পলি জমার সঠিক তথ্য নেই যা আছে তা অনুমাননির্ভর
মতিনুজ্জামান মিটু : বাংলাদেশের নদ-নদী, বন্যা কবলিত এলাকার কৃষি জমি ও বঙ্গোপসাগরে প্রতিবছর কী পরিমাণ পলি জমে তার কোনো সঠিক তথ্য উপাত্ত নেই দেশে। যা আছে তা সবই অনুমাননির্ভর। সম্প্রতি কৃষি মন্ত্রণালয়ের বন্যাকবলিত এলাকার কৃষি জমিতে পলি জমা সংক্রান্ত জরিপ প্রতিবেদন ও বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রকৌশলীদের কথায় এ তথ্য উঠে এসেছে।
বিগত ২০১৭ সালের ৩০ আগস্ট কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরীর সভপতিত্বে এডিপি বাস্তবায়ন পর্যালোচনা সভায়, বন্যার পানি নেমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বন্যাকবলিত এলাকার কৃষি জমিতে পলি জমার পরিমাণ নির্ণয়ে ৪ সদস্যের একটি জরিপ কমিটি গঠন করা হয়। বাংলাদেশ কৃষি কাউন্সিলের নেতৃত্বে বিএআরসি, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ও মৃত্তিকা সম্পদ ইনস্টিটিউটে এর প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে গঠিত এ কমিটির সদস্যরা গত ২২ থেকে ৫ নভেম্বর পর্যন্ত ৩ দফায় বন্যা কবলিত রংপুর, লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, সিরাজগঞ্জ, পাবনা, জামালপুর, শেরপুর, মানিকগঞ্জ, রাজবাড়ি, ফরিদপুর জেলার বিভিন্ন উপজেলা পরিদর্শন করেন। জরীপ কমিটির আহ্বায়ক ও বিএআরসির মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা (মৃত্তিকা) ড. মো. আব্দুস সাত্তারসহ অন্য সদস্যদের স্বাক্ষরিত ওই প্রতিবেদনের সুপারিশে বলা হয়, ‘দেশের বন্যা কবলিত এলাকার কৃষি জমিতে পলি জমা সংক্রান্ত জরীপকালে বন্যা সংশ্লিষ্ট নদী থেকে বিভিন্ন দূরত্বের সাথে জমাকৃত পলির পরিমাণের কোনো ধারাবাহিকতা পাওয়া যায়নি। এছাড়া ঘোলা পানি দ্বারা প্লাবিত জমি তথা সম্ভাব্য পলি জমাকৃত জমির পরিমাণের কোনো সুনির্দিষ্ট তথ্যও লিপিবদ্ধ আকারে কোথাও পাওয়া যায়নি। এ সংক্রান্ত যে তথ্য উপাত্ত পাওয়া গেছে তা নিতান্তই অনুমান নির্ভর। অনুমান নির্ভর তথ্যের ভিত্তিতে হিসাবকৃত পলির পরিমানের তথ্য নির্ভরযোগ্য হবেনা বলে বিবেচেনা করা যেতে পারে। সে কারণে এতদবিষয়ে নির্ভরযোগ্য তথ্য উপাত্তের জন্য জরীপ কাজটি দীর্ঘ মেয়াদে বিজ্ঞান ভিত্তিক যথাযথ পদ্ধতিতে ব্যাপক নমুনা পরিমাপের মাধ্যমে সম্পন্ন করা প্রয়োজন। এসআরডিআই এর আওতাধীনে এ বিষয়ে একটি প্রকল্প প্রণয়নের মাধ্যমে দীর্ঘ মেয়াদে অত্র জরীপ কার্যক্রমটি সম্পাদন করা যেতে পারে।’ বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের পানি বিজ্ঞান বিভাগের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. সাইফুল হোসেন বলেন, দেশে পলি সংক্রান্ত যে তথ্য উপাত্ত আছে তা অনুমান নির্ভর একথা ঠিক। তবে এর বৈজ্ঞানিক ভিত্তি আছে। দেশে প্রতি বছর ১.২ বিলিয়ন থেকে ১.৮ বিলিয়ন মেট্রিক টন পলি জমা হয়। এর কিছু পলি নদ-নদী এবং বাকি বঙ্গোপসাগরে পড়ে। বোর্ডের সাবেক মহাপরিচালক এ. কে. এম মমতাজ উদ্দিন বলেন, পলির সঠিক তথ্য জানা নেই। অনেকদিন আগে সম্ভবত এ ব্যাপারে জরিপ হয়েছিল। তার কোনো রিপোর্ট আমার নজরে আসেনি। সম্পাদনা : আনিস রহমান