছে। ইতিমধ্যেই ‘ডিফেন্স লইয়ারগন’ সন্দেহাতীত ভাবে প্রমাণ করেছেন যে, এটি একটি বানোয়াট, মিথ্যা ও হাস্যকর মামলা, যার সাথে বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার বিন্দুমাত্র সংশিøষ্টতা নেই। অথচ এ ধরণের একটি ভিত্তিহীন মামলায় বিচার বিভাগ কে দিয়ে সরকার দীর্ঘদিন যাবৎ দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে অবর্ননীয়ভাবে হয়রানি করে চলেছে। মামলার শেষপর্যায়ে বিচারক ড. আকতারুজ্জামানের কঠোর অমানবিক আচরণ সম্পর্কে এ পর্যায়ে সংক্ষেপে আলোকপাত করা হলো:
দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার বয়স এখন ৭৩ বৎসর। এই বয়সে বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেত্রী, যিনি তিন বারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী, তাঁকে এ সপ্তাহে তিন বার (১৬, ১৭ ও ১৮ জানুয়ারি ২০১৮) একটি অস্থায়ী আদালতে পূর্ণ কার্যদিবস হাজির থাকতে বাধ্য করা হলো। বলা বাহুল্য যে, এই অস্থায়ী আদালত প্রাঙ্গনের অবকাঠামো মানসন্মত তো দূরের কথা – মহিলাদের জন্য কোন সাধারণ মানের ‘ওয়াশ রুমের’ও ব্যবস্থা এখানে নেই। গত ১৮ জানুয়ারি ছিল বেগম খালেদা জিয়ার মায়ের মৃত্যু বার্ষিকী। এ উপলক্ষ্যে তাঁর পক্ষে নিয়োগপ্রাপ্ত আইনজীবী আদালতকে বিষয়টি অবহিত করে ঐ এক দিনের জন্য আদালতের কার্যক্রম মুলতবী চেয়ে আবেদন করেছিলেন। বিচারক এ পর্যায়ে বিচার কার্যক্রম এক দিনের জন্য মুলতবীর আবেদন নামঞ্জুর করেন এবং দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে ব্যক্তিগত হাজিরা থেকে ঐ দিনের জন্য অব্যাহতি দিয়ে আদালতের কার্যক্রম অব্যাহত রাখেন। বেগম খালেদা জিয়া বিচারকের অমানবিক আচরণ বুঝতে পারেন এবং তিনি যথারীতি আদালতে হাজিরা দেন। বিচারক কোনরকম কথা বলার সুযোগ না দিয়েই পরবর্তী যুক্তি-তর্ক উপস্থাপনের দিন ধার্য করেছেন ২৩, ২৪ ও ২৫ জানুয়ারি ২০১৮। উলেøখ্য যে, ২৪ জানুয়ারি ২০১৮ তারিখ শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ও বেগম খালেদা জিয়ার কনিষ্ঠ পুত্র মরহুম আরাফাত রহমান কোকোর মৃত্যু দিবস। সেদিনটিও তাঁকে বিশেষ আদালতে কাটাতে হবে। শুধু তাই নয়, এ সপ্তাহেও কার্য দিবসের পাঁচ দিনের ভিতর তিন দিনই তাঁর কাটবে বিচারকের কাঠ গড়ায়। এর চেয়ে অমানবিক নিপীড়ন আর কি হতে পারে?
সরকার প্রধান বিচার বিভাগ কে ব্যবহার করে তার রাজনৈতিক আক্রোশ মেটাতে গিয়ে হয়তো ভুলে গেছেন একজন মানুষের প্রিয়জনের মৃত্যুর দিনটি কত বেদনাদায়ক, কত গুরুত্বপূর্ণ। উনি হয়তো ভুলে গেছেন, উনার স্বামীর মৃত্যুর পর দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ব্যক্তিগতভাবে ছুটে গিয়েছিলেন তাকে শান্তনা দিতে। শোকাতুর সরকার প্রধান কে জড়িয়ে ধরে শান্তনা দেবার সেই ছবি এখনো বিভিন্ন মিডিয়ায় পাওয়া যায়।
সরকার প্রধান হয়তো ভুলে গেছেন, ১৯৮১ সালে প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানই উনাকে দেশে ফিরিয়ে এনেছিলেন, উনার পৈত্রিক সম্পত্তি ফিরিয়ে দেবার পাশাপাশি কি¯িÍ পরিশোধ না করার কারণে বাজেয়াপ্ত হয়ে যাওয়া আজকের সুধাসদনও তিনি পেয়েছিলেন প্রেসিডেন্ট জিয়ারই মহানুভবতায়। সেইসব মহানুভবতার প্রতিদান সরকার প্রধান দিচ্ছেন একজন ৭৩ বছর বয়সী শোকাতুর প্রিয় কন্যা এবং মমতাময়ী মাতাকে তার জন্মদাত্রী মায়ের মৃত্যু দিবসে এবং নাড়ী ছেঁড়া প্রিয় সন্তানের মৃত্যুদিবসে দোয়া খায়ের করার সুযোগ না দিয়ে আদালতে নিয়ে হেন¯Íা করার মাধ্যমে!
এ কেমন নিপীড়ন, এ নির্যাতনের শেষ কোথায়? আর কত দিন বিচারের বানী নীরবে কাঁদবে? যা হোক, আদালতে যেহেতু বিচার নেই, বিচারক যেহেতু সরকারের আদেশে নিরুপায়, সেহেতু দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া এ সব জুলুম নির্যাতনের বিচারের ভার দিয়েছেন জনতার আদালতে। দেশের আপামর জনসাধারনই একদিন এর বিচার করবে।
পরিচিতি : বেগম খালেদা জিয়ার বিশেষ সহকারী/ ফেসবুক থেকে