রোহিঙ্গাদের আবাসন ও নিরাপত্তায় কোনো ব্যবস্থা করেনি মিয়ানমার প্রত্যাবাসন চুক্তি স্থগিত করার পরামর্শ আন্তর্জাতিক সংস্থার
উম্মুল ওয়ারা সুইটি : চুক্তি অনুযায়ী গতকাল থেকে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া শুরুর কথা থাকলেও তা হয়নি। মিয়ানমারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তারা প্রত্যাবাসনের প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে। কিন্তু বাংলাদেশ তালিকা যাচাই-বাছাই করেনি। মিয়ানমারের রোহিঙ্গাদের গ্রহণ করার জন্য অপেক্ষা করছে বলে তাদের গণমাধ্যমগুলো খবর প্রকাশ করেছে। এদিকে, আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো এই চুক্তি স্থগিত করার পরামর্শ দিয়েছে বাংলাদেশকে।
বাংলাদেশের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেছেন, মিয়ানমারের সঙ্গে প্রত্যাবাসন নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। আমরা চাই প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া স্থায়ী হোক। তাই নিরাপত্তার বিষয়টি জেনে এবং রোহিঙ্গাদের তালিকা যাচাই বাছাই করতে কিছুটা সময় নেওয়া হচ্ছে। মিয়ানমারের গণমাধ্যমের প্রতিবেদন সঠিক নয়। প্রত্যাবাসন শুরু হলে তা অব্যাহত থাকবে।
এদিকে, আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো বলছে, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে মিয়ানমার কৌশল করছে। বাংলাদেশ থেকে রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠানোর পর তারা নির্যাতন, নিরাপত্তাহীনতা, খাদ্যাভাবে পড়তে পারে। কারণ মিয়ানমার রোহিঙ্গাদের বসবাসের জন্য কোনো ব্যবস্থাই করেনি।
মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ বলেছে, এই প্রত্যাবাসন পরিকল্পনা রোহিঙ্গাদের বিপন্ন করবে। রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া বিলম্বিত করার সিদ্ধান্ত অনুসরণ করে দ্বিপাক্ষিক এই চুক্তিও স্থগিত করা উচিত বলে মনে করছে সংস্থাটি। যুক্তরাষ্ট্র-ভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থাটি বলছে, এই প্রত্যাবাসন চুক্তির ফলে রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তা এবং স্বার্থ হুমকিতে পড়বে।
বাংলাদেশের শরণার্থী প্রত্যাবাসন বিষয়ক কমিশনার আবুল কালাম আজাদ বলেছেন, প্রত্যাবাসনের পর তারা কেমন থাকবেন, তাদের নিরাপত্তা কতদূর থাকবে সেটাও বাংলাদেশকে দেখতে হবে। তারা কিছু কাজ করেছে, আমরাও যাচাই বাছাই করছি।
এইচ আর ডব্লিউর ব্র্যাড অ্যাডামস এক বিবৃতিতে বলেন, সব লক্ষণই বলছে যেসব বার্মিজ ক্যাম্পের পরিকল্পনা করা হয়েছে, সেগুলো হবে রোহিঙ্গাদের জন্য খোলা আকাশের নিচে কারাগার। জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক অন্যান্য মানবাধিকার সংস্থা বলছে, মিয়ানমার প্রত্যাবাসনের নামে কৌশল করছে। তাই চুক্তি স্থগিত রেখে নিরাপদ প্রত্যাবাসনের ব্যবস্থা করতে হবে।
রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন বিষয়ে গত ১৬ই জানুয়ারি মিয়ানমার বা বার্মা এবং বাংলাদেশ একটি সমঝোতার বিষয়ে ঘোষণা দেয়। এই চুক্তি অনুসারে ২০১৬ সালের অক্টোবর মাস থেকে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে আসা ৭ লাখ ৭০ হাজারের বেশি রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানোর কথা রয়েছে। সম্পাদনা : সৈয়দ নূর-ই-আলম