২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলা তারেক রহমানকে বেকসুর খালাস দেওয়ার প্রার্থনা
মামুন আহম্মেদ খান : ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় পলাতক আসামি তারেক রহমানকে বেকসুর খালাস দেয়া প্রার্থনা করেছেন রাষ্ট্র নিযুক্ত স্টেট ডিফেন্স আইনজীবী একেএম আখতার হোসেন। গতকাল পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডে পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারের পাশে স্থাপিত অস্থায়ী ঢাকা দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১ এ আইনজীবী একেএম আখতার হোসেন এ দাবি করে যুক্তি উপস্থাপন শেষ করেন।
মঙ্গলবার বেলা ১২টার দিকে বিচারক শাহেদ নূর উদ্দিন এজলাসে উঠলে বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষে অবশিষ্ট যুক্তি উপস্থাপন শুরু করেন আইনজীবী আখতার হোসেন। যুক্তি উপস্থাপনে তিনি বলেন, তারেক রহমানের বিরুদ্ধে মামলায় আনা অভিযোগের সমর্থনে সুস্পষ্ট কোন সাক্ষী নেই। মামলার এজাহার, জিডি এবং প্রথম চার্জশিটে তার নাম ছিল না। প্রথম চার্জশিট হওয়ার পর ৬১ জনের সাক্ষী সাক্ষ্য প্রদান করেন আদালত। সেখানেও তারেক রহমানের নাম কেউ উচ্চারণ করেননি।
তিনি বলেন, এরপর মামলাটি অধিকতর তদন্তে পাঠানো হয় গ্রেনেডের উৎস খোঁজার জন্য। কিন্তু তদন্তকারী কর্মকর্তা আবদুল কাহার আকন্দ উৎস খোঁজার স্থলে তারেক রহমানকে সম্পৃক্ত করেন। যেখানে মুফতি হান্নানের প্রথম স্বীকারোক্তিতে তারেক রহমানের নাম-গন্ধ ছিল না। সেখানে উদ্দেশ্যেমূলকভাবে মুফতি হান্নানকে দিয়ে দ্বিতীয়বার স্বীকারোক্তি করিয়ে তারেক রহমানের নাম বলানো হয়। একটি মামলায় একজন আসামির দুইটি স্বীকারোক্তি বিরল ঘটনা। এছাড়া ২১ আগস্ট হামলাকারীদের ঘটনা বাস্তবায়নে সব ধরনের প্রশাসনিক সহযোগিতার আশ্বাস দেন তারেক রহমান মর্মে চার্জশিটে উল্লেখ আছে। কিন্তু ওই সময় তারেক রহমান বিএনপি এবং চার দলীয় জোট সরকারের কোন দায়িত্বশীল পদে ছিলেন না। তাই ওই অভিযোগ ভিত্তিহীন।
রাষ্ট্রপক্ষ তারেক রহমানের বিরুদ্ধে সন্দেহাতীতভাবে অভিযোগ প্রমান করতে পারেন নি। এজন্য তারেক রহমানের বেকসুর খালাস প্রার্থণা করেন এ আইনজীবী।
এদিন তারেক রহমানের পক্ষে যুক্তিতর্ক পেশ শেষ হওয়ার পর আসামী হাফেজ মাওলানা ইয়াহিয়ার পক্ষে যুক্তিতর্ক পেশ শুরু করেন আইনজীবী মো. মাঈনুদ্দিন মিয়া। তার আংশিক যুক্তি উপস্থাপন শেষ হওয়ার পর বুধবার পর্যন্ত যুক্তি উপস্থাপন মূলতবি করা হয়।
এদিকে তারেক রহমানের খালাস দাবির যুক্তি উপস্থাপন শেষে মামলাটির রাষ্ট্রপক্ষের প্রধান কৌঁসুলি সৈয়দ রেজাউর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, ২১ আগস্ট ভয়াবহ গ্রেনেড হামলার ষড়যন্ত্রের সঙ্গে তারেক রহমান জড়িত রাষ্ট্রপক্ষ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছে। এ আসামির বিরুদ্ধে ২৭ জন সাক্ষী সাক্ষ্য দিয়েছেন। তারেক রহমান তার তৎকালীন রাজনৈতিক কার্যালয় বনানীর হাওয়া ভবনে ষড়যন্ত্র বৈঠক করেছেন তাও প্রমাণিত হয়েছে বলে দাবি করেন রাষ্ট্রপক্ষের প্রধান কৌঁসুলি। ওই বৈঠকের আলোকে হামলাকারীদের সার্বিক সহায়তা প্রদান করা হয়েছে। এ মামলায় কাউকে উদ্দেশ্যমূলকভাবে জড়ানো হয়নি।